প্রতীকী চিত্র।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে দেশে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেই চলেছে। কোভিড-১৯ রোগে আজ তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসেব, মৃতের সংখ্যা ১৬। যদিও আজ আরও দু’জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। তাঁরা কোভিড-১৯ রোগাক্রান্ত ছিলেন কিনা, তা জানা যায়নি। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৯৪। তাদের দাবি, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৮০ জন নতুন সংক্রমিত হয়েছেন। নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। ভারত এখনও সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাপেই রয়েছে।
কোভিড-১৯-এর দাপট রুখতে দেশ ‘ঘরবন্দি’। তার মধ্যেও করোনা সংক্রমণে মৃতের তালিকা ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে। গুজরাতের ভাবনগরের ৭০ বছরের এক বাসিন্দা সম্প্রতি দিল্লি গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়ায় মঙ্গলবার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকেরা জানান, তিনি উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্রোগে ভুগছিলেন। তিনি আজ মারা যান। করোনা আক্রান্ত হয়ে গুজরাতে এটি তৃতীয় মৃত্যু। করোনা সংক্রমণে শ্রীনগরের হায়দারপোরায় আজ ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। করোনা জম্মু-কাশ্মীরে করোনা সংক্রমণে এই প্রথম কেউ মারা গেলেন। রাজস্থানের ভিলওয়াড়ার বাসিন্দা ৭৩ বছরের বৃদ্ধের করোনা সংক্রমণ নিশ্চিত হওয়ার পরে তিনি কোমায় চলে যান। আজ কিডনি বিকল হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মধ্যপ্রদেশের ইনদওরে ৪৭ বছরের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎকসদের সন্দেহ তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। তাঁর নমুনা পরীক্ষার চূড়ান্ত রিপোর্ট আসেনি। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সম্প্রতি তিনি বিদেশ বা ভিন্ রাজ্যে সফর করেননি বলেই জানা গিয়েছে। বেঙ্গালুরুর ৭০ বছর বয়সি এক বৃদ্ধ আজ মারা গিয়েছেন। তবে তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন কিনা তা জানাতে রাজি হননি চিকিৎসকেরা। তাঁদের বক্তব্য, চূড়ান্ত রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লব আগরওয়াল আজ জানিয়েছেন, লকডাউনের পরে আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। সংক্রমণে লাগাম টানতে সামাজিক দূরত্বের উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যগুলির মুখ্যসচিবদের সঙ্গে করোনা মোকাবিলা নিয়ে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। মুখ্যসচিবদের সঙ্গে আজ বৈঠক করেছেন ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবাও। সেখানে তিনি জানান, লকডাউন নিশ্চিত করতেই হবে। তিনি জানান, এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে পণ্যবাহী ট্রাকগুলি যাতে যেতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। আইসিএমআরের তরফে জানানো হয়েছে, করোনা-পরীক্ষার জন্য আরও ২৫টি বেসরকারি ল্যাবরেটরিকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার মহারাষ্ট্রে যে এক মহিলার মৃত্যু হয়েছিল, তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন বলে আজ জানা গিয়েছে। ওই মহিলার রিপোর্ট আসার পরে তাঁর পরিজনদের ঘরবন্দি থাকতে বলা হয়েছে। মধ্যপ্রদেশে গত কাল যে ব্যক্তি মারা গিয়েছিলেন, তিনি কোভিড-১৯ আক্রান্ত ছিলেন বলে আজ জানা গিয়েছে।
দিল্লির এক ‘মহল্লা ক্লিনিকের’ চিকিৎসকের করোনা সংক্রমিত হওয়ায় ঘটনা চিন্তা বাড়ল রাজধানীতে। দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন বলেছেন, ‘‘ওই চিকিৎসকের সংস্পর্শে আসা ৯০০ জনকে ১৪ দিন কোয়রান্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকের স্ত্রী ও মেয়েরও করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে।’’ ১২ মার্চ সৌদি আরব থেকে ফেরা এক মহিলা করোনার উপসর্গ নিয়ে ওই চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন।