ক্যামেরাবন্দি: বেঙ্গালুরুতে ভোটের প্রচারে গিয়ে মেট্রোয় এক যাত্রীর সঙ্গে নিজস্বী। রবিবার। ছবি: পিটিআই
রাহুল গাঁধী আগামিকাল রাজঘাটে অনশনে বসছেন। মায়াবতী-অখিলেশরা বিঁধছেন নিরন্তর। তার উপর একের পর এক বিজেপির দলিত নেতারাই কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীকে।
দলিত-কাঁটা দূর করতে পুরো জোর লাগিয়েও দিশাহারা বিজেপি। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহকে তো রোজ দলিত-মন্ত্র জপ করতে হচ্ছেই। দফায় দফায় মন্ত্রীদেরও সামনে এসে ঘরে-বাইরের আক্রমণ সামাল দিতে হচ্ছে।
শান্তি-সম্প্রীতি রক্ষায় কাল দেশজুড়ে অনশনের ডাক দিয়েছেন রাহুল। দিল্লির রাজঘাটে তিনি নিজেই যোগ দেবেন। এরই মধ্যে ভারত-বন্ধের পর দলিতদের ভুয়ো মামলায় ফাঁসিয়ে জুলুম চলছে বলে অভিযোগ করেন মায়াবতী। মোদী-শাহের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিল্লির দলিত সাংসদ বিজেপির উদিত রাজও মায়ার সুরে সরব হয়েছেন আজ। জানিয়েছেন, তিনি আর চুপ করে বসে থাকবেন না। এর আগে বিজেপির আরও চার দলিত সাংসদ প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে নালিশ জানিয়ে বসে আছেন।
ঘরে-বাইরে অসন্তোষ বাড়ছে দেখে আজ রবিবারের ছুটির দিনেও সামনে এলেন কেন্দ্রের দুই মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ আর থাওরচন্দ্র গহলৌত। যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করে তাঁরা বলেন, ‘‘অম্বেডকর আর গাঁধী কখনও হিংসার আশ্রয় নেননি। বিএসপি এখন এক নেতার দল, দলিতের উত্থানের নয়। আর সুপ্রিম কোর্টে যে আইন লঘু করা নিয়ে এত তোলপাড়, খোদ মায়াবতীই মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় নির্দেশ দিয়েছিলেন, দলিত নিগ্রহের অভিযোগে যেন কোনও নির্দোষের শাস্তি না হয়।’’
রোজ কোনও না কোনও বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে মোদী এখন দলিত-প্রসঙ্গ জুড়ে দিচ্ছেন। আজ নিজেই জানালেন, মুদ্রা যোজনার তিন বছর পূর্তিতে যাঁরা সুবিধা পেয়েছেন, তাঁদের বুধবার ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী নিবাসে। এই প্রকল্পতেও যে দলিত, জনজাতিরাই সুবিধা পেয়েছেন, তা-ও জানাতে ভুল করেননি তিনি। কিন্তু রাহুলের বক্তব্য, শুধুমাত্র অম্বেডকরের মূর্তিতে প্রণাম জানানোকেই প্রধানমন্ত্রী দলিতের উন্নয়ন মনে করেন। অথচ দেশজুড়ে দলিত নিগ্রহ হচ্ছে। দলিত নিপীড়ন প্রতিরোধ আইনও খর্বের চেষ্টা হচ্ছে।
রবিশঙ্কর বলেন, ‘‘রাহুল গাঁধী অনশনে বসুন, আপত্তি নেই। কিন্তু দলিত নিয়ে মিথ্যা প্রচার করা ঠিক নয়। বিজেপি কোনও ভাবেই দলিত আইন খর্ব করছে না। সংরক্ষণ তুলছে না। বরং বিজেপিই আইন আরও শক্ত করেছে।’’ কংগ্রেস বলছে, বিরোধীদের কথা বিজেপিকে শুনতে হবে না, তারা অন্তত নিজেদের দলের সাংসদদের কথা শুনুক। প্রধানমন্ত্রী জবাব তো দিন। ঢোক গিলে রবিশঙ্কর বলেন, ‘‘দলের সাংসদদেরও কোনও আপত্তি থাকলে, আলোচনা হবে। তাঁদেরও বোঝানো হবে।’’ অথচ এই একই কথা গত কয়েক দিন ধরেই বলে আসছে বিজেপি। তার পরেও একের পর এক বিজেপি সাংসদ প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন।