অমিত শাহের চালে রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান পদের জন্য লড়াই থেকে একে একে পিছু হটল বিজেপি-বিরোধী শিবিরের দলগুলি। উপায় না-দেখে ভোটযুদ্ধে নামার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিল কংগ্রেস।
ডেপুটি চেয়ারম্যান পদের জন্য কংগ্রেস নয়, বিরোধী শিবিরের অন্য কোনও শরিক লড়বে, প্রথমে এমনটাই ঠিক হয়েছিল। কিন্তু বিরোধীদের কার্যত অপ্রস্তুত করে গত কাল ভোটের দিন ঘোষণা হয়েছে। মাত্র চার দিনের মধ্যে ভোট করানোর পিছনে বিজেপি সভাপতির হাত রয়েছে বলেই অনেকের মত। তাঁদের দাবি, গত তিন মাস ধরে অঙ্ক কষে জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েই আচমকা ভোট ঘোষণা করিয়েছেন তিনি। সেই চালে যে কাজও হয়েছে, সেটা স্পষ্ট হয়েছে আজ। প্রার্থী মেলেনি বিরোধী দলগুলি থেকে। ডিএমকে-র তিরুচি শিবা লড়তে চাইলেও স্ট্যালিন বারণ করেন। শরদ পওয়ার তাঁর দলের বন্দনা চহ্বাণের নাম প্রস্তাব করেন। পরে নবীন পট্টনায়ককে ফোন করেন সমর্থনের জন্য। কিন্তু নবীন জানান, নীতীশ কুমারের দলের হরিবংশ নায়ারণ সিংহ এনডিএ প্রার্থী হচ্ছেন। তাঁকে সমর্থনের ব্যাপারে ইতিমধ্যেই নীতীশকে কথা দিয়েছেন তিনি। তা শুনে পওয়ার পিছু হঠেন। যদিও বিজেডি রাতে বলেছে, তারা এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।
এ দিন সন্ধ্যায় বিরোধী দলগুলির বৈঠকে যখন দেখা যায় যে শরিকেরা প্রার্থী দিতে নারাজ, তখন কংগ্রেসই লড়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কে প্রার্থী হবেন তা চূড়ান্ত না হলেও বি কে হরিপ্রসাদ, আনন্দ শর্মা, এবং কুমারী শৈলজার নাম নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল সাংসদ কে টি এস তুলসীর নামও বিবেচিত হতে পারে বলে খবর। আগামিকাল, বুধবার মনোনয়ন জমার শেষ দিন। বিরোধী শিবিরের কিছু নেতার অভিযোগ, ‘‘পওয়ারের দলের প্রফুল্ল পটেলকে সিবিআইয়ের ভয় দেখানো হচ্ছে। তাই তারা পিছিয়ে এল। করুণানিধির মৃত্যু ডিএমকের না-লড়ার অবশ্যই একটা কারণ। কিন্তু বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ঝুঁকি তারাও নিতে চায়নি।’’
এরই মধ্যে সংসদীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমার আজ হরিবংশের নামে ঐকমত্যের জন্য বিরোধীদের কাছে আবেদন জানান। যদিও অমিত শাহের মন্তব্য, ‘‘রাহুল গাঁধী কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার পর ঐকমত্যের সম্ভাবনা শেষ হয়ে গিয়েছে।’’
তবে হাল ছাড়ছে না কংগ্রেস। তাদের ধারণা, বিজেডির সমর্থন পেলে বাজিমাত করা সম্ভব। দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘দুই শিবিরের ফারাক জনা দশেকের বেশি নয়। কারণ, জগনের দল বলেছে তারা এনডিএ প্রার্থীর বিপক্ষে ভোট দেবে। পিডিপি-ও ভোটদানে বিরত থাকবে।’’