প্রতীকী ছবি।
কর্নাটকের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী জি পরমেশ্বরের বাড়ি ও অফিসে আয়কর হানার দু’দিনের মাথায় উদ্ধার হল তাঁর ব্যক্তিগত সহকারীর ঝুলন্ত দেহ। পুলিশ জানিয়েছে, আজ সকালে বেঙ্গালুরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে একটি গাছ থেকে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলতে দেখা যায় রমেশকে। রামনগরের বাসিন্দা রমেশ টাইপিস্ট হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। পরে কংগ্রেস নেতা পরমেশ্বরের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। গত আট বছর ধরে তিনি পরমেশ্বরের সহযোগী ছিলেন। শনিবার ভোর থেকেই ফোন বন্ধ ছিল রমেশের। একটি সূত্রের খবর, তল্লাশির সময়ে রমেশ উপস্থিত থাকলেও তাঁর বাড়িতে হানা দেয়নি আয়কর।
গত বুধ ও বৃহস্পতিবার কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন, অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-সহ তাঁর যাতায়াত রয়েছে এমন ৩০টি জায়গায় হানা দেয় আয়কর। পরমেশ্বরের পাশাপাশি রমেশকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন গোয়েন্দারা। পরমেশ্বরের দাবি, সম্ভবত তাতেই ভেঙে পড়েছিলেন তাঁর সহযোগী। রমেশের সুইসাইড নোটেও সেই কথাই লেখা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পরমেশ্বর বলেছেন, ‘‘আজ সকালেও ওঁর সঙ্গে কথা হয়েছিল। ওঁকে শক্ত থাকতে বললাম। তবুও এই কাজ কেন করলেন জানি না।’’ রমেশের মৃত্যুর জন্য আয়কর দফতরকেই দুষছে কংগ্রেস। কর্নাটক কংগ্রেসের টুইট, ‘‘বিজেপি নিয়ন্ত্রিত আয়কর দফতরের চাপে প্রথমে আত্মঘাতী হলেন সিসিডি-র মালিক ভি জি সিদ্ধার্থ। এখন প্রাণ গেল রমেশের। বিরোধীদের চাপে ফেলার খেলায় নেমে ওরা মানবিকতা হারিয়ে ফেলেছে।’’
আয়কর দফতরের দাবি, জে পরমেশ্বর ট্রাস্টের অধীনে থাকা মেডিক্যাল কলেজে মোটা টাকার দুর্নীতির অভিযোগ পেয়েই তল্লাশি শুরু করে তারা। অভিযোগ, মেডিক্যাল পরীক্ষায় অসংরক্ষিত আসনগুলি ৫০-৬০ লক্ষ টাকায় বিক্রি করতেন এই কংগ্রেস নেতা। এর জন্য এজেন্টও ছিল। এই দুর্নীতির প্রমাণ হিসেবে টাকা লেনদেনের কাগজপত্রও মিলেছে বলে দাবি আয়করের। দু’দিনের তল্লাশির পরে পরমেশ্বরকে আগামী মঙ্গলবার তলব করেছে আয়কর। কংগ্রেস নেতা জানিয়েছেন, আয়কর কর্তারা তাঁকে বলেছেন কয়েক জন পড়ুয়ার থেকে অভিযোগ পেয়েই হানা দিয়েছিল।
আয়করের দাবি, আবাসন ব্যবসায় বেনামে প্রচুর টাকা লগ্নির প্রমাণও পাওয়া গিয়েছে পরমেশ্বরের বিরুদ্ধে। বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতার বাড়ি ও অফিস থেকে উদ্ধার হয়েছে হিসেব বহির্ভূত সাড়ে ৪ কোটি নগদ টাকা। পরমেশ্বরের ভাইয়ের ছেলে আনন্দের বাড়িতেও তল্লাশি চালায় আয়কর।
কর্নাটকে ডেজিএস ও কংগ্রেস জোট সরকার ক্ষমতায় থাকার সময়ে উপমুখ্যমন্ত্রী ছিলেন পরমেশ্বর। জুলাইয়ে আস্থা ভোটে হেরে যাওয়ায় সেই সরকার পড়ে যায়। কংগ্রেসের দাবি, তার পর থেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে দলের শীর্ষ নেতাদের হেনস্থা করা হচ্ছে।