প্রতীকী চিত্র।
ভারতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকা কোভিশিল্ডের তৃতীয় তথা চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ দ্রুত শুরু হবে বলে জানাল সিরাম ইনস্টিটিউট। আপৎকালীন পরিস্থিতির কথা ভেবে কোভিশিল্ডের চার কোটি ডোজ় বানিয়ে রেখেছে তারা। আজ করোনা-টিকার গবেষণায় উৎসাহ দিতে ৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে সরকার।
গত সোমবার ফাইজ়ার সংস্থা জানায়, তাদের প্রতিষেধক প্রায় ৯০ শতাংশ সফল। কিন্তু ভারতে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ওই প্রতিষেধক সংরক্ষণ ও বণ্টনের জন্য প্রয়োজনীয় কোল্ড চেনের অভাব নিয়ে রাহুল গাঁধী-সহ অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ফাইজ়ারের ওই প্রতিষেধক মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়। এমসের ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়ার কথায়, “ভারতে অধিকাংশ প্রতিষেধক দুই থেকে আট ডিগ্রির মধ্যে সংরক্ষিত রাখা হয়। ভারতের কোল্ড চেনগুলির সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হতে পারে মাইনাস ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মাইনাস ৭০ ডিগ্রি তাপমাত্রার প্রয়োজন হলে ওই প্রতিষেধক সংরক্ষিত করে গ্রামীণ অঞ্চলে পৌঁছে দেওয়াটা ভারতের মতো দেশের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।’’
দিল্লিতে জনস্বাস্থ্য আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত টি সুন্দররামনের মতে, ভারতে মাইনাস ৭০ ডিগ্রি তাপমাত্রার ব্যবস্থা সেই অর্থে নেই। তাই ওই প্রতিষেধক ভুলে যাওয়াই ভাল। যদিও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ জানিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে ফাইজ়ারের সঙ্গে আলোচনা চালু রয়েছে। প্রতিষেধকের জন্য যে কোল্ড চেন ব্যবস্থার প্রয়োজন, তা গড়ে তুলতে সরকার সক্ষম বলে দাবি করেছেন তিনি।
করোনার প্রতিষেধক উৎপাদনের লক্ষ্যে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা সংস্থার সঙ্গে গোড়াতেই গাঁটছড়া বেঁধেছিল সিরাম। সংস্থা সূত্রে আজ বলা হয়, কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় পর্বের পরীক্ষার ফলাফল ইতিবাচক। তাই এ বার দেশের ১৬০০ স্বেচ্ছাসেবকের উপরে তৃতীয় দফার প্রয়োগ শুরু হচ্ছে। সূত্রের মতে, এই মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই তা শুরু হবে। সার্বিক ফলাফল ইতিবাচক হলে ২০২১-এর গোড়ার দিকেই ওই টিকা দেশীয় বাজারে ছাড়া যাবে বলে সিরাম আশাবাদী। তারা জানিয়েছে, ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার অনুমতিক্রমে কোভিশিল্ডের প্রায় ৪ কোটি ডোজ় তারা তৈরি করে রেখেছে। ২০২১ সালে তাদের উৎপাদন ক্ষমতা ১০০ কোটি ডোজ়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রাও নিয়েছে। অক্সফোর্ডের কোভিশিল্ড ছাড়াও আমেরিকার নোভাভ্যাক্সের প্রতিষেধক কোভাভ্যাক্স উৎপাদনেরও চুক্তি করছে তারা। এই কাজে যুক্ত রয়েছে আইসিএমআর। বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডে ওই প্রতিষেধকের তৃতীয় পর্বের প্রয়োগ চলছে। ভারতেও তা দ্রুত শুরু হবে বলে জানিয়েছে আইসিএমআর।