Satyagraha

petrol price: সত্যাগ্রহের ধাঁচে কর্মসূচি কংগ্রেসের

২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে মহাত্মা গাঁধীর নির্দেশিত অহিংস সত্যাগ্রহের পথেই ফিরতে চাইছে রাহুল গাঁধীর কংগ্রেস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২১ ০৮:৩৮
Share:

রান্নার গ্যাস, পেট্রল-ডিজ়েল থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে ১৪ নভেম্বর থেকে কংগ্রেসের ‘জন জাগরণ অভিযান’ শুরু হচ্ছে। প্রতীকী ছবি।

২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেস-মুক্ত ভারতের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছিলেন, খোদ মোহনদাস গাঁধীই স্বাধীনতার পরে কংগ্রেস দলটিকে ভেঙে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। গাঁধী আসলে কংগ্রেস-মুক্ত ভারতই চেয়েছিলেন।

Advertisement

২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে সেই মোহনদাস গাঁধীর নির্দেশিত অহিংস সত্যাগ্রহের পথেই ফিরতে চাইছে রাহুল গাঁধীর কংগ্রেস।

রান্নার গ্যাস, পেট্রল-ডিজ়েল থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে ১৪ নভেম্বর থেকে কংগ্রেসের ‘জন জাগরণ অভিযান’ শুরু হচ্ছে। ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত এই অভিযানে কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা সাত দিনের জন্য পদযাত্রা করবেন। সে সময়ে কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের জন্য গাঁধী টুপি মাথায় দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। গাঁধীর পদযাত্রার আদলেই কংগ্রেসের এই পদযাত্রায় বড় জনসভার বদলে ছোট ছোট বৈঠকের আয়োজন করা হবে। সেখানে মূল্যবৃদ্ধি ও আমজনতার জীবনে তার প্রভাব নিয়ে আলোচনা করা হবে। জন জাগরণ অভিযানের ‘লোগো’ হিসেবে গাঁধীর ডান্ডি অভিযানের ছবিই বেছে নেওয়া হয়েছে। দলিত, অনগ্রসর শ্রেণির মানুষ তো বটেই। এই অভিযানে মহিলাদের অংশগ্রহণে জোর দিতে চাইছে কংগ্রেস। ডান্ডি অভিযানের মতোই। কারণ হেঁসেলেই মূল্যবৃদ্ধির আঁচ সবচেয়ে বেশি লাগছে।

Advertisement

মানুষের সমস্যা নিয়ে টানা আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করতে সনিয়া গাঁধী দিগ্বিজয় সিংহের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেছিলেন। আজ দিগ্বিজয় বলেন, “লবণের উপরে কর চাপানোর প্রতিবাদে গাঁধী ডান্ডি অভিযান করেছিলেন। আমরা গ্যাস, জ্বালানিতে কর চাপানোর বিরুদ্ধে জন জাগরণ অভিযান করছি। যখন গাঁধীজি ডান্ডি অভিযানের পরিকল্পনা করেন, অনেকেই সংশয়ে ছিলেন। গাঁধীজি বলেছিলেন, মহিলারা ঠিক এতে যোগ দেবেন। সেটাই হয়েছিল। ডান্ডি অভিযানে অংশগ্রহণকারী ৩৯ হাজার মানুষের মধ্যে ১৯ হাজারই ছিলেন মহিলা।” কংগ্রেসের পুরনো দিনের আন্দোলনের মতো জন জাগরণ অভিযানের দিন সকালে প্রভাত ফেরি ও তার পরে দলিত, অনগ্রসর শ্রেণির মানুষের এলাকায় সাফাই অভিযানের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

রাহুল গাঁধীর পরিকল্পনা মাফিক আগেই ঠিক হয়েছিল, ১২ থেকে ১৫ নভেম্বর মহারাষ্ট্রের ওয়ার্ধায় গাঁধীর সেবাগ্রামে কংগ্রেস নেতাদের মতাদর্শগত প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত হবে। ওই চার দিনের মধ্যে এক দিন মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে অভিযানের বিষয়েও রাজ্য স্তরের নেতাদের জন্য প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। গাঁধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ এক এআইসিসি নেতার ব্যাখ্যা, “কংগ্রেস স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্য তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তার পরে সরকারি ক্ষমতার জন্য দলে পরিণত হয় দলটি। এখন কংগ্রেসকে আবার আন্দোলনের দলে পরিণত করতে হবে।” তাঁর ব্যাখ্যা— মোদী ভুল বলেছিলেন। গাঁধীজি আসলে কংগ্রেসের ভোল বদলের প্রয়োজনের কথা বলেছিলেন। রাহুল গাঁধী এখন সেটাই করতে চাইছেন।

কংগ্রেস সূত্রের খবর, প্রথমে মূল্যবৃদ্ধি, তার পরে কৃষকদের দাবি, শ্রমিকদের সমস্যা, সরকারি সম্পত্তি বিক্রির বিরুদ্ধে আন্দোলনে যেতে চাইছেন সনিয়া-রাহুল-প্রিয়ঙ্কারা। দিগ্বিজয়ের নেতৃত্বাধীন কমিটির সঙ্গে গাঁধী পরিবারের আলোচনা অনুযায়ী, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত টানা আন্দোলন হবে। রাহুল-প্রিয়ঙ্কাও এই আন্দোলনে অংশ নেবেন। রাহুল নিজে আজ টুইট করে বলেছেন, “বিজেপি সরকারের ‘জন উৎপীড়ন অভিযান’ চলছিল। এ বার কংগ্রেসের ‘জন জাগরণ অভিযান’ চলবে। অন্যায়ের জবাব আদায় করেই ছাড়ব।” কংগ্রেসের অন্দরমহলে প্রশ্ন একটাই। মরচে পড়ে যাওয়া কংগ্রেসের সংগঠনকে সত্যিই আবার পথে নামানো যাবে তো? দিগ্বিজয়ের জবাব, “সেটাই আসল চ্যালেঞ্জ।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement