নিউ ইন্ডিয়া সমাচার পত্রিকার প্রচ্ছদেই হয়েছিল বিভ্রাট।
হিন্দিতে না কি সব ঠিকই ছিল! ইংরেজি ভাষান্তরে ১৪৮৬ সালে জন্ম নেওয়া চৈতন্যদেব ও তাঁর প্রায় চারশো বছর পরে জন্ম নেওয়া স্বামী বিবেকানন্দ ‘সমসাময়িক’ হয়ে গিয়েছিলেন!
স্বামী বিবেকানন্দর আধ্যাত্মিক জাগরণের ফলেই তাঁর জন্মের ছয় বছর আগের সিপাহি বিদ্রোহ ঘটেছিল বলে দাবি করা হয়েছিল মোদী সরকারের তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রক প্রকাশিত ‘নিউ ইন্ডিয়া সমাচার’-এ। আরও দাবি ছিল, ভক্তি আন্দোলনই সিপাহি বিদ্রোহের ভিত তৈরি করেছিল।
এ নিয়ে ইতিহাসবিদ ও বিরোধী শিবিরের প্রশ্নের মুখে পড়ে তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রকের অধীন প্রেস ইনফর্মেশন ব্যুরো আজ ব্যাখ্যা দিল, ‘ইংরেজি ভাষার পত্রিকায় ভুল করে স্বামী বিবেকানন্দ ও রমণ মহর্ষিকে চৈতন্য মহাপ্রভুর সমসাময়িক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই ভুলের জন্য দুঃখপ্রকাশ করে তা সংশোধন করে দেওয়া হয়েছে। হিন্দি ভাষান্তরে তথ্য সব ঠিকই রয়েছে।’
স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনের প্রাক্কালে, গতকাল তাঁর সঙ্গে সিপাহি বিদ্রোহের সম্পর্ক টানতে গিয়ে তথ্যের ভুল হওয়ায় মোদী সরকার চূড়ান্ত অস্বস্তির মুখে পড়েছিল। আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বামী বিবেকানন্দের জন্মবার্ষিকীতে যুব উৎসবের সূচনা করেন। তার আগেই ভুল শুধরে ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশিত পত্রিকায় রদবদল করা হয়। ‘ভক্তি যুগে স্বামী বিবেকানন্দ, চৈতন্য মহাপ্রভু, রমণ মহর্ষি আধ্যাত্মিক জাগরণ নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। এটাই ১৮৫৭-র বিদ্রোহের প্রেক্ষাপট হিসেবে কাজ করেছিল।’—এই অংশটিই বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে ভক্তি আন্দোলনই ভারতের স্বাধীনতার লড়াইয়ের ভিত হিসেবে কাজ করেছিল—এই যুক্তিতে এখনও অনড় মোদী সরকার। বলা হয়েছে, ভক্তি আন্দোলনে যুক্তদের থেকেই আত্মনির্ভর ভারতের অনুপ্রেরণা এসেছে। কী ভাবে, তার ব্যাখ্যা অবশ্য মেলেনি। ইতিহাসবিদরা অবশ্য বলেছেন, ভক্তি আন্দোলনের সঙ্গে স্বাধীনতা আন্দোলনের কোনও সম্পর্কই নেই। ভক্তি আন্দোলন হয়েছিল ব্রাহ্মণ্যতন্ত্র, মন্দির-মসজিদের নিয়ন্ত্রণ, জাতপাতের ভেদাভেদের বিরুদ্ধে। সেখানে কখনও স্বাধীনতার লড়াই বা সশস্ত্র আন্দোলনের কথা বলা হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘এনটায়ার পলিটিকাল সায়েন্স’-এর ডিগ্রির দিকে ইঙ্গিত করে কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরার কটাক্ষ, এ সবই আসলে ‘এনটায়ার হিস্ট্রি’-তে ডিগ্রির ফল।