গত শনিবার থেকেই অমৃতপালকে ধরতে অভিযান শুরু হয়েছিল। ফাইল ছবি।
শনিবার থেকে পলাতক খলিস্তানপন্থী নেতা অমৃতপাল সিংহ। পঞ্জাব পুলিশ আজ তাঁর বিরুদ্ধে জামিনঅযোগ্য ধারায় অভিযোগ দায়ের করেছে। একই সঙ্গে অমৃতপালের বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় তাঁর নামে লুক আউট নোটিস জারি করা হয়েছে। কিন্তু পাঁচ দিন পরেও যে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় বাহিনী অমৃতপালকে ধরতে পারেনি, তার পিছনে চক্রান্ত থাকতে পারে বলে দাবি পঞ্জাবের কংগ্রেস সভাপতি অমরিন্দর সিংহ রাজার।
গত শনিবার থেকেই অমৃতপালকে ধরতে অভিযান শুরু হয়েছিল। সে সময়ে প্রথমে তিনি মার্সিডিজ় গাড়িতে করে পালিয়ে যান বলে জানা যায়। পরে মঙ্গলবার সকালে জালন্ধরের কাছে একটি টোল ট্যাক্সের লাইনে অন্য একটি গাড়িতে দেখা যায় তাঁকে। আজ পঞ্জাব পুলিশ জানিয়েছে, পুলিশ গাড়িটি খুঁজছে জানতে পেরে জালন্ধরের নাঙ্গাল অ্যামবিয়ান গুরুদ্বারে আত্মগোপন করেন অমৃতপাল। গুরুদ্বারের গ্রন্থী পরে পুলিশকে জানান, অমৃতপাল বন্দুক দেখিয়ে ওই গ্রন্থীর ছেলের জামা-কাপড়, জুতো ছিনিয়ে নেন। প্রায় পঁয়তাল্লিশ মিনিট সেখানে থাকার পরে স্থানীয় এক ব্যক্তি মোটরবাইক নিয়ে এলে সঙ্গী পাপলপ্রীত সিংহের সঙ্গে বাইকে করে চলে যান অমৃতপাল।
মঙ্গলবার বিকেলে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ছবিটি সামনে এসেছিল, তাতে পাপলপ্রীতকে বাইক চালাতে দেখা গিয়েছে। পিছনে অমৃতপাল। সেই বাইকটি উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, পাপলপ্রীত পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের এজেন্ট হিসেবে দীর্ঘ সময় ধরে পঞ্জাবে সক্রিয়। অমৃতপালের উত্থানের পিছনে মূল মাথা হিসেবে গোয়েন্দারা তাকেই চিহ্নিত করেছেন। মূলত তার নির্দেশেই স্থানীয় সমাজবিরোধী ‘মন্না-দীপা’ নামে পরিচিত মনপ্রীত ও গুরদীপ সিংহ বাইকের ব্যবস্থা করেছিল। পুলিশের দাবি, পাপলপ্রীতের নির্দেশেই গুরুদ্বারে নিজের পোশাক পাল্টে মোটরবাইকে চড়েন অমৃতপাল। আজ অমৃতপালের স্ত্রী কিরণদীপ ও মা বলবিন্দর সিংহকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। স্বরাষ্ট্র সূত্র জানিয়েছে, পাকিস্তানে বসবাসকারী খলিস্তানপন্থী নেতা হরবিন্দর সিংহ রিন্ডাকে সম্প্রতি জঙ্গি হিসেবে চিহ্নিত করেছে দিল্লি। রিন্ডার সঙ্গে যোগ ছিল অমৃতপালের।
কিন্তু পুলিশের কাছে খবর থাকা সত্ত্বেও কেন বারবার শেষ মুহূর্তে অমৃতপাল পালিয়ে যাচ্ছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। প্রদেশ সভাপতি অমরিন্দর আজ বলেন, ‘‘প্রথম দিনেই পুলিশের উপস্থিতি সত্ত্বেও কী ভাবে অমৃতপাল পালিয়ে গেলেন? এর অর্থ, তিনি পুলিশের গতিবিধি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন। পঞ্জাব পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। এর পিছনে নিশ্চয় কোনও চক্রান্ত রয়েছে। যারা খলিস্তানপন্থীদের সমর্থনে সরব, তাদের গ্রেফতার করতে না পেরে নিরপরাধদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।’’ গত কয়েক দিনে দেড়শোর বেশি যুবককে অমৃতপালের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। যাঁদের বিনামূল্যে আইনি সাহায্য দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে শিরোমণি অকালি দল।
এ দিকে অমৃতপালের কাকা হরজিৎ সিংহ-সহ তিন সহযোগীকে অসমের ডিব্রুগড় কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে গিয়েছে পঞ্জাব পুলিশ। ডিব্রুগড় জেলে খলিস্তানি বন্দি বেড়ে হয়েছে ৭।