—প্রতীকী চিত্র।
আবারও তরী ডুবেছে তীরে এসে। একেবারে মধ্যপ্রদেশের মতোই হরিয়ানাতেও জেতা ম্যাচ হাতছাড়া হয়েছে কংগ্রেসের।
বিজেপির টানা ১০ বছরের শাসনের বিরুদ্ধে জনমানসে তৈরি ক্ষোভ, কৃষক-বিক্ষোভ, অগ্নিবীর নিয়ে বিক্ষোভ, মহিলা কুস্তিগীরদের যৌন হেনস্থার মতো বিষয় হাতে থাকা এবং সরকারে এলে চাকরি, মহিলাদের আর্থিক সুবিধার মতো একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতির পরেও হরিয়ানায় বাজিমাত করেছে বিজেপি। বিধানসভা ভোটের ফলে এই ভরাডুবির পিছনে রাজ্য নেতাদের, বিশেষ করে ভূপেন্দ্র হুডা, কুমারী শৈলজা এবং রণদীপ সুরজেওয়ালার মতো নেতাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে কংগ্রেসের অন্দরে। এ বারে হরিয়ানায় ‘অপ্রত্যাশিত’ হার নিয়ে পর্যালোচনা করতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের বাড়িতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বৈঠকে বসলেন দলের শীর্ষ নেতারা। টিকিট বণ্টন থেকে শুরু করে প্রচারপর্বের মূল মুখ, এমনকি বুথফেরত সমীক্ষার ফলের পরেও যাঁকে মুখ্যমন্ত্রী মুখ হিসেবে ভাবা হচ্ছিল, সেই ভূপেন্দ্র হুডা তো বটেই, তাঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী কুমারী শৈলজাকেও সেই বৈঠকে ডাকাই হল না। সূত্রের খবর, বৈঠকে ডাক পাননি সুরজেওয়ালাও। রাহুল গান্ধীর উপস্থিতিতে বৈঠকে যোগ দেন এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল, রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত, অজয় মাকেন-সহ নেতারা। দলের তরফে হরিয়ানার ভারপ্রাপ্ত দীপক বাবারিয়া বৈঠকে যোগ দেন ভার্চুয়াল মাধ্যমে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বৃহস্পতিবার বিকেলেই রাহুল গান্ধী এক্স-হ্যান্ডলে হরিয়ানার নেতাদের নাম পর্যন্ত উল্লেখ না করে লেখেন, ‘‘হরিয়ানায় অপ্রত্যাশিত ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখছি আমরা। বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্র থেকে যে অভিযোগ পেয়েছি, তা নির্বাচন কমিশনকে জানানো হবে। হরিয়ানার মানুষকে ধন্যবাদ তাঁদের সমর্থনের জন্য। ধন্যবাদ আমাদের কর্মীদের, যাঁরা নিরলস পরিশ্রম করেছেন। অধিকারের জন্য, সত্যের জন্য লড়াই জারি থাকবে।”
হুডা-শিবিরের সঙ্গে শৈলজা-সুরজেওয়ালাদের বিরোধের জেরে প্রথম দিকে প্রচারে না বেরিয়ে কার্যত ঘরে বসেছিলেন শৈলজা। সে সময় বিজেপি তাঁকে পদ্ম-শিবিরে যোগ দেওয়ার ডাক দিয়ে কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়ায়। হরিয়ানার দলিত নেত্রী হিসেবে তাঁর এই ভূমিকায় চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ দল। পাশাপাশি জাঠ নেতা হুডার উপরে অতিরিক্ত নির্ভরতাও যে বিপদ ডেকেছে, তা বুঝতে পারছেন নেতারা। একই সঙ্গে দলের বিধায়কদের উপরেও একটু বেশিই ভরসা করেছিল কংগ্রেস। জনতার ক্ষোভের ধাক্কায় বিজেপি বহু এলাকায় প্রচারেই যেতে পারেনি। উল্টো দিকে অতি-আত্মবিশ্বাসী কংগ্রেস নিজেদের প্রতিশ্রুতিগুলো সাধারণ মানুষএর কাছে পৌঁছে দিতে পারেনি। তা থেকে গিয়েছে কাগজেকলমেই। যার জেরে এই হার বলে মেনে নিচ্ছএন নেতারা।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে রাহুল হরিয়ানার নেতাদের ভূমিকা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সেখানকার বেশ কিছু নেতাকে যে দল এ বারে গুরুত্বহীন করে দেবে, সে রকম ইঙ্গিতও মিলেছে বলে জানা গিয়েছে।