কমল নাথ (বাঁ দিকে) এবং পুত্র নকুল নাথ। —ফাইল চিত্র।
বিজেপিতে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েও শেষমেশ কংগ্রেসে থেকে যাওয়ার বার্তা দিয়েছেন কমল নাথ। তবু তাঁকে নিয়ে জল্পনা এখনও থামেনি। ধন্দ রয়েছে কমল নাথের পুত্র নকুল নাথের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েও। এই আবহেই নকুলের উদ্দেশে বার্তা দিল কংগ্রেস। দলের তরফে ইঙ্গিত দেওয়া হল যে, লোকসভা নির্বাচনে ফের বাবার পুরনো আসন ছিন্দওয়াড়া থেকেই হাত প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হবেন তিনি। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মধ্যপ্রদেশে সব আসনে বিজেপির কাছে হারলেও ছিন্দওয়াড়ায় জিতে দলের মুখরক্ষা করেছিলেন নকুল।
সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশ সফরে গিয়েছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জিতেন্দ্র সিংহ। তাঁর এই সফরের কারণ হিসাবে যা জানা যাচ্ছে, তা হলে দলের বিধায়কদের মন বোঝা। অর্থাৎ, কমল-ঘনিষ্ঠেরা তো বটেই, অন্য কংগ্রেস বিধায়কেরা বিজেপির দিকে পা বাড়িয়ে রয়েছেন কি না, দলের প্রতি তাঁদের কোনও ক্ষোভ রয়েছে কি না, তা-ও খুঁজতে বেরিয়েছেন তিনি। মনে করা হচ্ছে, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশেই তিনি মধ্যপ্রদেশ সফরে গিয়েছেন। সেই জিতেন্দ্র সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে নকুল সম্পর্কে বলেন, “তিনি ওখান (ছিন্দওয়াড়া) থেকে শক্তিশালী প্রার্থী।” তার পরই এই কংগ্রেস নেতার সংযোজন, “তিনি (নকুল) অবশ্যই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।”
কমল নাথ বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে জিতেন্দ্রর দাবি, সবটাই বিজেপির ছড়ানো গুজব। তাঁর কথায়, “তিনি (কমল নাথ) আমাদের পুরনো নেতা। আজই তিনি ভারত জোড়ো যাত্রা নিয়ে দলের বৈঠকে যোগ দেবেন।” প্রসঙ্গত, দলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগেই গত মাসে মধ্যপ্রদেশের একমাত্র কংগ্রেস সাংসদ নকুল জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, তিনি পুরনো কেন্দ্র থেকেই ফের প্রার্থী হবেন।
তিনি বিজেপিতে যাচ্ছেন কি না, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কমল নিজে কিছুই বলেননি। কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, দিল্লিতে চুরাশির শিখ দাঙ্গার তদন্তে গঠিত ‘সিট’-এর কাছে কমল নাথের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে দিল্লি হাই কোর্ট রিপোর্ট চেয়েছে। এপ্রিলের মধ্যে তা দিতে বলা হয়েছে। কমল নাথের ভাগ্নে রাতুল পুরী-সহ বেশ কয়েক জন আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে সিবিআই, ইডি-র ব্যাঙ্ক প্রতারণা ও আর্থিক নয়ছয়ের মামলা চলছে। তা নিয়েই কমল ও তাঁর ছেলে ছিন্দওয়াড়ার সাংসদ নকুলের উপরে চাপ রয়েছে।
তবে সোমবারের একটি ঘটনা কংগ্রেসকে স্বস্তি দিয়েছে। ওই দিনই কমল নাথের দিল্লির বাড়ির ছাদ থেকে নামানো হয়েছে ‘জয় শ্রীরাম’ লেখা গেরুয়া পতাকা। যা থেকে মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা মনে করছেন, শেষ পর্যন্ত কমল এবং তাঁর পুত্র নকুল দলেই থেকে যাচ্ছেন।