ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদেরই করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে জানিয়েছে হু। ছবি: এপি।
ষাটোর্ধ্বদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা বেশি বলে চারিদিকে যখন আতঙ্কের পরিবেশতৈরি হয়েছে, ঠিক সেইসময় মহারাষ্ট্রে করোনাকে জয় করে বাড়ি ফিরলেন ৮২ বছরের এক মহিলা। এর আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েও সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন কেরলের বাসিন্দা ৯৩ বছর বয়সি এক বৃদ্ধ এবং তাঁর ৮৮ বছরের স্ত্রী। তার পরই অশীতিপর ওই মহিলা নোভেল করোনাভাইরাসের কবল থেকে সুস্থ হয়ে উঠলেন। এর আগে, ১০১ বছর বয়সে করোনাকে হারিয়ে গোটা বিশ্বে রেকর্ড গড়েন ১০১ বছর বয়সী এক ইটালীয় বৃদ্ধ।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মুম্বইয়ের কোকিলাবেন হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে সাত দিন ভর্তি ছিলেন ওই মহিলা। গত সপ্তাহে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। তবে শরীরে কোভিড-১৯ ভাইরাস ধরা পড়লেও, সে রকম গুরুতর কোনও লক্ষণ তাঁর মধ্যে দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন তাঁর ছেলে।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই মহিলার ছেলে বলেন, ‘‘সম্প্রতি গুজরাত গিয়েছিল মা। সেখান থেকে ফিরতেই ডাক্তারি পরীক্ষা করাই। রিপোর্ট পজিটিভ আসায় হাসপাতালে ভর্তি করি। কয়েকটা দিন খুবই দুশ্চিন্তায় কেটেছে। তবে শেষমেশ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে মা। এখন ভালই আছে।’’ বাড়িতেই তাঁরা ডাক্তারি পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন এবং তাতে কোনও অসুবিধা হয়নি বলেও জানান ওই ব্যক্তি।
আরও পড়ুন: ১৫ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য দূরপাল্লার ট্রেন চালানোর প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে রেল
তবে ওই মহিলা সুস্থ হয়ে ওঠায় আশার আলো দেখছে রাজ্যের চিকিৎসা মহল। কোকিলাবেন হাসপাতালের সিইও সন্তোষ শেট্টি বলেন, ‘‘কোভিড-১৯ যে বয়স্কদের জন্য মৃত্যুর ঘণ্টা নয়, এই ঘটনা আমাদের সেই আশা এবং ভরসা জোগাচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘অসম্ভব মনের জোর ছিল ওই মহিলার। তাতেই বিপদ অনেকটা কাটিয়ে ওঠা গিয়েছিল।’’ শুধুমাত্র অক্সিজেনের জোগান এবং সাধারণ ওষুধেই ওই মহিলা সুস্থ হয়ে ওঠেন বলেও জানান তিনি।
কোকিলাবেন হাসপাতালে ১৯ বেডের কোভিড ইউনিটে সত্তরোর্ধ্ব বেশ কয়েক জনও ভর্তি রয়েছেন। এছাড়াও দিল্লির বাসিন্দা ৮২ বছরের এক বৃদ্ধও করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন এবং খুব শীঘ্র লোক নায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতালে থেকে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: হাওড়া হাসপাতালের সুপারের করোনা পজিটিভ, কয়েক জন শীর্ষকর্তাও গৃহ পর্যবেক্ষণে
তবে এর আগেও মহারাষ্ট্রে বেশ কয়েক জন বয়স্ক করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা যেখানে ১২০০ ছুঁইছুঁই, সেখানে সম্প্রতি মাহিমের এসএল রাজা রহেজা হাসপাতালে থেকে ৭৬ বছরের এক মহিলা ছাড়া পেয়েছেন। বিদেশ থেকে ফিরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তবে তাঁর পরিবারের কেউ কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হননি। বুধবার নেরুলের বাসিন্দা ৭৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তিও কস্তুরবা হাসপাতাল থেকেও সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান।
রাজ্য স্বাস্থ্য শিক্ষা দফতরের তরফে যে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে ৮১-৯০ বছর বয়সী করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১২ছিল। ৯০-১০০ বছর বয়সী এক জনের শরীরে বুধবার এই ভাইরাস ধরা পড়েছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)