প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যের বিধানসভা ভোটে বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, সাংসদদের হারের মুখে ঠেলে দিয়ে আসলে নরেন্দ্র মোদী ২০২৪-এ লোকসভা নির্বাচনে নিজের হার থেকে রক্ষা পেতে চাইছেন বলে অভিযোগ তুললেন কমল নাথ।
মধ্যপ্রদেশের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ আজ বলেছেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী চাইছেন, তাঁর সরকার সম্পর্কে জনতার অসন্তোষ যে তৈরি হয়েছে, তা তাঁর মন্ত্রী, সাংসদদের উপরে বেরিয়ে যাক। তাই তিনি তাঁদের বিধানসভা ভোটে প্রার্থী করে দিচ্ছেন। তাঁরা হেরে গেলেও মোদীর কিছু এসে যায় না। তিনি শুধু নিজে লোকসভা ভোটে হার থেকে বাঁচতে চান।’’
মধ্যপ্রদেশে দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী-সহ সাত জন সাংসদকে বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী করেছে বিজেপি। দলের নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়কেও তাঁর সঙ্গে আলোচনা না করে বিধানসভা ভোটে প্রার্থী করে দেওয়া হয়েছে। তার পর থেকেই বিজেপি শিবিরে এ নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। রাজ্যের মন্ত্রী যশোধরা রাজে সিন্ধিয়া ভোটে দাঁড়াবেন না জানিয়েছেন। মধ্যপ্রদেশের পরে রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়েও একই ভাবে বিজেপি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, সাংসদদের প্রার্থী করা হতে পারে বলে বিজেপি শিবিরে জল্পনা ও উদ্বেগ ছড়িয়েছে। কমল নাথ কার্যত সেই উদ্বেগ, অসন্তোষকেউস্কে দিয়েছেন।
আজ কমল নাথ বলেছেন, ‘‘বিজেপি শুধু দেখনদারির জন্য ২০২৩-এর বিধানসভা ভোটে লড়ছে। বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের লক্ষ্য শুধু ২০২৪-এর লোকসভা ভোট। সেখানেও বিজেপি হার দেখতে পাচ্ছে। বিজেপি জানে এই বিধানসভা ভোটগুলিতে তারা হারবে। তাই বিজেপির কেন্দ্রীয় নির্বাচনী রণনীতিকাররা ভেবেছেন, যদি ২০২৪-এর আগেই জনতার ক্ষোভ, আক্রোশ ২০২৩-এর ভোটে বেরিয়ে গিয়ে কিছুটা কমে গেলে বিজেপি অন্তত ২০২৪-এ কম ব্যবধানে হারবে।তাই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিধানসভা ভোটে দলের সাংসদ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের ভোটে লড়াচ্ছেন। বিধানসভা ভোটে হেরে গেলে তাঁদের লোকসভা ভোটে প্রার্থী না করার অজুহাতও তৈরি থাকবে। বলা হবে, যাঁরা বিধানসভা ভোটে জিততেপারেন না, তাঁদের লোকসভা ভোটে প্রার্থী করে কী হবে! তাঁদের বদলে নতুন প্রার্থী খাড়া করেও অসন্তোষ কমানোর চেষ্টা হবে।’’ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে মধ্যপ্রদেশের নেতাদের বিবাদ উস্কে দিতেকমল নাথ বলেছেন, ‘‘দিল্লি ও ভোপালের মধ্যে অদৃশ্য যুদ্ধ চলছে। বিজেপির স্লোগানে শুধুই আওয়াজ, আত্মবিশ্বাস নেই।’’
আজ রাহুল গান্ধী মধ্যপ্রদেশে ভোট প্রচারে গিয়ে বলেছেন, ‘‘পাঁচ বছর আগে কংগ্রেস ভোটে জেতা সত্ত্বেও চুরি করে বিজেপি সরকার গড়েছিল। তারও খেসারত বিজেপিকে দিতে হবে।’’ আজ রাহুল মধ্যপ্রদেশকে দুর্নীতির কেন্দ্রস্থল বলে বিজেপি সরকারকে নিশানা করেছেন। অভিযোগ তুলেছেন, মধ্যপ্রদেশে গত ১৮ বছরে বিজেপি সরকারের আমলে ১৮ হাজার কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
জাতগণনার দাবি তুলে ওবিসি ভোটব্যাঙ্ককে পাখির চোখ করে রাহুল বলেছেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী ওবিসিদের প্রাপ্য ভাগ দিচ্ছেন না। কংগ্রেস ক্ষমতায় এলেই জাতগণনা করাবে। যাতে ওবিসি-দের আসল সংখ্যা জানা যায়।’’ রাহুল গান্ধী ওবিসি ভোটব্যাঙ্ককে পাখির চোখ করছেন দেখে ছত্তীসগঢ়ে নরেন্দ্র মোদী অভিযোগ তুলেছেন, কংগ্রেস ওবিসি-দের ঘৃণা করে। নিজের ওবিসি পরিচয়কে কাজে লাগিয়ে মোদী বলেছেন, কংগ্রেস তাঁকেও ঘৃণা করে। রাহুল গান্ধী পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন, কংগ্রেস যে চারটি রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে, তার মধ্যে তিনটি রাজ্যেও ওবিসি মুখ্যমন্ত্রী।