ছবি: এএফপি।
মহারাষ্ট্র-হরিয়ানায় বিজেপি কিছুটা ধাক্কা খেতে কংগ্রেস ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা দেখতে পেয়েছিল। সনিয়া গাঁধী বিরোধীদের এককাট্টা করে আর্থিক সমস্যা নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে কোণঠাসা করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু শুরুতেই সেই উদ্যোগ হোঁচট খেল। এক দিকে গুরুত্বপূর্ণ নেতারা গরহাজির রইলেন। অন্য দিকে বিরোধীরা কংগ্রেসের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দিতে চাইলেন না।
কংগ্রেসের ডাকা বৈঠকে আজ ১৩টি দলের প্রতিনিধি হাজির ছিলেন। কিন্তু ছিল না এনসিপি, সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি, আম আদমি পার্টি। এনসিপি-র শরদ পওয়ার, প্রফুল্ল পটেলের মতো নেতারা দিল্লিতে হাজির থাকলেও তাঁরা কেউ বৈঠকে যাননি। অন্য কোনও নেতাকেও পাঠাননি। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে হাজির ছিলেন রাজ্যসভার সদস্য নাদিমুল হক। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও’ব্রায়েন দিল্লিতে থাকলেও তাঁরা বৈঠকে যোগ দেননি। বিরোধী নেতাদের নিয়ে এই বৈঠকে সনিয়া গাঁধী নিজে হাজির থাকবেন বলে শোনা গিয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেসের তরফে বৈঠকে ছিলেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ, আহমেদ পটেল, রাজীব শুক্ল ও রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা।
আর্থিক মন্দা-বেকারত্বের মতো বিষয় নিয়ে মঙ্গলবার থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত কংগ্রেস দেশ জুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচির পরিকল্পনা নিয়েছে। কংগ্রেস চাইছিল, অন্য বিরোধী দলগুলিও সেই কর্মসূচিতে যোগ দিক। কিন্তু বাকি দলগুলি তাতে রাজি হয়নি। তার বদলে ঠিক হয়, সংসদের অধিবেশনের সময়ে কোনও এক দিন যৌথ বিক্ষোভ হবে। সংসদের ভিতরেও সরকারকে নিশানা করতে বিরোধী দলগুলি নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে এগোবে। বৈঠকে লোকতান্ত্রিক জনতা দলের নেতা শরদ যাদব যুক্তি দেন, মহারাষ্ট্র-হরিয়ানায় মানুষ বিজেপিকে জবাব দিয়েছেন। বিরোধী দলগুলির সামনে চ্যালেঞ্জ হল, সংসদের ভিতরে-বাইরে মানুষের দেখানো পথে হাঁটা। কিন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে বিরোধীরা যে এখনই মাঠে নামতে রাজি নন, বৈঠকে তা স্পষ্ট হয়ে যায়। বৈঠক শেষে কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘‘ব্লক বা নিচু স্তরে এখন দলগুলির মধ্যে সমন্বয় করা মুশকিল হবে।’’
আরও পড়ুন: অফিসে ঢুকে মহিলা রাজস্ব আধিকারিককে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা! তেলঙ্গানায় অভিযুক্ত জমি মালিক
অখিলেশ যাদব বা মায়াবতীর দলের কোনও প্রতিনিধি কেন বৈঠকে হাজির ছিলেন না, তা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি কংগ্রেস নেতারা। আজাদ বলেন, ‘‘যাঁরা আসেননি, তাঁদের প্রশ্ন করুন কেন আসেননি।’’ শরদ পওয়ার বা তাঁর দলের অনুপস্থিতি নিয়ে আজাদ বলেন, ‘‘উনি অন্য বৈঠকে আটকে গিয়েছিলেন।’’ পওয়ার সোমবার সন্ধ্যায় সনিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন। তার আগে দুপুরে সংসদীয় কমিটির বৈঠকেও হাজির ছিলেন তিনি। কিন্তু তিনি বা তাঁর দলের নেতারা কেন বিরোধী দলগুলির বৈঠক এড়িয়ে গেলেন, তার ব্যাখ্যা মেলেনি।