প্রতীকী ছবি।
করোনা পরীক্ষার ফল পজ়িটিভ আসার হার (পজ়িটিভিটি রেট) ১০ শতাংশের বেশি, এমন ৪৬টি জেলাকে আজ ফের সতর্ক করল কেন্দ্র। কোভিডের তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আশঙ্কার মধ্যে শনিবার কেরল, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, ওড়িশা, অসম, মিজোরাম, মেঘালয়, অন্ধ্রপ্রদেশ ও মণিপুরের মতো ১০ রাজ্যের প্রতিনিধিদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যকর্তারা। বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ বলেছেন, শুধু কড়া বিধিনিষেধ মানলেই চলবে না, ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে এবং ৪৫ থেকে ৬০ বছর বয়সিদের মধ্যে টিকাকরণের মাত্রা বাড়াতে হবে রাজ্যগুলিকে। কারণ বিভিন্ন রাজ্য থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, করোনায় মৃতদের ৮০ শতাংশ ওই বয়সসীমার।
আজ কেন্দ্র এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘যে ৪৬টি জেলায় পজ়িটিভিটির হার ১০ শতাংশের বেশি এবং যে ৫৩টি জেলায় এই হার ৫ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে, সেগুলিকে করোনা পরীক্ষা আরও বাড়াতে হবে। কারণ, এই পর্যায়ে দাঁড়িয়ে কোনও রকম গাফিলতি পরিস্থিতি আরও খারাপ করবে।’’ গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪১,৬৪৯ জন। শনিবারের এই বৈঠকে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর ডিরেক্টর বলরাম ভার্গব বলেন, দেশে দৈনিক সংক্রমিত ৪০ হাজারের বেশি থাকাটা নিশ্চিন্ত হওয়ার মতো কোনও বিষয় নয়।
১০ রাজ্যের অন্তর্গত ওই ৪৬টি জেলার জন্য এ দিন চার দফা নির্দেশিকাও জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সেগুলি হল— ১) যে অঞ্চলগুলিতে সংক্রমণের মাত্রা বেশি সেখানে খুব কড়া নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ। ২) সংক্রমিতদের চিহ্নিত করা, সংক্রমণের উৎস খুঁজে বার করা এবং তার ভিত্তিতে কন্টেনমেন্ট জ়োন নির্দিষ্ট করা। ৩) গ্রামাঞ্চলে স্বাস্থ্য পরিষেবা বাড়ানো। ৪) আইসিএমআর-এর নির্দেশিকা মেনে মৃত্যু নথিভুক্ত করা। ওই জেলাগুলিতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সফর ও জনসমাবেশ বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন ভার্গব। কেন্দ্রের পর্যবেক্ষণ, সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিতে ৮০ শতাংশ করোনা রোগীই গৃহ-নিভৃতবাসে রয়েছেন।
কেরলের পরিস্থিতিই সবচেয়ে ভাবাচ্ছে কেন্দ্রকে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ২০,৭৭২ জন। আজ থেকে রাজ্যটিতে সপ্তাহান্তে লকডাউন শুরু হয়েছে। এসেছে কেন্দ্রীয় দলও। যদিও গত কাল রাজ্যের স্বাস্থ্য মন্ত্রী বীণা জর্জ বলেছেন, ‘‘কেরলের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। হাসপাতাল, আইসিইউ এমনকি অক্সিজ়েনের চাহিদাও অনেক কম।’’ রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, কেরল ইতিমধ্যেই ৩৯.৩ শতাংশ রাজ্যবাসীকে টিকার প্রথম ডোজ় দিয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ় পেয়েছেন ১৭ শতাংশ, যা জাতীয় হারের তুলনায় অনেক বেশি। কিন্তু দু’দিন আগেই রাজ্যের হাতে থাকা টিকার সঞ্চয় ফুরিয়ে গিয়েছিল। তার পরে কেন্দ্র ৯.৭৩ লক্ষ ডোজ় টিকা পাঠায়। কিন্তু আগামী কয়েক দিনে তা-ও নিঃশেষ হবে বলে আশঙ্কা করছেন মন্ত্রী।