কর্নাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিবকুমার। ছবি সংগৃহীত।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার দল জেডিএসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিজেপি কর্নাটকে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগ তুলল সে রাজ্যের শাসকদল কংগ্রেস। সোমবার কর্নাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিবকুমার বলেন, ‘‘কর্নাটকে কংগ্রেসের সরকার ফেলার জন্য ষড়যন্ত্র শুরু করেছে বিজেপি। কিন্তু তারা সফল হবে না।’’
গত ১৭ এবং ১৮ জুলাই কর্নাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে ২৬টি বিজেপি বিরোধী দলের বৈঠকে নয়া জোট ‘ইন্ডিয়া’ আত্মপ্রকাশ করেছিল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেই বৈঠকে হাজির ছিলেন না সে রাজ্যের তৃতীয় বৃহত্তম দল জেডিএসের কোনও নেতা। পরের দিন দেবগৌড়া-পুত্র তথা কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী জানান, কংগ্রেসের মোকাবিলায় প্রয়োজনে বিজেপির সহযোগী হবেন তাঁরা। এর পরে রবিবার কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা বাসবরাজ বোম্মাইয়ের সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের কথা জানিয়েছিলেন কুমারস্বামী।
রাজনীতির ঘটনাপ্রবাহে দেবগৌড়া-কুমারস্বামীরা বিজেপির সহযোগী হতে চলেছেন বলে গত কয়েক মাস ধরেই জল্পনা চলছে। কর্নাটকের সাম্প্রতিক বিধানসভা ভোটে জেডিএসের ভরাডুবির পর দু’টি ক্ষেত্রে প্রকাশ্যে নরেন্দ্র মোদী সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে জেডিএস। নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন বয়কট ঘিরে বিতর্কে জেডিএস নেতা কুমারস্বামী নিশানা করেছিলেন কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের। গত ২৮ মে সংসদ ভবন উদ্বোধন কর্মসূচিতেও যোগ দিয়েছিল জেডিএস। এর পর জুন মাসের গোড়ায় ওড়িশার বালেশ্বরে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পরে বিরোধীদের তরফে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণোর ইস্তফা দাবি করা হলেও দেবগৌড়া সরাসরি তার বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, ‘‘বালেশ্বর দুর্ঘটনার জেরে রেলমন্ত্রীর ইস্তফা দাবি করা অযৌক্তিক।’’
২০১৮ কর্নাটকের বিধানসভা ভোটের পরে কংগ্রেসের সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন কুমারস্বামী। তাঁর শপথগ্রহণের সময় বেঙ্গালুরুতে দেখা গিয়েছিল বিজেপি বিরোধী দলগুলির সর্বভারতীয় নেতাদের সমাবেশ। এর পরে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে কর্নাটকে মাত্র একটিতে জিতেছিল জেডিএস। পরাজিত হয়েছিলেন স্বয়ং দেবগৌড়া। এর পর বিধায়ক ভাঙিয়ে জেডিএস-কংগ্রেস জোট সরকারের পতন ঘটায় বিজেপি। এ বারও তেমন চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ শিবকুমারের।
সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা ভোটে সে রাজ্যের ২২৪টি কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র ১৯টি আসন জেতায় অস্তিত্ব-সঙ্কটে পড়ে গিয়েছে দেবগৌড়া-কুমারস্বামীর দল। জেডিএসের ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে খারাপ ফল। এই পরিস্থিতিতে দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে প্রাক্তন সহযোগী বিজেপির সঙ্গে আবার জোট বাঁধছে বলে রাজনৈতিক সূত্রের খবর। প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে কর্নাটকে বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন কুমারস্বামী।