রাজ্যসভা নির্বাচনে দু’টি আসন প্রত্যাশামতোই নিজেদের দখলে রাখল কংগ্রেস। বিপিএফ কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মহাবীর জৈনকে প্রার্থী করেছিল। কিন্তু তাঁরা আজ ভোটই দেয়নি। কার্যত তরুণ গগৈয়ের কৌশলে বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যসভা নির্বাচনে বিরোধী জোট নখদন্তহীন হয়ে থাকল। গগৈয়ের প্রার্থীদের পক্ষে ভোট দিয়ে নির্বাচন পরবর্তী জোটের সম্ভাবনা আরও উস্কে দিল এআইইউডিএফ।
বিরোধীদের ভোটের হিসেবে কংগ্রেসের দ্বিতীয় পছন্দের প্রার্থী, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রানি নরহের জেতার সম্ভাবনা ছিল না। আজ প্রথম পছন্দের প্রার্থী রিপুন বরার চেয়েও ৯ ভোট বেশি পেয়ে জিতলেন রানি।
বিপিএফের ১০ জন বিধায়ক সই করে মহাবীর জৈনকে রাজ্যসভায় লড়তে পাঠিয়েছিলেন। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিজেপি ও অগপর সঙ্গে হাত মিলিয়ে জোট গড়া বিপিএফ নেতা হাগ্রামা মহিলারি বাকি দলগুলিকে অনুরোধ করেন জৈনকে ভোট দেওয়ার জন্যে। কিন্তু সেই হাগ্রামার গলাতেই গত রাতে সুর পালটে যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমি নিশ্চিত খবর পেয়েছি জৈন দিল্লিতে গিয়ে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করেছেন। গুয়াহাটিতে তরুণ গগৈয়ের সঙ্গেও তাঁর গোপন লেনদেন হয়েছে। এমন বিশ্বাসঘাতক প্রার্থীকে আমরা ভোট দেব না। বাকিদেরও একই অনুরোধ করব।’’ তরুণ গগৈ অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘জৈনের বিস্তর টাকা রয়েছে। আমার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার প্রয়োজন তাঁর নেই। রাজ্যসভায় আমাদেরই জেতার কথা ছিল, তাই আমরাই জিতলাম।’’ জৈন দাঁড়ানোর পরে অগপ, বিপিএফ, বিজেপি তো বটেই, এআইইউডিএফও তাঁকেই ভোট দেবে বলেছিল। সে ক্ষেত্রে কংগ্রেসের দ্বিতীয় পছন্দের প্রার্থী রানি নরহের জেতার আশাই ছিল না। কিন্তু এ বার টিকিট না পাওয়া এআইইউডিএফের বর্তমান বিধায়ক পূর্ব গোয়ালপাড়ার মনোয়ার হুসেন, জলেশ্বরের মইনুদ্দিন আহমেদ, ধুবুরির জাহানুদ্দিন, পূর্ব বিলাসীপাড়ার গুল আখতারা বেগম ও রূপহিহাটের মজুবুর রহমানরা দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে কংগ্রেস প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার কথা গত কালই ঘোষণা করে দেন। তার উপর বিপিএফ ভোটদান থেকে সরে থাকার পরে, পরিস্থিতি যাচাই করে আজমল দলের বিধায়কদের কংগ্রেসের পক্ষেই ভোট দিতে নির্দেশ দেন।
এআইইউডিএফের ১১ জনের ভোট পেয়ে রানি নরহের জয়ের পরে গগৈ বলেন, ‘‘আমি তো কংগ্রস প্রার্থীদের পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্যে এআইইউডিএফ-সহ সকলকেই আবেদন জানিয়েছিলাম। এআইইউডিএফ আমাদের প্রার্থীকে ভোট দেওয়া মানেই জোট গড়া নয়।’’ অগপ-বিজেপি বিধায়করা ভোটদানে বিরত থাকলেও, টিকিট না মেলায় ক্ষুব্ধ বিজেপি বিধায়ক মনোরঞ্জন দাস এ দিন একাই এসে কংগ্রেস প্রার্থীকে ভোট দেন।