Narendra Modi

‘বিশ্ববাজারকে পাখির চোখ করুন’, শিল্পমহলকে বার্তা মোদীর

দেশের অর্থনীতিকে ফের চাঙ্গা করতে (গেটিং গ্রোথ ব্যাক), দেশের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় আরও গতি আনার কথাও বলেছেন মোদী।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২০ ১৩:৪৬
Share:

সিআইআই-এর অনুষ্ঠানে ভাষণ নরেন্দ্র মোদীর।

লকডাউন চলাকালীন জাতির উদ্দেশে ভাষণে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ গড়ার বার্তা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আনলক ফেজ ১-এর দ্বিতীয় দিনে ফের ‘আত্মনির্ভরতা’ নীতির পক্ষেই সওয়াল করলেন তিনি। সেইসঙ্গে বিশ্ববাজারকে পাখির চোখ করতে শিল্পমহলকে এগিয়ে আসার বার্তাও এ বার জুড়ে দিলেন।

Advertisement

মঙ্গলবার কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ (সিআইআই)-এর ১২৫ বছর উপলক্ষে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। করোনা এবং সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন, এই জোড়া চাপে স্তিমিত হয়ে আসা দেশের অর্থনীতিকে ফের চাঙ্গা করতে (গেটিং গ্রোথ ব্যাক), দেশের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় আরও গতি আনার কথাও বলেছেন মোদী।

করোনা রুখতে ২৫ মার্চ থেকে দেশ জুড়ে লকডাউন শুরু হয়েছিল। তার জেরে ব্যবসায়িক ও বাণিজ্যিক সংস্থার সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁপ করেছিল দেশের উৎপাদন ক্ষেত্রগুলিও। ফলে বেশ খানিকটা ধাক্কা খেয়েছে দেশের অর্থনীতি। সোমবার থেকে শুরু হয়েছে আনলক ফেজ ১। করোনা যে অর্থনীতিতে ধাক্কা দিয়েছে তা মেনে নিয়েছেন মোদী। তাঁর মতে, ‘‘করোনা অর্থনীতির গতি কম করে দিয়েছে। কিন্তু ভারত এই মুহূর্তে লকডাউনকে পিছনে ফেলে আনলক ফেজ ১-এ ঢুকেছে। এখন গেটিং গ্রোথ ব্যাক শুরু হয়েছে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: দেশে করোনা আক্রান্ত দু’লক্ষের কাছাকাছি, মহারাষ্ট্রেই ৭০ হাজার​

লকডাউনের ঘাটতি পূরণ করে দেশের অর্থনীতিতে সঠিক দিশা দেখা যাবে কোন পথে, এ দিন সিআইআই-এর অনুষ্ঠানে তারই ব্যাখ্যা দিয়েছেন মোদী। এক দিকে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই, অন্য দিকে অর্থনীতি মজবুত করার পক্ষে সওয়াল করেছেন তিনি। দেশের অর্থনীতির স্বাভাবিক গতি ফিরে আসার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী প্রধানমন্ত্রী। এ ক্ষেত্রে তাঁর দাওয়াই ‘আত্মনির্ভরতা’। তাঁর আশা, আত্মনির্ভরতার হাত ধরেই ঘুরে দাঁড়াবে দেশের অর্থনীতি। এ জন্য সরাসরি দেশের শিল্পমহলকেই এগিয়ে আসার বার্তা দিয়েছেন তিনি। মোদীর কথায়, ‘‘শিল্পমহল এক পা বাড়ালে, সরকার চার পা বাড়াবে। শিল্পমহলের কাছেই আত্মনির্ভর হওয়ার রাস্তা রয়েছে। এখন থেকে বিশ্ব বাজারের কথা মাথায় রেখে পণ্য উৎপাদন করতে হবে।’’ এ জন্য বিদেশ থেকে আমদানি হ্রাস করার চেষ্টা চলছে এ দিন বলেও দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

একইসঙ্গে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বৈদেশিক সম্পর্ক বজায় রাখার কথাও এ দিন স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মোদী। তাঁর মতে, ‘‘এই সঙ্কটের সময় ভারত ১৫০টি দেশকে চিকিৎসা সরঞ্জাম দিয়ে সাহায্য করেছে। ভারতের উপর গোটা বিশ্বের বিশ্বাস জন্ম নিয়েছে। ফলে ভারতের কাছে গোটা পৃথিবীর প্রত্যাশাও বেড়েছে। ’’ সেইসঙ্গেই তিনি যোগ করেন, ‘‘দেশের আর্থিক বৃদ্ধিকে ফের সঠিক দিশায় ফেরাতে হবে। দেশের প্রতিভা এবং একাগ্রতার উপর আমার আত্মবিশ্বাস আছে।’’ কয়লা-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগের পথ খোলা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর মতে, ‘‘এই সিদ্ধান্ত সুদূরপ্রসারী ফল দিতে চলেছে।’’

আরও পড়ুন: ‘ভারত সীমান্তে চিন আগ্রাসী হয়ে উঠছে’, সমালোচনা আমেরিকার

বৃহৎ শিল্পের পাশাপাশি, লকডাউনের ধাক্কা সহ্য করতে হয়েছে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকেও। সে প্রসঙ্গে এ দিন মোদী বলেন, ‘‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সংজ্ঞা পাল্টে দেওয়া হচ্ছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সঙ্গে যুক্তদের আরও লাভের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ লকডাউনে ধাক্কা খেয়েছে কৃষি উৎপাদনও। কৃষকদের অবস্থা নিয়ে মোদীর বক্তব্য, ‘‘স্বাধীনতার পর কৃষকদের ভাগ্যের উপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন তাঁরা নিজেদের অধিকার ফিরে পেয়েছেন।’’ তাঁর দাবি, এখন দেশের সর্বত্র ফসল বিক্রি করতে পারেন কৃষকরা।

সারা দেশে চার দফায় লকডাউন। সোমবার থেকে শুরু হয়েছে আনলক ফেজ ১। মোদীর বক্তব্য, ‘‘দেশে করোনা সংক্রমণ রুখতে লকডাউন কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছে। করোনা-রুখতে সরকার একের পর এক প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।’’ বিশ্ব জুড়ে যখন করোনা ছড়িয়ে পড়ছে তখন ভারত সবসময় ঠিকঠাক পদক্ষেপ করেছে বলেও এ দিন দাবি করেছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement