মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে উঠেছে। প্রতীকী ছবি।
রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’-র কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কংগ্রেস গোটা দেশে ‘হাত সে হাত জোড়ো’ অভিযান শুরু করেছে। কিন্তু কংগ্রেসের নেতারাই একে অপরের সঙ্গে ‘হাত সে হাত জোড়ো’-তে রাজি হচ্ছেন না। কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব এখনও রাজস্থানে অশোক গহলৌত-সচিন পাইলটের বিবাদের সমাধান করে উঠতে পারেননি। এরই মধ্যে মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে উঠেছে।
‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র রেশ ধরে রেখে কংগ্রেসের সংগঠনকে চাঙ্গা রাখতে এবং সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছতে কংগ্রেস ‘হাত সে হাত জোড়ো’ অভিযান শুরু করেছে। এই অভিযানে ঘরে ঘরে রাহুল গান্ধীর চিঠি ও নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের ‘চার্জশিট’ পৌঁছে দেওয়া হবে। শনিবার সাহেবগঞ্জে ঝাড়খণ্ডের ‘হাত সে হাত জোড়ো’ অভিযানে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতারণা, শেয়ার দরে কারচুপির অভিযোগ নিয়ে মোদী সরকারকে নিশানা করেছেন। সংসদের বইরে, এমনকি সংসদের ভিতরেও বাক্স্বাধীনতা নেই বলে অভিযোগ তুলে খড়্গে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে অহঙ্কার এসে গিয়েছে। কিন্তু কারও অহঙ্কারই বেশি দিন টেকে না।’’ মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই জেলে পুরে দেওয়া হচ্ছে বলেও খড়্গে অভিযোগ তুলেছেন।
মোদী সরকারকে নিশানা করলেও কংগ্রেস সভাপতির এখন আসল চিন্তা দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। বছরের শেষে রাজস্থানের নির্বাচন। কিন্তু নেতৃত্বের দাবিদার দুই নেতা অশোক গহলৌত ও সচিন পাইলটের বিবাদ এখনও মেটানো যায়নি। তিন দিন আগে রাজস্থান নিয়ে এআইসিসি-তে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল রাজস্থানের ভারপ্রাপ্ত নেতা সুখজিন্দর সিংহ রণধাওয়া ও রাজস্থানের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গোবিন্দ দোতাসরার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। রাজস্থানের জট ছাড়ানোর আগেই মহারাষ্ট্রে প্রদেশ সভাপতি নানা পাটোলে ও পরিষদীয় দলনেতা বালাসাহেব থোরাটের মধ্যে বিবাদ তুঙ্গে উঠেছে। খোরাট পদত্যাগ করে চিঠি পাঠিয়েছেন। এ দিকে সামনেই বৃহন্মুম্বই পুরসভার নির্বাচন।
বছরের শেষে ভোটমুখী মধ্যপ্রদেশেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছে। খোদ রাহুল গান্ধী এ বার মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস জিতছে বলে দাবি করেছেন। পাঁচ বছর আগেও ভোটে জিতে কংগ্রেস মধ্যপ্রদেশে সরকারে এসেছিল। কিন্তু কমলনাথ বনাম জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার বিবাদের সুযোগ নিয়ে বিজেপি সেই সরকার ফেলে দেয়। এ বার মধ্যপ্রদেশ প্রদেশ কংগ্রেস আগেভাগেই কমলনাথকে ভবিষ্যতের মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করে দিয়েছে। তাতে অরুণ যাদবের মতো তরুণ নেতারা আপত্তি তুলেছেন। তাঁদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা ভোটের পরে ঠিক হবে।
এই বিবাদের মধ্যে প্রবীণ কমলনাথ জানিয়েছেন, তিনি আগামী ভোটে লড়বেন না। শীর্ষ কংগ্রেস নেতৃত্বের আশঙ্কা, মধ্যপ্রদেশে এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে ফের তীরে এসে তরী ডুবতে পারে।