—ফাইল চিত্র।
তিনি কংগ্রেসের সভাপতি পদ ছেড়েছেন। কংগ্রেস নেতারা তাঁকে ফের সভাপতির দায়িত্ব নিতে হবে বলে বারবার দাবি তুললেও রাহুল গাঁধী এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে সাড়া দেননি। কিন্তু বিহারের নির্বাচনের রণকৌশল নিয়ে আজ রাহুলই ওই রাজ্যের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন।
রাজ্য স্তরের নেতা থেকে ব্লক কংগ্রেস কমিটি পর্যন্ত হাজারখানেক নেতার সঙ্গে বৈঠক করে রাহুল আজ জানিয়েছেন, কংগ্রেস ইতিবাচক কর্মসূচি নিয়ে ভোটে নামবে। কোভিড অতিমারির পরে বিহারের ভোটই প্রথম বিধানসভা ভোট হতে চলেছে। বৈঠকে রাহুল জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের আরও একটি বড় তুফান আসতে চলেছে। অর্থনৈতিক সঙ্কট, অতিমারির বিপদ কত গভীরে, আগামী ছয় মাসের মধ্যে তা বোঝা যাবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত নির্বাচনে যে সমস্ত প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা সবই ভুল প্রমাণিত হয়েছে। কংগ্রেস বিকল্প নীতি নিয়ে ইতিবাচক প্রচারে নামবে। শরিকদের সঙ্গে মিলে কংগ্রেস জোট সরকার গড়বে বলেও দাবি করেন রাহুল। তাঁর মতে,
বিহারই রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সূচনা করবে।
বিহারের এই বৈঠকেও আজ ফের দাবি উঠেছে, রাহুল সভাপতির দায়িত্ব নিন। অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকে গত সপ্তাহেও দিল্লির হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। আজ বিহার নিয়ে বৈঠকে কংগ্রেসের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল, বিহারের ভারপ্রাপ্ত নেতা শক্তিসিন গোহিল, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মদনমোহন ঝা বলেন, বিহার-সহ গোটা দেশের কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের আবেগকে সম্মান জানিয়ে রাহুলের সভাপতির পদ গ্রহণ করা উচিত।
কংগ্রেসের নেতারা বলছেন, দলের শীর্ষ স্তরে নেতৃত্বের শূন্যতার ফলে রাজ্য স্তরেও অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসছে। মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানের পরে এ বার কংগ্রেস-শাসিত রাজ্য পঞ্জাবের দুই কংগ্রেস সাংসদ প্রতাপ সিংহ বাজওয়া ও শামশের সিংহ দুলো বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহ ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুনীল জাখরের দিকে আঙুল তুলেছেন তাঁরা। পঞ্জাবে বিষাক্ত মদে মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে ওই দুই সাংসদ নিজেদের দলের সরকারের বিরুদ্ধেই অভিযোগ জানিয়ে পঞ্জাবের রাজ্যপালকে চিঠি দিয়েছিলেন। ক্যাপ্টেন ও জাখরের বিরুদ্ধে খোলা চিঠিতে তাঁরা লিখেছেন, ‘‘উদ্যান নষ্ট করার জন্য একটি
পেঁচাই যথেষ্ট। এখানে ডালে ডালে পেঁচা বসে রয়েছে।’’
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জাখর আগেই বলেছিলেন, তিনি সনিয়ার কাছে দুই সাংসদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাবেন।
আজ পঞ্জাবের মন্ত্রিসভা ওই দুই রাজ্যসভা সাংসদকে অবিলম্বে দল-বিরোধী কাজের জন্য বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে প্রস্তাব নিয়েছে। কংগ্রেসের অনেক নেতারই মত হল, শুধু বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিলে চলবে না। অবিলম্বে
ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডেকে সভাপতি পদের বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। একই সঙ্গে, বিভিন্ন বিষয়ে কংগ্রেসের অবস্থান নিয়ে আলোচনা করতে হবে। রামমন্দির প্রসঙ্গে কংগ্রেসের অবস্থান জানিয়ে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা বিবৃতি দিয়েছিলেন।
এই নেতাদের মতে, এ সব
ক্ষেত্রেও আগে আলোচনা করা দরকার। না-হলে দেখা যাচ্ছে, মুষ্টিমেয় নেতারাই দলীয় অবস্থানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। প্রিয়ঙ্কার বক্তব্য নিয়ে এই নেতাদের মধ্যে তেমন দ্বিমত নেই। কিন্তু আগে আলোচনা হোক, এটাই তাঁরা চাইছেন।