ইউপিএ-সরকারের এক মন্ত্রীর বক্তব্য, রাহুল নিজেও ভারত জোড়ো যাত্রায় বিকল্প নীতি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন। প্রতীকী ছবি।
ভারত জোড়ো যাত্রার মূল বার্তা ছিল তিনটি— বিজেপি-আরএসএসের বিদ্বেষ ও ঘৃণার রাজনীতি, বেকারত্ব এবং মূল্যবৃদ্ধি।
আজ রাতে দিল্লি থেকে রায়পুর রওনা হওয়ার আগে কংগ্রেসের এক নেতা বললেন, “তিনটিই মোদী সরকার তথা বিজেপি-র বিরুদ্ধে আক্রমণ। কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে কী করবে, সে কথা কোথায়?”
ছত্তীসগঢ়ের রাজধানী রায়পুরে আগামী পরশু থেকে কংগ্রেসের ৮৫তম প্লেনারি অধিবেশন শুরু হতে চলেছে। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের ঢাকে কাঠি পড়ার এক বছর আগে দলের মহাধিবেশনের মুখে দাঁড়িয়ে কংগ্রেসের অন্দরমহলে প্রশ্ন, নরেন্দ্র মোদী, বিজেপি-আরএসএসের সমালোচনা অনেক হল। কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে বিকল্প নীতি কী, তার দিশা কোথায়?
কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ নেতাদের জি-২৩ গোষ্ঠী এখন টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছে। সেই বিক্ষুব্ধদের এক নেতা বলছেন, “রাহুল গান্ধী গোটা ভারত জোড়ো যাত্রায় শুধু ভালবাসার কথা বলেছেন। ঘৃণার বাজারে মহব্বতের দোকান খুলবেন বলেছেন। কিন্তু তা দিয়ে তো ভোটে জেতা যাবে না। কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে কী করবে, সেটাও তো বলতে হবে। মোদী সরকারের আর্থিক নীতি, বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আমরা সরব হচ্ছি। কিন্তু আমরা এই পরিস্থিতিতে ক্ষমতায় এলে কী করব? মানুষ তো সেটাও জানতে চাইবেন।”
কংগ্রেস সূত্রের খবর, রায়পুরের প্লেনারি অধিবেশনে একের পর এক প্রস্তাবে রাহুলের ভারত জোড়ো যাত্রার অকুণ্ঠ প্রশংসা উঠে আসবে। যাত্রার ফলে কংগ্রেসের কর্মীদের মধ্যে থেকে গোটা দেশে কী ভাবে সাড়া পড়েছে, তা বলা হবে। কংগ্রেসের বিদায়ী ওয়ার্কিং কমিটির এক সদস্য বলেন, “ভারত জোড়ো যাত্রা একটা সুর বেঁধে দিয়েছে। তাকে কাজে লাগিয়ে বিকল্প নীতি তুলতে ধরতে হবে। রাহুল কংগ্রেসের মতাদর্শ, কংগ্রেসের নীতির কথা বলছেন। কিন্তু সেই নীতিটা কী, সেটাও স্পষ্ট করে বলা দরকার। কিন্তু যাত্রার পরে ‘হাত সে হাত জোড়ো’ অভিযানে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে চার্জশিট ছাড়া নতুন কিছু বলতে পারিনি।”
ইউপিএ-সরকারের এক মন্ত্রীর বক্তব্য, রাহুল নিজেও ভারত জোড়ো যাত্রায় বিকল্প নীতি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন। শিক্ষা, কর্মসংস্থান, ছোট-মাঝারি শিল্প নিয়ে তিনি তাঁর ভাবনা জানিয়েছেন। সেগুলি সবই দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। কংগ্রেসের ওই প্রাক্তন মন্ত্রীর মতে, মোদী সরকার পাকা বাড়ি, শৌচালয় থেকে রান্নার গ্যাস মানুষের হাতে তুলে দিচ্ছে। তার জবাবে শুধু ২০১৯-এর মতো ন্যূনতম মাসিক আয়ের খয়রাতি করলে চলবে না। চাকরি থেকে ছোট শিল্প, ব্যবসায় রোজগারের সুযোগ তৈরি নিয়ে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ ঘোষণা করে এখন থেকেই প্রচারে যেতে হবে। ভোটের আগে ইস্তেহার প্রকাশ করে মোদীকে হারানো যাবে না।