ছবি পিটিআই।
১৯০৫-এর বঙ্গভঙ্গ। লর্ড কার্জন ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’-এর নীতি নিয়ে সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি করতে বাংলাকে দু’ভাগ করলেন। সেই বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ থেকেই শুরু হয়েছিল স্বদেশি আন্দোলন। বিদেশি পণ্য বর্জনের ডাক দেওয়া হয়েছিল তখনই। সেই ইতিহাস এ বার প্রচারে নিয়ে আসছে কংগ্রেস।
এখন ‘আত্মনির্ভর ভারত’-এর ঢাক পিটিয়ে নরেন্দ্র মোদী নিজেকে গাঁধীর প্রকৃত উত্তরাধিকারী হিসেবে তুলে ধরছেন। বলছেন, তিনিই গাঁধীর স্বদেশি আন্দোলনের লক্ষ্য বাস্তবায়িত করছেন। সর্দার বল্লভভাই পটেল থেকে গাঁধী—একের পর এক কংগ্রেসের ‘আইকন’ মোদীর জিম্মায় চলে যাচ্ছে দেখে কংগ্রেস নিজের ঐতিহ্য তুলে ধরতে পাল্টা প্রচার শুরু করেছে। ১৫ অগস্ট থেকে শুরু করা ‘দেশের ঐতিহ্য’ নামের সেই ভিডিয়ো সিরিজে এ বার উঠে এল বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের ইতিহাস। কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর অভিযোগ, সেদিনও ব্রিটিশ সরকার যে বিভাজন তৈরি করে শাসনের নীতি নিয়েছিল, এখনও কেন্দ্রীয় সরকার সেই বিভাজনের নীতি নিয়ে চলছে। রাহুলের যুক্তি, বিভাজন ও রাজত্ব বরাবরই ঘৃণ্য নীতি ছিল। চিরকালই থাকবে। এই ভাবনাকে দেশ আগেও হারিয়ে দিয়েছে। এখনও হারাবে। কারণ ভ্রাতৃত্ব ও সদ্ভাবনাই এ দেশের গণতন্ত্রের ভিত।
কংগ্রেসের প্রচার অনুযায়ী, ১৯০৫-এ সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি করতে লর্ড কার্জন বঙ্গভঙ্গ করেছিলেন। লক্ষ্য ছিল, স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা কংগ্রেসকে দুর্বল করা। কিন্তু বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে গোটা দেশ প্রতিবাদ জানায়। ১৯০৫-এর ৭ অগস্ট কলকাতার টাউন হলের বৈঠকে ব্রিটিশ পণ্য বয়কটের প্রস্তাব গৃহীত হয়। বারাণসী অধিবেশনে গোপালকৃষ্ণ গোখলের নেতৃত্বে স্বদেশি আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়।
নরেন্দ্র মোদীর ‘আত্মনির্ভর ভারত’ অভিযানে চিনা পণ্য বয়কট করে বা আমদানি বন্ধ করে দেশে সেই সব পণ্য তৈরি ও ব্যবহারের উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। কংগ্রেসের দাবি, স্বাধীনতার আগে স্বদেশির হাত ধরেই দেশীয় কাপড় কল, ব্যাঙ্ক, বিমা সংস্থার ভিত তৈরি হয়। যা থেকে পরবর্তী কালে অসহযোগ আন্দোলন ও সত্যাগ্রহ শুরু হয়। স্বদেশি আন্দোলন থেকেই ওঠে স্বরাজের দাবি। কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, সে সময়ও দল মতাদর্শের সঙ্গে আপস করেনি। এখনও করবে না।