কংগ্রেসের দাবি, সংসদে আদানি-কাণ্ড থেকে নজর ঘোরাতে বিজেপি রাহুলের বিরুদ্ধে দেশবিরোধী কথা বলার অভিযোগ তুলে তাঁর ক্ষমাপ্রার্থনা দাবি করছে। —ফাইল চিত্র।
বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সভাপতিত্বে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে, লন্ডনে করা বিতর্কিত মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন রাহুল গান্ধী। কংগ্রেস সাংসদের বক্তব্য, গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তোলা মানেই দেশবিরোধিতা নয়। শনিবার জি২০ সংক্রান্ত কমিটির ওই বৈঠক বেশ কিছু ক্ষণের জন্য উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কংগ্রেস এবং বিজেপি সাংসদদের তর্কবিতর্কে।
কিছু দিন আগে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে রাহুল বলেছিলেন, ‘‘ভারতে গণতন্ত্র এবং বিরোধী স্বরকে দমন করা হচ্ছে। ভারতের গণতন্ত্র বিপদের মুখে। বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে এমন এমন ঘটনায় মামলা হয়, যা আদৌ করা যায় না।’’ নিজের উদাহরণ তুলে ধরে রাহুল বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে।’’
রাহুল বিদেশে গিয়ে দেশ ও সংসদের অপমান করেছেন বলে এর পরই অভিযোগ তোলে বিজেপি। সংসদেও এই নিয়ে চলছে হইচই। এক বিজেপি সাংসদ রাহুলের সাংসদ পদ বাতিলের দাবিও তুলেছেন।
সংসদের বিতর্ক, বিতণ্ডা শনিবার ঢুকে পড়ে জি২০ নিয়ে সংসদীয় কমিটির বৈঠকেও। বিদেশ মন্ত্রকের ওই প্যানেলের বৈঠকে রাহুল জানান, তিনি গণতন্ত্রের অবস্থার কথা তুলে ধরেছিলেন। এবং কোনও বিদেশি পদক্ষেপ ছাড়া ভারত নিজেই সেই সমস্যার সমাধান করবে বলেও জানিয়েছিলেন। এর পর আরও কিছু বলতে যান রাহুল। কিন্তু তাঁকে বাধা দেন বিজেপি সাংসদরা। তাঁরা দাবি করতে থাকেন— রাহুল যা-ই বলুন, তিনি দেশকে বিদেশের মাটিতে অসম্মান করে এসেছেন। কংগ্রেসের মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনতে যুক্তি দেন, ‘‘রাহুল গান্ধী লন্ডনে বলেছিলেন, দুর্বল গণতন্ত্র ভারতের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। এর সমাধান আমরা খুঁজব। এই কথাকে তো স্বাগত জানানো উচিত। ক্ষমা তো প্রধানমন্ত্রীর চাওয়া উচিত। যিনি বিদেশে গিয়ে দেশের অপমান করেছেন।’’ বৈঠকে ছিলেন বিদেশ প্রতিমন্ত্রী মুরলীধরন, বিজেপি সাংসদ জিভিএল নরসিংহ রাও, মহেশ জেঠমালানি, কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুররাও।
বিজেপি সূত্রে খবর, পরিস্থিতি অন্য দিকে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখে এগিয়ে আসেন প্যানেলের চেয়ারম্যান বিদেশমন্ত্রী স্বয়ং। জয়শঙ্কর রাহুলকে শুধু জি২০ বৈঠকের বিষয়েই মন্তব্য করতে অনুরোধ করেন। বিজেপি সাংসদদেরও তিনি বলেন এ সংক্রান্ত বিষয় সংসদেই আলোচনা করতে।