মল্লিকার্জুন খড়্গে। ফাইল চিত্র।
কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম প্রস্তাব করেননি সনিয়া গান্ধী। দলের অন্তর্বর্তী কালীন সভাপতি হিসেবে তাঁকে সমর্থন জানানোর কোনও প্রতিশ্রুতিও দেননি তিনি। সমস্ত বিষয়টিকেই ‘গুজব’ বলে উড়িয়ে দিলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে।
মঙ্গলবার গুয়াহাটিতে গিয়েছিলেন খড়্গে। সেখানে তিনি বলেন, “একটা গুজব রটেছে যে, সনিয়া দলের সভাপতি হিসাবে আমার নাম প্রস্তাব করেছেন। আমি কখনও এমন কোনও দাবি করিনি। তিনি (সনিয়া) আমায় স্পষ্ট জানিয়েছিলেন যে, গান্ধী পরিবারের কেউ সভাপতি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না এবং কোনও প্রার্থীকে সমর্থন করবেন না।” দলের ভাবমূর্তিকে খারাপ করতেই কেউ কেউ গুজব ছড়াচ্ছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
কংগ্রেসের একটি সূত্রের মতে, অসমের দলীয় নেতাদের কাছে ভোটের আবেদন জানাতে গিয়ে এর আগে মল্লিকার্জুন খড়্গে দাবি করেছিলেন যে, স্বয়ং সনিয়া গান্ধীর ‘ইচ্ছাতেই’ কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে লড়তে নেমেছেন তিনি। খড়্গে দাবি করেন, তিনি সনিয়ার কাছে কংগ্রেস সভাপতি পদের জন্য দু’তিনটি নাম দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সনিয়া তাঁকে বলেন, অন্য কারও নাম নয়। তিনি খড়্গেকেই চান! শুধু সনিয়া নন, গোটা গান্ধী পরিবারের ‘হাত’ এই প্রবীণ রাজনীতিকের মাথাতেই রয়েছে বলেই বার্তা রটে যায় কংগ্রেসের অন্দরে।
সভাপতি নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যায় গত রবিবার খড়্গে বলেছিলেন, “আমি লড়াই করতে চাইছি, কারণ দেশের পরিস্থিতি খারাপ। নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ যে ধরনের রাজনীতি করছেন, তাতে দেশে গণতন্ত্রের কোনও জায়গা থাকছে না। এ সব কিছুর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আমার ক্ষমতা দরকার।”
প্রসঙ্গত, শতাব্দীপ্রাচীন দলের সভাপতি নির্বাচনে খড়্গের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শশী তারুর। তারুর কিছু দিন আগেই খড়্গেকে ‘পিতামহ ভীষ্ম’ বলে সম্বোধন করেছিলেন। তারুরের কথায় প্রাথমিক ভাবে সম্ভ্রম এবং সৌহার্দ্যের ভাব দেখা গেলেও, পরে দলেরই একাংশ বলতে থাকেন, তারুর আসলে দলের ‘বয়স্কতন্ত্র’কে আক্রমণ করতে চেয়েছেন। তারুর-শিবিরের বক্তব্য, নতুন প্রজন্মের মধ্যে তাঁর একটা স্বতন্ত্র পরিচিতি এবং গ্রহণযোগ্যতা আছে। তাঁদের অভিযোগ, দলের প্রাচীনপন্থী নেতারা তাই খড়্গেকে দিয়ে তারুরের যাত্রাভঙ্গ করতে চাইছেন।
এর আগে দিগ্বিজয় সিংহ দলের সভাপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছিলেন। জানিয়েছিলেন দলের ‘প্রবীণ এবং সম্মাননীয়’ নেতা খড়্গেকেই তিনি সমর্থন জানাবেন। তারও আগে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতও মরুরাজ্যে ডামাডোলের জন্য সনিয়ার কাছে ক্ষমা চেয়ে সভাপতি নির্বাচন থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। সব কিছু ঠিক ভাবে চললে আগামী ১৭ অক্টোবর কংগ্রেসের সভাপতি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে খড়্গে এবং তারুরের মধ্যে। দলের ৯ হাজার ৩০০ জন প্রতিনিধি দু’জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করবেন। ১৯ অক্টোবর জানা যাবে, কে হবেন কংগ্রেসের নতুন সভাপতি। তবে তারুর বা খড়্গে, যিনিই সভাপতি হোন না কেন, ২৫ বছর পর এই প্রথম গান্ধী পরিবারের বাইরের কেউ দলের হাল ধরবেন বলে মনে করা হচ্ছে।