(বাঁ দিকে) গৌতম আদানি এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
আমেরিকার থেকে ড্রোন কেনার চুক্তি? দু’দেশে যৌথ উদ্যোগে যুদ্ধবিমান তৈরি? না কি মিশরে গিয়ে ‘সুয়েজ় ক্যানাল ইকনমিক জ়োনে’ জমির বন্দোবস্ত?
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ বারের আমেরিকা এবং মিশর সফরে গিয়ে তাঁর ‘বন্ধু’ শিল্পপতি গৌতম আদানির সংস্থার জন্য কোনও না কোনও ‘উপহার’ নিয়ে আসবেন বলে সন্দেহ কংগ্রেসের। কিন্তু কী সেই উপহার, তার খোঁজ এখনও মেলেনি। তার সন্ধানেই এখন কংগ্রেসের রিসার্চ সেল দিনরাত এক করে কাজ করে চলেছে।
আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতারণা, শেয়ার দরে কারচুপির অভিযোগ ওঠার পরে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সংসদে প্রশ্ন তুলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সব বিদেশ সফরের পরে সেই দেশে গৌতম আদানির গোষ্ঠী কোনও না কোনও বরাত পেয়েছে। শ্রীলঙ্কার মতো অনেক দেশে মোদী নিজেই আদানিকে বরাত পাইয়ে দিতে উদ্যোগী হয়েছিলেন বলেও অভিযোগ উঠেছিল। কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, এ বার আমেরিকা এবং তার পরে মিশর সফরেও ‘আদানিকে পাইয়ে দেওয়ার’ ব্যতিক্রম হবে না। সবই হয়তো পরে প্রকাশ্যে আসবে।
প্রধানমন্ত্রীর এ বারের আমেরিকা সফরে দু’টি বড় প্রতিরক্ষা চুক্তি হবে তা নিশ্চিত। একটি ৩০০ কোটি ডলার খরচ করে আমেরিকার জেনারেল অ্যাটমিক্স সংস্থার তৈরি ৩০টি এমকিউ-নাইন হানাদার ড্রোন কেনার বিষয়ে চুক্তি হবে। অপরটি, আমেরিকার জেনারেল ইলেকট্রিক সংস্থা এ দেশের হ্যাল-এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভারতে হালকা ওজনের যুদ্ধবিমানের আধুনিক জেট ইঞ্জিন তৈরির বিষয়ে চুক্তি হতে পারে। কংগ্রেস নেতারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, আদানি এন্টারপ্রাইজ গত বছরই বেঙ্গালুরুর ড্রোন নির্মাণকারী সংস্থা জেনারেল এরোনটিক্সের ৫০ শতাংশ মালিকানা কিনেছে। আদানি গোষ্ঠীর প্রতিরক্ষা সংস্থা ‘আদানি ডিফেন্স সিস্টেমস অ্যান্ড টেকনোলজিস’ বেঙ্গালুরুর সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে। আদানি ও অম্বানি— দুই গোষ্ঠীই অসামরিক ড্রোন পরিষেবা ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকতে চাইছে। প্রতিরক্ষা ছাড়াও তথ্যপ্রযুক্তি, কৃত্রিম মেধা ক্ষেত্রের কোনও চুক্তিতে আদানি গোষ্ঠী ফায়দা পাচ্ছে কি না, সে দিকেও কংগ্রেসের নজর রয়েছে। কারণ, অর্থনীতির অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আদানি গোষ্ঠী তার ডালপালা ছড়িয়ে রেখেছে।
আমেরিকার থেকে মিশরে যাবেন মোদী। মিশরের প্রেসিডেন্ট আব্দল ফতে অল সিসি গত জানুয়ারিতে ভারতে এসেছিলেন। মিশরের বিশেষ আর্থিক অঞ্চল ‘সুয়েজ় ক্যানাল ইকনমিক জ়োনে’ চিনের মতো ভারতও শিল্পাঞ্চলের জমি পেতে পারে। কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, বন্দর-জাহাজ শিল্পে এমনিতেই এগিয়ে থাকা আদানি গোষ্ঠীর জন্য মিশরেও কিছু সুবিধা পাইয়ে দিতে পারেন মোদী।