দেশে মোট মৃত্যু ২৮ হাজার ছাড়াল। গ্রাফিক-শৌভিক দেবনাথ।
দেশে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭ হাজার ১৪৮ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। যা গত দু-তিন দিনের নিরিখে একটু হলেও কম। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন ১১ লক্ষ ৫৫ হাজার ১৯১ জন। আক্রান্তের সঙ্গে সংক্রমণের হারও ঊর্ধ্বমুখী। প্রতিদিন যে সংখ্যক মানুষের টেস্ট হচ্ছে, তার মধ্যে যত শতাংশের রিপোর্ট কোভিড পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হচ্ছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমণের হার ১১.১ শতাংশ।
আক্রান্তের পাশাপাশি ধারাবাহিক ভাবে মৃত্যু বেড়ে ২৮ হাজার ছাড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ৫৮৭ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ২৮ হাজার ০৮৪ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ১২ হাজার ৩০ জন। মৃত্যুর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা দিল্লিতে প্রাণ গিয়েছে তিন হাজার ৬৬৩ জনের। দু’হাজার ৫৫১ জনের প্রাণহানি নিয়ে মৃত্যু-তালিকার তৃতীয় স্থানে তামিলনাড়ু। গুজরাতে দু’হাজার ১৬২ জন প্রাণ হারিয়েছেন করোনার কারণে। কর্নাটক (১,৪০৩), উত্তরপ্রদেশ (১,১৯২) ও পশ্চিমবঙ্গে (১,১৪৭) মৃত্যুর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে বেড়েই চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ (৭৩৮), অন্ধ্রপ্রদেশ (৬৯৬), রাজস্থান (৫৬৮), তেলঙ্গানা (৪২২), হরিয়ানা (৩৫৫), পঞ্জাব (২৬২), জম্মু ও কাশ্মীর (২৫৪), বিহার (২১৭)। বাকি রাজ্যগুলিতে মৃতের সংখ্যা এখনও ১০০ পেরোয়নি। তবে শেষ ক’দিনে কর্নাটক ও অন্ধ্রপ্রদেশে দৈনিক মৃত্যু সংখ্যা বৃদ্ধি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বিশেষজ্ঞদের।
আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত হারে বাড়লেও, ভারতে করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যানটাও বেশ স্বস্তিদায়ক। আক্রান্ত হওয়ার পর এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন সাত লক্ষেরও বেশি মানুষ। অর্থাৎ মোট আক্রান্তের ৬২ শতাংশই সুস্থ হয়ে উঠছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ২৪ হাজার ৪৯১ জন সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট সাত লক্ষ ২৪ হাজার ৫৭৭ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হলেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
শুরু থেকেই মহারাষ্ট্রে বল্গাহীন ভাবে বেড়েছে সংক্রমণ। গোড়া থেকেই এই রাজ্য কার্যত সংক্রমণের শীর্ষে। গত ২৪ ঘণ্টায় আট হাজারেরও বেশি নতুন সংক্রমণের জেরে সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন তিন লক্ষ ১৮ হাজার ৬৯৫ জন। প্রায় পাঁচ হাজার বেড়ে তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ৭৫ হাজার ৬৭৮ জন। তুলনায় রাজধানী দিল্লিতে দৈনিক সংক্রমণে বেশ খানিকটা লাগাম পড়েছে। সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লক্ষ ২৩ হাজার ৭৪৭ জন।
বিগত কয়েক দিনে কর্নাটকে দৈনিক সংক্রমণ হচ্ছে চার হাজারের আশেপাশে। যার জেরে সংক্রমণ তালিকার চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে দক্ষিণের এই রাজ্য। সেখানে মোট আক্রান্ত ৬৭ হাজার ৪২০ জন। অন্ধ্রপ্রদেশেও গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন চার হাজার ৭৪ জন। যার জেরে সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫৩ হাজার ৭২৪ জন। উত্তরপ্রদেশ (৫১,১৬০), গুজরাত (৪৯,৩৫৩), তেলঙ্গানা (৪৬,২৭৪) ও পশ্চিমবঙ্গে (৪৪,৭৬৯) আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে চলেছে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে রাজস্থান (৩০,৩৯০), বিহার (২৭,৬৪৬), হরিয়ানা (২৬,৮৫৮), অসম (২৫,৩৮২), মধ্যপ্রদেশ (২৩,৩১০), ওড়িশা (১৮,১১০), জম্মু ও কাশ্মীর (১৪,৬৫০), কেরল (১৩,২৭৪) ও পঞ্জাব (১০,৫১০)। ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, উত্তরাখণ্
পশ্চিমবঙ্গে রোজই কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন দু’হাজারেরও বেশি (২,২৮২)। এই নিয়ে রাজ্যে করোনায় মোট আক্রান্ত হলেন ৪৪ হাজার ৭৬৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩৫ জনের। এ পর্যন্ত রাজ্যে মোট এক হাজার ১৪৭ জন রাজ্যবাসীর প্রাণ কাড়ল করোনা।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)