প্রয়োজনে ফের ভাষার জন্য আত্মবলিদানে প্রস্তুত বরাক— রাজেন গৌঁহাইয়ের বিরুদ্ধে আজ করিমগঞ্জে প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হয়ে এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন কাছাড়ের কংগ্রেস সাংসদ সুস্মিতা দেব।
রাজ্যে অসমিয়া ছাড়া অন্য কোনও সরকারি ভাষা থাকা উচিত নয় বলে কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী তথা নগাঁওয়ের সাংসদ রাজেনবাবুর মন্তব্যের জেরে ক্ষোভে ফুঁসছেন বরাকবাসী। কাছাড়ে বন্ধ পালনের পর এ দিন করিমগঞ্জে মহামিছিলের ডাক দিয়েছিল কংগ্রেস। বিক্ষোভ মিছিলে জেলার দুই কংগ্রেস বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ, জামালউদ্দিন আহমেদ ছাড়াও যোগ দেন শিলচরের সাংসদ সুস্মিতা দেব।
রাজেনবাবুর বিরুদ্ধে ‘মুর্দাবাদ’ স্লোগান দেন সুস্মিতাদেবী। গলা মেলান বিক্ষোভ মিছিলে সামিল কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা। কাছাড়ের সাংসদ বলেন, ‘‘বরাকের ইতিহাস না জেনেই মন্তব্য করছেন রাজেনবাবু। ডিমাসা আমল থেকেই বরাকে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠিত। ইংরেজ আমলেও তা বদলায়নি।’’ সাংসদের আক্ষেপ, ১৯৬১ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় বরাকের বিধায়করা ইস্তফা দিয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমানে উপত্যকার বিজেপি বিধায়করা মন্ত্রিপদে থাকার জন্য নিজের মাতৃভাষার সম্মান রাখতে পারছেন না। রাজেনবাবুর মন্তব্যের প্রতিবাদও করছেন না কেউ। সুস্মিতাদেবীর কথায়, ‘‘বাঙালিরা কখনও অন্য ভাষার প্রতি বিদ্বেষমূলক ভাবপোষণ করেন না। কিন্তু বরাক থেকে বাংলাভাষা সরানোর চেষ্টা হলে তার ফলাফল ভাল হবে না।’’
কংগ্রেস সাংসদের হুঁশিয়ারি, অসম থেকে বড়োরা আলাদা হতে চাইছে। ভাষার আগ্রাসন বন্ধ করা না হলে ভবিষ্যতে বরাকের বাঙালিরাও পৃথক হওয়ার দাবি তুলতে পারেন। বিজেপিকে আগুন নিয়ে খেলা করতেও তিনি নিষেধ করেন। সুস্মিতাদেবীর কথায়, ‘‘নিজের মাতৃভাষাকে সুরক্ষিত করতে না পারলে অসমের বাঙালিরা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে যাবেন। সরকারি জায়গায় বাংলায় কথা বলার অধিকার হারাবেন। হারিয়ে ফেলবেন রাজনৈতিক ক্ষমতাও।’’ সে দিকে তাকিয়ে বরাকের মানুষকে একজোট হয়ে বাংলাকে রক্ষা করার আহ্বান জানান সাংসদ।
বিক্ষোভ মিছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী সিদ্দেক আহমেদ বিজেপি সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘‘বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশে অস্থির পরিবেশ তৈরি হয়েছে।’’ প্রতিবাদ মিছিলে প্রাক্তন সংসদীয় সচিব মণিলাল গোয়ালাও উপস্থিত ছিলেন।