ফাইল চিত্র।
প্রায় সব রকম অঙ্কেই পরাজয় নিশ্চিত বুঝে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী আর রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে শক্তিক্ষয় করতে চাইছেন না।
লোকসভা, রাজ্যসভার সাংসদ সংখ্যা এবং উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, গোয়া, মণিপুরে বিজেপি জিতে আসার পরে যে সমীকরণ দাঁড়িয়েছে, তাতে কংগ্রেস হাইকমান্ড মনে করছে, কোনও ভাবেই কংগ্রেস বা বিরোধী জোটের প্রার্থীর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জেতা হবে না। তাই তা নিয়ে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব আর মাথা ঘামাতে চাইছেন না। এমনকি কংগ্রেসের কাউকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেপ্রার্থী করার বিষয়েও গান্ধী পরিবার আগ্রহী নয় বলে সূত্রের খবর। তার বদলে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব আপাতত ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে সংগঠনের হাল ফেরানোর দিকে বেশি নজরদিতে চাইছে।
আগামী ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতির নির্বাচন হয়ে যাবে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে লোকসভা, রাজ্যসভার সাংসদ, সমস্ত রাজ্যের বিধায়কেরা ভোট দেন। তবে সাংসদদের থেকে বিধায়কদের ভোটের মূল্য কম। বিধায়কদেরভোটের মূল্য নির্ভর করে রাজ্যের জনসংখ্যার উপরে। উত্তরপ্রদেশ-সহ ৫ রাজ্যের নির্বাচনের আগে কংগ্রেস ও বিরোধী শিবিরের হিসেব ছিল, বিজেপি যদি উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, গোয়ায় হেরে যায়, বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশে বিপুল আসন খোয়ায়, তা হলে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে লড়াইয়ের সুযোগ তৈরি হবে। কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলির ভাবনা ছিল, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধী জোটকে এককাট্টা করার মহড়া হবে। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধী শিবিরের কাউকে রাষ্ট্রপতি ভবনে বসিয়ে মোদী সরকার তথা বিজেপিকে চাপে ফেলে দেওয়া যাবে।
সে সব হিসেব উল্টে বিজেপি উত্তরপ্রদেশে ক্ষমতায় ফিরেছে। আসন কমলেও তা খুব বেশি নয়। উত্তরাখণ্ড, গোয়া, মণিপুরেও ক্ষমতা ধরে রেখেছে। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছে, বিজেপি তার শরিক দলকে সঙ্গে নিয়ে নিজেদের প্রার্থীকে অনায়াসে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জিতিয়ে আনতে পারবে।এনডিএ-র বাইরেও নবীনপট্টনায়কের বিজু জনতা দল, জগন্মোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেস এবং কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতিও বিজেপির প্রার্থীকে সমর্থন করতে পারে। উল্টো দিকে কংগ্রেসের প্রার্থীকে যদি এনসিপি, আরজেডি,ডিএমকে-র বাইরে এসপি, তৃণমূল, বাম, তেলুগু দেশমের মতো দলগুলি সমর্থন করেও, তার পরেও জেতা মুশকিল।
প্রশ্ন উঠেছে, কংগ্রেস কি সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি ভোটে প্রার্থীই দেবে না? কংগ্রেস সূত্রের জবাব, শেষ পর্যন্ত নিয়ম রক্ষার জন্য কাউকেপ্রার্থী করা হতে পারে। আঞ্চলিক দলগুলি কী করছে, তা-ও কংগ্রেস দেখতে চাইছে। উত্তরপ্রদেশের ভোটের আগে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তৃণমূল নেতৃত্ব এখনও আঞ্চলিক দলগুলিকে পাশে নিয়ে কংগ্রেসের বাইরে অন্যকাউকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী করতে আগ্রহী। সে দিকেও কংগ্রেস নেতারা নজর রাখছেন।