মিহিরবাবু জানান, অসম-মণিপুরের মানুষ প্রধানত তেরঙার পক্ষে। কারণ, নেতাজি নাগপুরে স্বাধীন ভারতের প্রতীক হিসেবে বাঘের চিহ্ন সম্বলিত যে তেরঙা পতাকা উড়িয়েছিলেন, সেটাই তাঁর হাতে গড়া দলের আদর্শের সঙ্গে খাপ খায়।
প্রতীকী ছবি।
চেনা পতাকায় বদল আনার পরিকল্পনা আগেই ঘোষণা করেছিল ফরওয়ার্ড ব্লক। কিন্তু পতাকার নতুন চেহারা কেমন হবে, তা নিয়ে দলে মতানৈক্য এখনও মেটেনি। পতাকার জমি লালই থাকবে না তেরঙা হবে, সেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে এপ্রিলে। কিন্তু পতাকা থেকে কাস্তে-হাতুড়ি যে সরছেই, তা নিশ্চিত বলে ফ ব নেতৃত্বের বক্তব্য।
দলের পতাকা ও গঠনতন্ত্রে কিছু পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা ফ ব নেতৃত্বের কয়েক বছর আগের। গত বছর ডিসেম্বরে জাতীয় কাউন্সিলের অধিবেশন হওয়ার কথা থাকলেও স্থগিত হয়ে যায়। আগামী ৮ ও ৯ এপ্রিল ভুবনেশ্বরের ওই অধিবেশন হওয়ার কথা। তার আগেই সব রাজ্যে দলের রাজ্য কাউন্সিলের অধিবেশন হচ্ছে। সেখান থেকে দু’জন করে প্রতিনিধি জাতীয় কাউন্সিলে যাবেন। সেই উপলক্ষেই আজ গুয়াহাটিতে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির বৈঠক হল। অংশ নেন ফ ব-র পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সম্পাদক তথা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পর্যবেক্ষক নরেন চট্টোপাধ্যায়, মণিপুরের রাজ্য সম্পাদক জ্ঞানেশ্বর সিংহ, অসমের রাজ্য সম্পাদক হরণে বরগোহাঁই, টিইউসিসি-র অসমের রাজ্য সম্পাদক মিহির নন্দী। বৈঠকে হাতি ফান্দি সম্মিলন, অগ্রগামী মহিলা সমিতি, যুব লিগ, ছাত্র ব্লক ও অগ্রগামী কৃষক সভার প্রতিনিধিরাও অংশ নেন।
বৈঠকের পরে দলীয় নেতৃত্বের বক্তব্য, ফ ব-র নীতি-আদর্শের সঙ্গে সিপিএমের কোনও মিল নেই। ফ ব এখন থেকে শুধুই নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর আদর্শ তথা জাতীয়তাবাদী, সমাজতান্ত্রিক দল হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেবে। ফ ব নেতৃত্বের যুক্তি, পতাকায় কাস্তে-হাতুড়ি থাকলে মানুষ তাঁদের সিপিএমের অংশ বলে মনে করছেন! তাই কাস্তে-হাতুড়ি সরাতে হবে। কিন্তু পতাকার রং আগের মতো লাল থাকবে না তেরঙা হবে, তা নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। প্রসঙ্গত, অন্য তিন প্রধান বাম দল সিপিএম, সিপিআই এবং আরএসপি-র পতাকায় কাস্তে-হাতুড়ি চিহ্ন আছে এবং এই নিয়ে তারা নতুন কোনও ভাবনায় সময় দিচ্ছে না।
মিহিরবাবু জানান, অসম-মণিপুরের মানুষ প্রধানত তেরঙার পক্ষে। কারণ, নেতাজি নাগপুরে স্বাধীন ভারতের প্রতীক হিসেবে বাঘের চিহ্ন সম্বলিত যে তেরঙা পতাকা উড়িয়েছিলেন, সেটাই তাঁর হাতে গড়া দলের আদর্শের সঙ্গে খাপ খায়। অবশ্য কোনও কারণে তেরঙা পতাকা না হলেও লাল জমির উপরে শুধুই হলদে-কালো বাঘের ছবি থাকতে পারে পতাকায়। ভুবনেশ্বরের অধিবেশনে সারা ভারতের প্রতিনিধিদের মতামতের ভিত্তিতে দলের নতুন পতাকা চূড়ান্ত হবে।