ফাইল চিত্র।
ক্ষমা চেয়েও রেহাই পাচ্ছেন না কর্নাটকের কংগ্রেস নেতা কে আর রমেশ কুমার। ধর্ষণ নিয়ে তাঁর বিতর্কিত মন্তব্যের আঁচ পৌঁছেছে সংসদে। কংগ্রেসের নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, সমাজবাদী পার্টির সাংসদ জয়া বচ্চন, প্রত্যেকেই রমেশের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন। নির্ভয়ার মা আশা দেবী বলেছেন, ‘‘এই ধরনের জনপ্রতিনিধি থাকা আমজনতার পক্ষে দুর্ভাগ্যজনক।’’
গত কাল কর্নাটক বিধানসভায় কৃষকদের সমস্যা নিয়ে বলতে চাইছিলেন অনেক বিধায়ক। স্পিকার বিশ্বেশ্বর হেগড়ে কাগেরি জানান, সকলকে বলতে দিলে তিনি অধিবেশন চালাবেন কী করে? প্রাক্তন স্পিকার রমেশের দিকে তাকিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি যখন পরিস্থিতি সামলাতে পারছি না, তখন যেমন চলছে, সেটাই উপভোগ করি।’’ রমেশ তখনই বলে বসেন, ‘‘ধর্ষণ যখন আটকানো যায় না, তখন তা উপভোগ করাই ভাল।’’ স্পিকার বা অন্য সদস্যেরা এই মন্তব্যের কোনও প্রতিবাদ না করে সমস্বরে হাসতে থাকেন।
আজ প্রিয়ঙ্কা টুইটারে লেখেন, ‘‘আমি অন্তর থেকে রমেশ কুমারের মন্তব্যের নিন্দা করছি। কেউ এই ধরনের কথা কী ভাবে উচ্চারণ করতে পারেন, তা ব্যাখ্যার অতীত। এর পক্ষে কোনও যুক্তি চলে না। ধর্ষণ একটি ঘৃণ্য অপরাধ। ফুল স্টপ।’’ প্রিয়ঙ্কা মুখ খোলার আগেই টুইটারে রমেশ লিখেছিলেন, ‘‘আমার মন্তব্যের জন্য সকলের কাছে আন্তরিক ভাবে ক্ষমা চাইছি। এই ঘৃণ্য অপরাধকে লঘু করার উদ্দেশ্য আমার ছিল না। ভবিষ্যতে শব্দচয়নের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকব।’’ কিন্তু এই টুইটেও বিশেষ সুবিধা হয়নি। আজ সকালে মহিলা বিধায়কদের ক্ষোভের মুখে কর্নাটক বিধানসভায় ফের ক্ষমা চাইতে হয় তাঁকে। রাজ্যের সব মহিলার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন কর্নাটকের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডি কে শিবকুমার।
এ দিকে সংসদে নাম না করে প্রিয়ঙ্কাকেই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। বলেন, ‘‘কংগ্রেস নেতৃত্ব উত্তরপ্রদেশে বলে থাকেন, ‘লড়কি হুঁ, লড় সকতি হুঁ।’ সাহস থাকলে আগে এই জনপ্রতিনিধিকে বহিষ্কার করুন।’’ সংসদের বাইরে জয়া বচ্চন বলেন, ‘‘এই ধরনের মানসিকতার লোক বিধানসভা বা সংসদে রয়েছেন, ভাবতেই লজ্জা করছে!’’ কর্নাটক বিধানভার স্পিকার বিশ্বেশ্বর আজ বলেছেন, ‘‘উনি যখন ক্ষমা চেয়েছেন, তখন বিষয়টিকে আর টেনে যাওয়া উচিত নয়।’’ কংগ্রেস যদিও রমেশের পাশাপাশি তাঁরও সমালোচনা করেছে। দলের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘স্পিকার এবং ওই প্রবীণ বিধায়কের মধ্যে যে চূড়ান্ত আপত্তিকর রসিকতার আদানপ্রদান হয়েছে, কংগ্রেস তা অনুমোদন করে না।’’ কংগ্রেসের রাজ্যসভার নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে বলেন, ‘‘ওই মন্তব্যের নিন্দা করছি। স্পিকার ওই মন্তব্যের সময়ে হাসছিলেন। সেটাও আমরা অনুমোদন করছি না।’’ নির্ভয়ার মা আশা দেবীর কথায়, ‘‘ধর্ষণ নিয়ে নেতারা মজা করেন কী করে? এই ধরনের অপরাধের পরে একটি মেয়ের জীবন তছনছ হয়ে যায়। এঁরা অসুস্থ মানসিকতার লোক।’’