রাহুল গাঁধী। — ফাইল চিত্র।
দক্ষিণ থেকে উত্তরের পরে পশ্চিম থেকে পূর্ব। সব পরিকল্পনামাফিক এগোলে আগামী বছর বাংলাতেও ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় দেখা যেতে পারে রাহুল গান্ধীকে। এ বারের ‘ভারত জোড়ো’র পরবর্তী পর্ব হিসেবে তখন পশ্চিম থেকে পূর্বে পদযাত্রায় বেরোবে রাহুলের কংগ্রেস।
রাহুলের নেতৃত্বে এখন দক্ষিণের কন্যাকুমারী থেকে উত্তরে কাশ্মীর অভিমুখে চলছে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’। যা চলবে পাঁচ মাস ধরে। এই যাত্রাপথের কারণেই পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে মূল পদযাত্রা নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আগামী বছর পশ্চিমে গুজরাত থেকে উত্তর-পূর্বে অরুণাচল প্রদেশ পর্যন্ত আরও একটি পদযাত্রার পরিকল্পনা হচ্ছে। তার অঙ্গ হিসেবে ওড়িশা, বাংলা বা অসমে আসবেন রাহুল। কলকাতায় এসে শনিবার এই পরিকল্পনার কথা জানিয়ে গেলেন ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র সমন্বয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই এআইসিসি নেতা জয়রাম রমেশ ও দিগ্বিজয় সিংহ।
যে সব রাজ্যে এখন রাহুল যাচ্ছেন না, সেখানে আলাদা পদযাত্রাও হচ্ছে। বাংলায় সেই পদযাত্রার কর্মসূচি চূড়ান্ত হবে ২০ সেপ্টেম্বর। বাংলার পদযাত্রা সেরে তার কোনও স্মারক নিয়ে বা পৃথক ভাবে শ’খানেক কংগ্রেস কর্মী রাহুলের মূল পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করবেন। এ রাজ্যের যাত্রায় অংশগ্রহণের জন্য প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরাকে অনুরোধ করা হবে বলেও জানিয়েছেন রমেশ।
বিধান ভবনে এ দিন ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রমেশ ও দিগ্বিজয়। বৈঠকে ছিলেন প্রদীপ ভট্টাচার্য, নেপাল মাহাতো, অসিত মিত্র, শুভঙ্কর সরকার, আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়েরা। বাংলার পদযাত্রা পাহাড় থেকে সাগরের দিকে হবে, না দক্ষিণ থেকে উপরে উঠবে, তা প্রদেশ নেতৃত্বকেই ঠিক করতে বলেছেন এআইসিসি-র নেতারা। সূত্রের খবর, বৈঠকে বর্ষীয়ান নেতা দিগ্বিজয় পরামর্শ দিয়েছেন, এই যাত্রাকে উপলক্ষ করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ জনজীবনের সমস্যা নিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলুন কংগ্রেসের কর্মীরা। নেতারা নিজেদের মতো আলাদা যাত্রা করে নিলে হবে না, রাজ্য স্তরে দলের একটি কেন্দ্রীয় পদযাত্রার কথাও বঙ্গের নেতৃত্বকে বলেছেন তিনি।
রমেশ এ দিন বলেন, ‘‘শুধু বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য নয়, বৈচিত্রের দ্বারাই ঐক্য— এই ভাবনা নিয়ে ‘ভারক জোড়ো যাত্রা’ হচ্ছে। বৈচিত্রই আমাদের দেশের ঐক্যের শক্তি। এখন দক্ষিণ থেকে উত্তরে লম্বালম্বি যাত্রা হচ্ছে বলে বেশ কিছু রাজ্য বাদ পড়ছে। আগামী বছর পশ্চিম থেকে পূর্বে আড়াআড়ি আরও একটা পদযাত্রা করতে চাই। তখন রাহুল আসবেন এই রাজ্য ও অন্যান্য জায়গায়।’’ পাশাপাশিই রমেশ ও দিগ্বিজয় জানিয়েছেন, বাংলায় এখন ‘ভারত জোড়ো’র অঙ্গ হিসেবে যে যাত্রা হবে, তাতে তাঁরাও অংশগ্রহণ করবেন।
রাজ্যে ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র সমন্বয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রদীপবাবু বলেছেন, ‘‘পুলিশ যদি অনুমতি না দেয়, তা হলেও আমরা যাত্রা টেনে নিয়ে যাব। মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্বের মূল বিষয়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও কিছু প্রশ্ন সামনে রাখা হবে।’’
বিজেপি-বিরোধী ঐক্য যে কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে সম্ভব নয়, ফের সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন রমেশ। তাঁর কথায়, ‘‘কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে গিয়ে কংগ্রেস নাম নিয়েই অনেক দল বেঁচে আছে, অনেকে আবার কংগ্রেস-বিরোধিতার উপরেই রয়েছে। কংগ্রেস সকলের কাছেই ‘পাঞ্চিং ব্যাগ’! কংগ্রেস বড় হাতি, ধীরে চলে কিন্তু ঠিক পথেই চলে।’’