মঙ্গলবার চেন্নাই বিমানবন্দরে ব্রিটেনফেরত যাত্রীরা। ছবি: পিটিআই।
অতিমারি পরিস্থিতিতে গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে নোভেল করোনাভাইরাসের নয়া প্রকারভেদ। তার জেরে ব্রিটেনের সঙ্গে বিমান সংযোগ সাময়িক বন্ধ রেখেছে বহু দেশ। এই তালিকায় রয়েছে ভারতও। কিন্তু বুধবার রাত ১১টা বেজে ৫৯ মিনিটে নিষেধাজ্ঞা চালু হওয়ার আগে পর্যন্ত গত দু’দিনে অন্তত ২০ জন ব্রিটেনফেরত যাত্রী ও বিমানকর্মীর শরীরে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ধরা পড়েছে। হিথরো থেকে সরাসরি দিল্লি, অমৃতসর, কলকাতা, আমদাবাদ এবং চেন্নাই বিমানবন্দরে নামেন তাঁরা। বিমানবন্দরে আরটি-পিসিআর টেস্টের সময়ই তাঁদের শরীরে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে।
ওই ২০ জনের লালারসের নমুনা ইতিমধ্যেই পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে পাঠানো হয়েছে। ব্রিটেন এবং ইটালির মতো দেশে করোনার যে নয়া প্রকারভেদকে ঘিরে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ব্রিটেনফেরত যাত্রীরা সেই ভিইউআই-২০২০১২/০১ বা বি.১.১.৭-কে এ দেশে বয়ে এনেছেন কি না, তা জানতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। তাতে যদি বি.১.১.৭-এর নমুনা পাওয়া যায়, সেই বুঝে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত যত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে, তাতে করোনার নয়া প্রকারভেদের অস্তিত্ব মেলেনি বলে নিশ্চিত করেছে কেন্দ্র।
ব্রিটেনফেরত যে যাত্রী এবং বিমানকর্মীদের ঘিরে এখন উদ্বেগ, তাঁদের মধ্যে ৫ জন যাত্রী ও বিমানকর্মী দিল্লি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। ৭ জন যাত্রী এবং ১ জন বিমানকর্মী নামেন অমৃতসর বিমানবন্দরে। কলকাতায় ২ জন, আমদাবাদে ৪ জন এবং চেন্নাইয়ে নামেন ১ জন করে যাত্রী। এই মুহূর্তে তাঁদের রিপোর্টের অপেক্ষায় গোটা দেশ। কারণ জানুয়ারির শেষে বিদেশফেরত ব্যক্তির মাধ্যমেই কেরলে প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে। তার পর থেকে এখনও পর্যন্ত গোটা দেশে ১ কোটির বেশি মানুষ নোভেল করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারণ ভাইরাসের প্রকোপে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ।
আরও পড়ুন: ভারতে মেলেনি নয়া স্ট্রেন: কেন্দ্র
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় সংস্থা সায় দিলে পিয়ারলেসে পরীক্ষা রুশ টিকার
অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে সুস্থতার হার বেশি হলেও, করোনার নয়া প্রকারভেদ থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ৭০ শতাংশ বেশি বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাতেই উদ্বেগ বেড়েছে সরকারের। যে কারণে ৩১ ডিসেম্বর রাত ১১টা বেজে ৫৯ মিনিট পর্যন্ত সাময়িক ভাবে ব্রিটেনের সঙ্গে বিমান সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার আগে পর্যন্ত যে ক’টি বিমান ব্রিটেন থেকে ভারতে প্রবেশ করেছে, তাতে চেপে মোট ৪৭০ জন যাত্রী ফিরেছেন। বাধ্যতামূলক ভাবে বিমানবন্দরগুলিতে আরটি-পিসিআর টেস্টের মধ্য দিয়ে যেতে হয়।