শেষ মুহূর্তে বাতিল হয়ে গিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিন সফর। এই সফর নিয়ে ভারত-চিনের দ্বিপাক্ষিক সমন্বয়ের অভাবকেই সে সময় কারণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছিল রাজনৈতিক শিবির। এই ঘটনার দু’মাস কেটে যাওয়ার পরে বিষয়টি নিয়ে ফের নাড়াচাড়া শুরু হল এমন সময়ে, যখন বেজিং-এর পক্ষ থেকে তাঁকে নতুন করে আমন্ত্রণ জানানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
মমতার সফর বাতিল হয়ে যাওয়ার পরে সে ভাবে কেন্দ্রের প্রতি তোপ দাগা হয়নি। এখনও প্রকাশ্যে এ নিয়ে কোনও কেন্দ্র-বিরোধী অবস্থান নিতে চাইছে না তৃণমূল। তবে ঘরোয়া ভাবে জানানো হচ্ছে, জুনে মমতার ওই সফরটি বাস্তবায়িত করার জন্য যতটা দরকার ছিল, কেন্দ্র আদৌ ততটা সক্রিয় হয়নি। পশ্চিমবঙ্গের বিরুদ্ধে বঞ্চনার রাজনীতি এর কারণ।
সংসদের সদ্য শেষ হওয়া বাদল অধিবেশনে নির্দল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীদের চিন সফর নিয়ে রাজ্যসভায় একটি প্রশ্ন জমা দেন। জানতে চান, কেন্দ্রীয় সরকার মু্খ্যমন্ত্রীদের চিন সফরে যেতে অনুমতি দিচ্ছে না— এটা কি সত্যি? এ ব্যাপারে বিদেশ মন্ত্রকের কাছ থেকে বিশদ তথ্যও চাওয়া হয়। এর লিখিত জবাবে বিদেশপ্রতিমন্ত্রী ভি কে সিংহ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীদের চিন সফরে আদৌ কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। বরং বিদেশ মন্ত্রক এবং চিনের কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা রয়েছে, যাতে দু’দেশেরই প্রাদেশিক নেতাদের মধ্যে যোগাযোগ গড়ে ওঠে।’’ এর পর একটি তালিকা দিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে দেখানো হয়েছে, গত তিন বছরে মোট ৮ জন মুখ্যমন্ত্রী চিন গিয়েছেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ওই ৮ জনের মধ্যে ৬ জনই বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী এবং বাকি দু’জন হলেন চন্দ্রবাবু নায়ডু এবং কে চন্দ্রশেখর রাও। সফরের সময়ে প্রথম জন ছিলেন এনডিএ-র শরিক। আর দ্বিতীয় জনও বিজেপির বন্ধু দল টিআরএসের নেতা। এই তথ্য সামনে আসার পর স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল শিবির থেকে।