Coronavirus

২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার আট শতাংশের কম, সুস্থ ৪৪ হাজার

২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা ৫২ হাজারের গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ থাকল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২০ ১০:৪৪
Share:

ভারতে মোট করোনা আক্রান্ত হলেন ১৮ লক্ষ ৫৫ হাজার ৭৪৫ জন। গ্রাফিক-শৌভিক দেবনাথ।

গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা ৫২ হাজারের গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ থাকল। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বিষয়ে স্বস্তি দিল মঙ্গলবারের করোনাভাইরাস পরিসংখ্যান। যেমন, এক দিনে সুস্থ হওয়ার সংখ্যা। সঙ্গে সংক্রমণ হার কমে গেল আজ আট শতাংশের নীচে। গত ২৪ ঘণ্টায় যে সংখ্যক করোনা পরীক্ষা হয়েছে দেশে তা এখনও অবধি সর্বোচ্চ।

Advertisement

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২ হাজার ৫০ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। সেখানে আমেরিকা ও ব্রাজিলে ওই সময়ের মধ্যে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৪৫ হাজার ৫৭০ ও ১৬ হাজার ৬৪১। অর্থাৎ এই সময়ের হিসাবে আক্রান্তের নিরিখে আমেরিকা ও ব্রাজিলকে আজও পিছনে ফেলল ভারত। এই বৃদ্ধির জেরে ভারতে মোট করোনা আক্রান্ত হলেন ১৮ লক্ষ ৫৫ হাজার ৭৪৫ জন। যেখানে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে মোট আক্রান্ত ২৭ লক্ষ ৫০ হাজার ও প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাতে ৪৭ লক্ষ ১৩ হাজার।

প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে, তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার। শনি-রবিবার তা কিছুটা কম থাকলেও সোমবার তা বেশ খানিকটা বেড়েছিল। আজ তা নামল আট শতাংশের নীচে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমণের হার ৭.৮৬ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ছ’লক্ষ ৬১ হাজার ৮৯২ জনের। যা গোটা করোনাকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।

Advertisement

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)

আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও, ভারতে করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যানটাও বেশ স্বস্তিদায়ক। এখনও পর্যন্ত মোট ১২ লক্ষ ৩০ হাজার ৫০৯ জন করোনা আক্রান্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের প্রায় ৬৬ শতাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪৪ হাজার ৩০৬ জন।

মৃত্যুর নিরিখে স্পেন, ফ্রান্স, ইটালিকে পিছনে ফেলে বিশ্বের পঞ্চম স্থানে রয়েছে ভারত। যদিও মৃত্যুর হার ওই সব দেশগুলির তুলনায় ভারতে অনেকটাই কম। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ৮০৩ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ৩৮ হাজার ৯৩৮ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ১৫ হাজার ৮৪২ জন। দিল্লিকে পিছনে ফেলে মৃত্যু তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে তামিলনাড়ু। দক্ষিণের এই রাজ্যে মোট মৃত চার হাজার ২৪১ জন। রাজধানীতে সেই সংখ্যাটা চার হাজার ২১ জন।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

জুলাই জুড়েই মৃত্যু বেড়ে তালিকার চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে কর্নাটক। সেখানে কোভিডের কারণে এখনও অবধি দু’হাজার ৫৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। গুজরাতে দু’হাজার ৫০৮ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনাভাইরাস। উত্তরপ্রদেশ (১,৭৭৮), পশ্চিমবঙ্গ (১,৭৩১) ও অন্ধ্রপ্রদেশে (১,৫৩৭) মৃতের সংখ্যা রোজদিন বেড়েই চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ (৯০০), রাজস্থান (৭১৫), তেলঙ্গানা (৫৬৩), পঞ্জাব (৪৪২), হরিয়ানা (৪৪০), জম্মু ও কাশ্মীর (৪০৭), বিহার (৩৩০), ওড়িশা (২০৭) ও ঝাড়খণ্ড (১২৫)। বাকি রাজ্যগুলিতে মৃতের সংখ্যা এখনও ১০০ পেরোয়নি।

শুরু থেকেই মহারাষ্ট্র সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে। সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত সাড়ে চার লক্ষ পেরলো। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত দু’লক্ষ ৬৩ হাজার ২২২ জন। সংক্রমণ তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েচে অন্ধ্রপ্রদেশ। সেখানে এখন মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ৬৬ হাজার ৫৮৬ জন। তবে জুলাই জুড়েই রাজধানী দিল্লিতে দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধিতে বেশ খানিকটা লাগাম পড়েছে। যার জেরে সেখানে দৈনিক আক্রান্ত বৃদ্ধি এক হাজারের ঘরেই সীমাবদ্ধ। রাজধানীতে মোট আক্রান্ত হয়েছেন এক লক্ষ ৩৮ হাজার ৪৮২ জন। সংক্রমণের নিরিখে দিল্লিকে পিছনে ফেলে চতুর্থ স্থানে উঠে এল কর্নাটক। সেখানে মোট আক্রান্ত হয়েছেন এক লক্ষ ৩৯ হাজার ৫৭১ জন।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

উত্তরপ্রদেশ (৯৭,৩৬২), পশ্চিমবঙ্গ (৭৮,২৩২), তেলঙ্গানা (৬৮,৯৪৬), গুজরাত (৬৪,৫৮৫) ও বিহারে (৫৯,৩২৮) আক্রান্তের সংখ্যা প্রতি দিন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে অসম (৪৫,২৭৫), রাজস্থান (৪৪,৯৭৫), হরিয়ানা (৩৭,১৭৩), ওড়িশা (৩৬,২৯৭), মধ্যপ্রদেশ (৩৪,২৮৫), কেরল (২৬,৮৭৩), জম্মু ও কাশ্মীর (২২,০০৬), পঞ্জাব (১৮,৫২৭) ও ঝাড়খণ্ড (১৩,৪৭৮)। ছত্তীসগঢ়, উত্তরাখণ্ড, গোয়া, ত্রিপুরার মতো রাজ্যে মোট আক্রান্ত এখনও দশ হাজারের কম।

পশ্চিমবঙ্গেও রোজদিন বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সোমবার সন্ধ্যায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুসারে, নতুন করে দু’হাজার ৭১৬ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ৭৮ হাজার ২৩২ জন। সঙ্গে ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে মৃত্যুতেও। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৩ জনের। করোনার কবলে পড়ে রাজ্যে প্রাণ হারালেন মোট এক হাজার ৭৩১ জন।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement