প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
চিনের মুখে মোদী নাম! শুধু নামই নয়, তাঁর ভূয়সী প্রশংসা এবং স্তুতি শোনা গেল বেজিংয়ের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত মুখপত্র ‘গ্লোবাল টাইমস’-এর নিবন্ধে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এই গ্রহণ লাগা সময়ে হঠাৎ করে চিন কেনই বা মোদী এবং তাঁর সরকারের এত প্রশংসা করতে গেল তা নিয়ে এক দিকে তৈরি হয়েছে কূটনৈতিক গুঞ্জন। অন্য দিকে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস আজ ঝাঁপিয়ে পড়েছে কেন্দ্রের উপরে। বক্তব্য, মোদী প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় লাল ফৌজের হাত শক্ত করেছেন, চিনের সঙ্গে ভারতীয় ভূখণ্ডে সমঝোতা করছেন। এটা তাই চিনের পুরস্কার।
গত মাসে নাগপুরে আরএসএস-র সদর কার্যালয়ে সফরে আসেন চিনের বেশ কিছু কূটনীতিক। এই বিষয়টিও মোদী-স্তুতির সঙ্গে যোগ করছে কংগ্রেস ও রাজনৈতিক শিবির। ‘গ্লোবাল টাইমস’-এ প্রকাশিত নিবন্ধে সাংহাইয়ের ফুদান ইউনিভার্সিটির সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ়ের পরিচালক চাং চিয়াতং নরেন্দ্র মোদীর আমলে ‘অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রে ভারতের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির’ কথা তুলে ধরেছেন। বলা হয়েছে, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর আমলে, ভারত কৌশলগত ভাবে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী এবং সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ভারত এখন নিজেদের ভাষ্য নিজেরা তৈরি করছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রতি, বিশেষত চিনের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারতের মনোভাব বদলে গিয়েছে। আগে, ভারত-চিন বাণিজ্যিক সম্পর্কের ভারসাম্যহীনতা নিয়ে আলোচনায় ভারতীয় প্রতিনিধিরা চিন কী পদক্ষেপ করছে, সে দিকেই তাকিয়ে থাকতেন। কিন্তু এখন তাঁরা ভারতের রফতানি সম্ভাবনার উপরে বেশি জোর দিচ্ছেন।” এই নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘এই রূপান্তরিত, শক্তিশালী এবং দৃঢ়’ ভারত, একটি ‘নতুন ভূ-রাজনৈতিক ফ্যাক্টর’ হয়ে উঠেছে।
বিবৃতি দিয়ে কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রীর চিয়ার লিডাররা আনন্দে আত্মহারা চিনের মোদী-ভজনায়। কিন্তু কেনই বা চিন তাঁর স্তুতি করবে না? ২০২০-এর ১৯ জুন তিনি জনসমক্ষে বিবৃতি দিয়ে চিনকে ছাড় দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আমাদের পোস্ট কারও কব্জায় নেই, কেউ সীমানা অতিক্রম করে আমাদের ভূখণ্ডে প্রবেশ করেনি। এটা আমাদের সেনাদের প্রতি চরম অপমান। এর ফলে দু’দেশের সামরিক স্তরে আলোচনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০২০ সালের মে মাস থেকে এখনও চিন আমাদের ২ হাজার বর্গ কিলোমিটার জমি দখল করে রয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, “লাদাখে যে চিনের সেনা আমাদের ভূখণ্ড দখল করে রয়েছে, তাদের সঙ্গেই যৌথ সামরিক মহড়ার (রাশিয়ায়) অনুমতি দিয়েছিলেন মোদী।” কংগ্রেস নেতার বক্তব্য, “আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত ২০১৮ সালে শপথ করেছিলেন, আরএসএস তাদের বাহিনী তৈরি করবে তিন দিনের মধ্যে, যারা সীমান্তে চিনের সঙ্গে লড়াই করবে। তার কোনও নামগন্ধ নেই। উল্টে আমরা দেখছি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে নাগপুরে আরএসএস-র সদর কার্যালয়ে চিনের কূটনীতিকদের বরণ করা হচ্ছে।”