কমল নাথ। —ফাইল চিত্র।
জল্পনাকে সত্যি করে কমল নাথ শেষমেশ বিজেপিতে গেলে রাজনৈতিক ক্ষতি তো বটেই, অর্থনৈতিক ক্ষতিরও সম্মুখীন হতে পারে কংগ্রেস। কংগ্রেসের অন্দরেই এই নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অন্য দিকে, কমল নাথকে দলে নিয়ে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক— দুই অস্ত্রেই কংগ্রেসকে ঘায়েল করতে চাইছে বিজেপিও।
কংগ্রেস সূত্রে খবর, দীর্ঘ দিন ধরেই দলের তহবিল সংগ্রহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতেন কমল। দলের তরফে মুম্বই-সহ গোটা দেশের শিল্পমহলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলতেন। প্রায় দশ বছর আগে কেন্দ্রে ক্ষমতা হারানোর পর রাজনৈতিক প্রভাব হ্রাস পায় কংগ্রেসের। টান পড়ে ভাঁড়ারেও। বিভিন্ন পরিসংখ্যানেই দেখা গিয়েছে, কর্পোরেট অনুদান পাওয়ার ক্ষেত্রে কংগ্রেসের তুলনায় কয়েক গুণ এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে কমল নাথ বিজেপিতে যোগ দিলে কংগ্রেসের সঙ্গে শিল্পমহলের যোগাযোগের শেষ সুতোটিও ছিঁড়ে যেতে পারে বলে মনে করছে ওই সূত্রটি।
মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের ভিতরেই সর্বদা তিন-চারটি গোষ্ঠী সক্রিয় থেকেছে। বিজেপির একাংশের মতে, সব ক’টি গোষ্ঠীর অস্তিত্বই এখন প্রশ্নের মুখে। রীতিমতো উদাহরণ দিয়ে সে রাজ্যের বিজেপি নেতাদের দাবি, অর্জুন সিংহ মারা যাওয়ার পর দলে তার গোষ্ঠীর তেমন কোনও প্রভাব নেই। নানা কারণে গুরুত্ব হারিয়েছেন দিগ্বিজয় সিংহও। অনুগামীদের নিয়ে নিজেদের গোষ্ঠীকে সক্রিয় রেখেছিলেন কমল এবং জ্যোতিরাদিত্য শিন্ডে। এর মধ্যে জ্যোতিরাদিত্য ২০২০ সালেই কমল নাথের সঙ্গে মতান্তরের জেরে সরকার এবং দল ছাড়েন। যোগ দেন বিজেপিতে। কমলও বিজেপিতে যোগ দিলে কংগ্রেসকে ধাক্কা দেওয়া যাবে বলে আশাবাদী পদ্মশিবির।
তবে লোকসভা ভোটের আগে মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকেও কংগ্রেসকে চাপে ফেলতে চাইছে বিজেপি। এক সপ্তাহও হয়নি কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক চহ্বাণ। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। খানিক আকস্মিক ভাবেই কংগ্রেসের প্রাথমিক সদস্যপদ ছাড়েন তিনি। পদত্যাগ করেন বিধায়কপদ থেকেও। এ বার যদি কমলও বিজেপিতে যোগ দেন, তবে বিজেপির পক্ষে এই বার্তা দেওয়া সহজ হবে যে, সাধারণ কর্মীদের ধরে রাখা দূরস্থান, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীদেরও দলে রাখতে পারছে না কংগ্রেস। লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেসের অন্দরে তো বটেই, দেশবাসীর কাছেও নিজেদের শক্তির পরিচয় দিতে চাইছে বিজেপি।