শশী তারুর। ফাইল চিত্র।
ব্রিটেন ভারতীয় বংশোদ্ভূতকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিচ্ছে। ভারত কি এই সহিষ্ণুতা দেখাতে পারবে! ঋষি সুনক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসার আগেই এ দেশের রাজনীতিতে এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়ে গেল।
ব্রিটিশ রাজত্ব থেকে দেশ স্বাধীন হওয়ার পঁচাত্তর বছর পূর্তি উৎসবের মধ্যেই প্রথম কোনও ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন। তা নিয়ে অনেকেই আহ্লাদিত। একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, ভারতে কি এমনটা হওয়া সম্ভব? বিদেশি বংশোদ্ভূত কাউকে মেনে নেওয়া তো পরের কথা, মোদী জমানায় যে ভাবে লোকসভা বা রাজ্যসভায় বিজেপির মুসলিম সাংসদ সংখ্যাই শূন্যে এসে নেমেছে, তার পরে সরকারের শীর্ষপদে কোনও সংখ্যালঘুকে মেনে নেওয়ার সম্ভাবনাই রয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
আজ কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর মন্তব্য করেছেন, “যদি ঋষি সুনক ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হন, তা হলে আমার মনে হয়, আমাদের সকলকেই মানতে হবে যে ব্রিটিশরা গোটা বিশ্বে খুবই বিরল কাজ করেছেন। দেশের সব থেকে ক্ষমতাশালী পদে এক জন দৃশ্যত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে বসিয়েছেন। ঋষি সুনকের কৃতিত্বে আমরা ভারতীয় হিসেবে আনন্দ করছি। সৎ ভাবে জিজ্ঞাসা করা যায়, এখানে কি এমন হতে পারে?”
রাজনীতিকরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এ দেশে সনিয়া গান্ধীই বিদেশি বলে তাঁর প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণের বিরোধিতা হয়েছিল। শুধু বিজেপি নয়, কংগ্রেসের মধ্যেও এর বিরোধিতা হয়েছিল। তবে ইউপিএ জমানায় সংখ্যালঘু শিখ সম্প্রদায়ের মনমোহন সিংহ প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মুখে রামের পথে হেঁটে সবাইকে নিয়ে চলার কথা বলেন। কিন্তু বিজেপি আমলে লোকসভা হোক বা উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা, কোনও মুসলিমকে প্রার্থী করেনি বিজেপি। এখন রাজ্যসভাতেও কোনও মুসলিম বিজেপি সাংসদ নেই। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র টুইটারে লিখেছেন, “আমার দ্বিতীয় প্রিয় দেশ ব্রিটেনের জন্য গর্বিত যে তারা এক জন ব্রিটিশ এশীয়কে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে বসিয়েছে। ভারত আরও সহিষ্ণু হোক। সমস্ত ধর্ম, সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষকে গ্রহণ করা হোক।”
ঋষি সুনক ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তির জামাতা। কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি মজা করে বলেছেন, “নারায়ণ মূর্তি ও সুধা ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে গিয়ে উঠলে ওই বাড়িটাকে তিন মূর্তি ভবন বলেও ডাকা যেতে পারে।”