কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতারা মনে করছেন, ভোটের প্রচারে বিজেপির সঙ্গে সমানে সমানে লড়তে না পারার পিছনে অর্থের অভাবও একটা বড় কারণ।
শুধু ভোটের বাক্সে নয়। টান পড়েছে সিন্দুকেও। গোটা দেশে মাত্র কয়েকটি রাজ্যে ক্ষমতায় থাকার ফলে কংগ্রেসের আয় বিশেষ হচ্ছে না। নিরুপায় কংগ্রেস হাই কমান্ড এখন শিল্পপতি, ব্যবসায়ীদের থেকে আর্থিক সাহায্য চাইতে দলের কিছু নেতাকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়ার কথা ভাবছে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, মুম্বইয়ের নেতা মিলিন্দ দেওরার নেতৃত্বে পাঁচজনের একটি গোষ্ঠী তৈরি করা হতে পারে। এর কাজ হবে নির্বাচনে লড়াইয়ের জন্য অর্থ জোগাড় করা। শিল্পমহলের সঙ্গে নতুন করে সুসম্পর্ক তৈরি করা। কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতারা মনে করছেন, ভোটের প্রচারে বিজেপির সঙ্গে সমানে সমানে লড়তে না পারার পিছনে অর্থের অভাবও একটা বড় কারণ।
এক সময় আহমেদ পটেল গান্ধী পরিবারের হয়ে শিল্পমহল, ব্যবসায়ী জগতের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতেন। রাহুল গান্ধীর জমানায় তাঁকে কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষও করা হয়েছিল। কিন্তু আচমকা কোভিডে সনিয়া গান্ধীর বিশ্বস্ত সৈনিকের মৃত্যুর পরে পবন বনসলকে কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বনসলের সঙ্গে মুম্বইয়ের শিল্পজগতের তেমন সম্পর্ক নেই। এই কারণেই মুম্বইয়ের কংগ্রেস নেতা মিলিন্দকে মাঠে নামানোর কথা ভাবা হয়েছে। মিলিন্দ প্রয়াত কংগ্রেস নেতা মুরলী দেওরার পুত্র। খাস মুম্বইয়ের বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে তাঁর সঙ্গে অধিকাংশ প্রথম সারির শিল্পপতির ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে।
গত লোকসভা ভোটের বছর, ২০১৯-২০-তে কংগ্রেসের আয় ছিল ৬৮২ কোটি টাকা। আর বিজেপির আয় ছিল প্রায় ৩,৬২৩ কোটি টাকা, কংগ্রেসের আয়ের তুলনায় যা পাঁচ গুণেরও বেশি। ভোটের আগের বছরের তুলনায় বিজেপির আয় ৫০% বেড়েছিল। অথচ কংগ্রেসের আয় আগের বছরের তুলনায় চার ভাগের এক ভাগ কমে যায়। ভোটের বছরে নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে চাঁদার চার ভাগের তিন ভাগই বিজেপির কোষাগারে জমা পড়েছিল। ১০০ টাকার মধ্যে মাত্র ৯ টাকা পেয়েছিল কংগ্রেস। আয় কমে যাওয়ার ফলে কংগ্রেসের কোষাধ্যক্ষ পবন বনসলকে খরচেও রাশ টানতে হয়েছে। এআইসিসি-র সচিবদের যত বেশি সম্ভব ট্রেনে যাতায়াত করতে বলা হয়েছে। অফিসের খরচেও রাশ টানতে বলা হয়েছে। কংগ্রেসের এক নেতার বক্তব্য, দলের শীর্ষনেতৃত্ব যে ভাবে প্রথম সারির কিছু শিল্পপতিকে টানা আক্রমণ করছেন, শিল্পমহলের থেকে আর্থিক সাহায্য চাইতে যাওয়ার পরে তাতে বদল আসে কি না, তা-ও দেখার।