dowry

Dowry system: নার্সিং-এর পাঠ্যবইয়ে পণের ‘সুফল’!

অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, ‘পাত্রী-চাই’ বিজ্ঞাপনে যখন চাকুরিরতা মেয়ের শর্ত ক্রমশ বাড়ছে আর পাঠ্যবইয়ে উঠে আসছে নারীশিক্ষার প্রসারে যৌতুকের পরোক্ষ প্রভাবের দাবি— মেয়েদের আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতির খোলনলচেতে আদৌ কী পরিবর্তন হচ্ছে?           

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২২ ০৭:৪৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

ছাপার অক্ষরে এক-দুই করে লেখা ‘‘পণপ্রথার সুফল’’! একটি পাঠ্যবইয়ের পাতার ছবি ঘিরে সোমবার শোরগোল পড়েছে সমাজমাধ্যমে। ছবিটির (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) দিকে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন শিবসেনা সাংসদ প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী। দাবি তুলেছেন, অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট বইটি বাতিল করা হোক।

Advertisement

টুইটের তথ্য অনুযায়ী, বিতর্কিত বইটির নাম ‘টেক্সটবুক অব সোশিওলজি ফর নার্সেস’। নীচে উল্লিখত— ‘ইন্ডিয়ান নার্সিং কাউন্সিলের পাঠ্যক্রম মেনে লেখা’। বছর চারেক আগে প্রথম প্রকাশিত। বিক্রি হয় বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। সেগুলি থেকে জানা যাচ্ছে, বিএসসি নার্সিং দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়াদের জন্য সেটি লেখা। ছবি ভাইরাল হওয়ার পরে প্রচুর লোক ওয়েবসাইটগুলিতে গিয়েও সমালোচনা করে আসছেন।

প্রকাশকের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, বিতর্কিত বইটির লেখিকা চেন্নাইয়ের একটি বেসরকারি নার্সিং-শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত। ভাইরাল পৃষ্ঠার ছবিতে লেখা রয়েছে, ‘ভাল বেতনের অল্পবয়সি ছেলের অভাব থাকায় তারা মূল্যবান সম্পত্তি হয়ে ওঠে, আর বাবা-মায়েরা ছেলের বিয়ের জন্য মোটা পণ দাবি করেন’। বলা হয়েছে, ‘ছেলের মা-বাবার পণ নেওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণটা হল, মেয়ের বা বোনের বিয়ের সময়ে একই কাজে সেই টাকাটা লাগে’।

Advertisement

এর পরেই বলা রয়েছে পণপ্রথার ‘‘সুফল’’-এর কয়েকটি। যেমন, নতুন সংসার পাততে কাজে খাট-বিছানা-টিভি ইত্যাদি লাগে। পৈতৃক সম্পত্তির অংশ মেয়েদের দিকেও যায়। পণের টাকা বাঁচাতে অনেকেই মেয়েদের পড়াশোনা করান, এতে পরোক্ষে নারীশিক্ষার প্রসার হয়। ‘‘খারাপ দেখতে’’ মেয়েদের বিয়ের হিল্লে হয়।

ধর্ষণ বা অ্যাসিড ছুড়ে মারার মতো মেয়েদের উপরে ঘটে চলা সামাজিক নিপীড়নের একটি বিয়ের সময়ে চাপ দিয়ে নেওয়া যৌতুক। হালফিলে এর প্রকোপ নিয়ে আলোচনার অনেকটা জুড়ে থাকে উপমহাদেশ ও ইরান। ১৯১৪ সালের জানুয়ারিতে তার বিয়ের পণের ১২ হাজার টাকা জোগাড় করতে না-পারা বাবার হয়রানি অসহ্য হওয়ায় আত্মহত্যা করেছিল চোদ্দো বছরের স্নেহলতা মুখোপাধ্যায়। ঔপনিবেশিক ভারতে কলকাতার হইচই ফেলা সেই ঘটনার স্মৃতি সংবাদমাধ্যমে আজও পুনাবৃত্ত হয়ে চলে।

স্বাধীন ভারতে ১৯৬১ সালে পণপ্রথা প্রতিরোধে আইন এসেছে। তার পরেও ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস বুরোর পরিসংখ্যানের উপরে ভিত্তি করা রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট বলছে, ভারতে ১৯৯৯ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত প্রতি বছর নথিভুক্ত নারীহত্যার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশই যৌতুকের জন্য। আর সেটা একটা নির্দিষ্ট প্রবণতার দিকে ইঙ্গিত করে।

২০১৫ সালে ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ প্রকল্প চালু করে কেন্দ্র সরকার। নারীকল্যাণ বিষয়ক সংসদীয় কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী, পরের তিন বছরে শুধু বিজ্ঞাপনে খরচ হয়েছে বরাদ্দের প্রায় ৮০ শতাংশ! ভাইরাল হওয়া বইয়ের-পাতার ছবি-সহ অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, ‘পাত্রী-চাই’ বিজ্ঞাপনে যখন চাকুরিরতা মেয়ের শর্ত ক্রমশ বাড়ছে আর পাঠ্যবইয়ে উঠে আসছে নারীশিক্ষার প্রসারে যৌতুকের পরোক্ষ প্রভাবের দাবি— মেয়েদের আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতির খোলনলচেতে আদৌ কী পরিবর্তন হচ্ছে?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement