আতঙ্ক মুছতে বিলবোর্ড মুম্বইয়ের রাস্তায়। ছবি: পিটিআই
সংখ্যাটা প্রথমে ছিল হাতে গোনা। কিন্তু গত কয়েক দিনের মধ্যে সারা দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দেড়শ হয়ে গিয়েছে। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে আতঙ্কও। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, ভারতে এখনও করোনা-পরিস্থিতি চিন, ইতালি, স্পেন বা ইরানের মতো ভয়াবহ আকার ধারণ করেনি। আর সংক্রমণ সেই বড়সড় ‘লাফ’ দেওয়ার আগেই, তা রুখতে ভারতকে আগাম সতর্কবার্তাও দিয়ে রাখল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। দেশ জুড়ে আরও নমুনা পরীক্ষার পরামর্শই দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
‘পরীক্ষা, পরীক্ষা আর পরীক্ষা’। করোনা ঠেকাতে বিশ্ব জুড়ে এই বার্তাই দিয়ে চলেছে হু। তাদের মতে ভারতে করোনা সংক্রমণ এখনও স্থানীয় পর্যায়েই আটকে রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে সংক্রমণের নিরিখে এটা দ্বিতীয় পর্যায়। কিন্তু তা যে কোনও সময়েই গোষ্ঠী সংক্রমণের পর্যায়ে চলে যেতে পারে। ওই পর্যায়ে করোনা আক্রান্ত কোনও ব্যক্তির সংস্রবে না এসেও, অথবা করোনা থাবা বসিয়েছে এমন কোনও দেশে সফর না করেও ওই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই পর্যায়ে সংক্রমণের উৎসও বোঝা যায় না। ভারতে করোনা সংক্রমণ এখনও দ্বিতীয় পর্যায়ে আটকে রয়েছে। অর্থাৎ এই সময়ে সংক্রমণ স্থানীয়। কিন্তু এই পর্যায়ে লাগাম টেনে না ধরলে কার্যত তাণ্ডব শুরু করতে পারে ওই রোগ। ঠিক যেমনটা দেখা যাচ্ছে চিন, ইতালি, স্পেন বা ইরানে।
হু লাগাতার নমুনা পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার বার্তা দিচ্ছে বটে। কিন্তু সেই পরীক্ষার রীতিনীতি পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে মানা হচ্ছে এ দেশে? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিজিওনাল ডিরেক্টর পুনম ক্ষেত্রপাল সিংহ বলছেন, ‘‘স্থানীয় সংক্রমণের পর্যায় থেকে করোনা ভাইরাসের গোষ্ঠী সংক্রমণ রুখতে শুধুমাত্র র্যান্ডম স্যাম্পল সার্ভেই যথেষ্ট নয়। এ জন্য শক্তিশালী কৌশলের প্রয়োজন।’’ হু জোর দিচ্ছে নমুনা পরীক্ষাও উপর। পুনমের মতে, ‘‘মারাত্মক শ্বাসকষ্ট সংক্রান্ত অসুখেও নমুনা পরীক্ষা হওয়া উচিত।’’
আরও পড়ুন: নবান্নের আমলার দায়িত্বজ্ঞানহীনতাই করোনা-আতঙ্ক বাড়াল কলকাতায়
পুনম আরও বলছেন, ‘‘ভারতকে দেওয়া শেষ চিঠিতে আমরা বেসরকারি ল্যাবরেটরিগুলিকেও যোগ করার কথা বলেছি। এই মুহূর্তে ৫১ স্বীকৃত ল্যাবরেটরির কথা তারা বলেছে। ভাল হবে, যদিও আরও কয়েকটি ল্যাবরেটরি যোগ করা যায়।’’ তাঁর পরামর্শ, বেশি বেশি নমুনা পরীক্ষাই রোগ দমনে সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন: ছেলের করোনা, নবান্নে আমলার সহকর্মীদের থাকতে বলা হল বাড়িতে
ভারতে এই মুহূর্তে করোনার নমুনা পরীক্ষা কী ভাবে চলছে? দেশের ৫২টি ল্যাবরেটরির প্রতিটি থেকে ২০টি করে নমুনা নিয়ে মোট ১ হাজার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) জানাচ্ছে, ইতিমধ্যেই ৫০০টি নমুনায় সংক্রমণ মেলেনি। আরও ৫০০টি নমুনার ফলাফল জানানো অবশ্য এখনও বাকি রয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরির সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে বলেই আইসিএমআর সূত্রে খবর। কিন্তু তত দিনে দেরি হয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।