কংগ্রেসের দাবি, বিদেশযাত্রা বাতিল করে সিভিসি-র বৈঠক ডাকেন কে ভি চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।
যে দিন রাতে সিবিআই প্রধান অলোক বর্মাকে ছুটিতে পাঠানো হয়, সেই ২৩ অক্টোবর বিকেলে ডেনমার্ক যাওয়ার কথা ছিল সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশন (সিভিসি)-এর প্রধান কে ভি চৌধুরীর। কিন্তু আচমকাই তিনি যাত্রা বাতিল করেন। আজ এই দাবি করে কংগ্রেসের অভিযোগ, শাসক শিবিরের নানা দুর্নীতি নিয়ে বর্মা নাড়াচাড়া করছেন, এমন কথা জানতে পেরে তড়িঘড়ি যে তাঁকে সরানো হয়, এই ঘটনাই তার প্রমাণ।
কংগ্রেসের দাবি, বিদেশযাত্রা বাতিল করে সিভিসি-র বৈঠক ডাকেন চৌধুরী। বৈঠক শুরু হয় রাত সাড়ে আটটায়। চলে চার ঘণ্টা। সেখানেই অলোক বর্মার হাত থেকে যাবতীয় দায়িত্ব কেড়ে নিয়ে তাঁকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
কংগ্রেসের আরও দাবি, কমিশনের বৈঠক চলাকালীনই রাত এগারোটায় সিবিআই দফতরে পৌঁছে যান সংস্থার যুগ্ম অধিকর্তা এম নাগেশ্বর রাও। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই যাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় যাবতীয় ক্ষমতা। রাত সাড়ে এগারোটায় বিশেষ অভিযানে যেতে হবে বলে অধস্তনদের বার্তা পাঠান দিল্লির পুলিশ কমিশনার। ঠিক হয় খান মার্কেটে জড়ো হবেন সকলে।
কংগ্রেসের বিবৃতি বলছে, রাত বারোটায় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল পুলিশ কমিশনারকে ফোন করে সিবিআই ভবনের দখল নিতে বলেন। বাধা দেয় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ। তখন কমিশনার কথা বলেন সিআইএসএফ কর্তার সঙ্গে। ডোভাল ও প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় থেকেও ফোন যায় সিআইএসএফ প্রধানের কাছে। তার পর সিবিআই দফতরে ঢোকে পুলিশ।
আরও পড়ুন: সিবিআই ‘প্রধান’ অলোক বর্মা-কাণ্ডে জুড়লেন অমিত-পুত্র
কমিটির বৈঠকে সিভিসি-র সুপারিশ মেনে বর্মাকে ছুটিতে পাঠানো ও নাগেশ্বরকে অন্তর্বর্তিকালীন প্রধান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই আদেশনামা নিয়ে কর্মিবর্গ মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব লোকরঞ্জন পৌঁছন সিবিআই দফতরে। দায়িত্ব নেন নাগেশ্বর। কংগ্রেসের দাবি, রাত আড়াইটে নাগাদ বেশ কিছু ফাইল নিয়ে বেরিয়ে আসেন নাগেশ্বর। একই সময়ে ছুটিতে যাওয়ার নির্দেশ জানিয়ে দেওয়া হয় অলোক বর্মাকে।কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালার বক্তব্য, অলোক বর্মার সঙ্গে রাকেশ আস্থানার গোলমাল চলছিল গত এক বছর ধরে। তা হলে বর্মাকে সরানোর কী এমন তাড়া পড়ল যে বিদেশযাত্রা বাতিল করে সিভিসি প্রধানকে বৈঠকে বসতে হল? তাঁর আরও প্রশ্ন, কেন কর্মিবর্গ মন্ত্রকের সচিব রাত একটা পর্যন্ত দফতরে বসে ছিলেন। তিনি কি তা হলে জানতেন যে সিভিসি-র সুপারিশ আসছে? নাম চূড়ান্ত হওয়ার আগে নাগেশ্বর রাওই বা কেন সিবিআই দফতরে পৌঁছে যান? তা হলে তিনিও কি জানতেন যে তাঁকেই পরবর্তী প্রধান করা হবে? বিষয়টি বিচারাধীন এই যুক্তিতে কংগ্রেসের অভিযোগের জবাব দিতে অস্বীকার করেছে বিজেপি।
এ দিকে রাত সাড়ে বারোটায় সিভিসির সুপারিশ এসে পৌঁছয় নর্থ ব্লকে। কংগ্রেসের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের নির্দেশ মেনে যার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন কর্মিবর্গ মন্ত্রকের সচিব সি চন্দ্রমৌলি। সুপারিশ হাতে পেয়েই পিএমও-তে দৌড়ন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বৈঠকে বসে মন্ত্রিসভার নিয়োগ কমিটি।