—প্রতীকী ছবি।
কংগ্রেস যদি মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থানের পাশাপাশি তেলঙ্গানা বিধানসভা নির্বাচনেও ভাল ফল করে, তা বলে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেস তথা বিরোধী শিবিরের পক্ষে জোর হাওয়া উঠতে পারে। এই আশঙ্কা করেই বিজেপি তেলঙ্গানায় কে চন্দ্রশেখর রাও এবং আসাদুদ্দিন ওয়েইসির সঙ্গে হাত মিলিয়ে কংগ্রেসের ভোট কমানোর ‘ষড়যন্ত্র’ করছে বলে কংগ্রেস হাইকমান্ড মনে করছে।
তেলঙ্গানায় বিধানসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের বিআরএস বা ভারত রাষ্ট্র সমিতির বিরুদ্ধে কংগ্রেসই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, অধিকাংশ প্রাক-নির্বাচনী সমীক্ষা জানিয়েছে, বিআরএস বনাম কংগ্রেসের সমান সমান লড়াই হবে। এমনকি, কংগ্রেস বিআরএস-কে পিছনে ফেলে দিতে পারে। তারপরেই বিজেপি গোপনে বিআরএস-কে সাহায্য করতে চাইছে। উল্টো দিকে এমআইএম নেতা আসাদুদ্দিন নিজের মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক বিআরএস-এর ঝোলায় তুলে দিতে চাইছেন বলে কংগ্রেসের আশঙ্কা।
আজ অন্ধ্রপ্রদেশের ওয়াইএসআর কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী জগন্মোহন রেড্ডির বোন ওয়াইএস শর্মিলার দল ওয়াইএসআর তেলঙ্গানা পার্টি জানিয়েছে, তারা তেলঙ্গানায় কংগ্রেসকে সমর্থন করবে। তারা ভোটে লড়লে কংগ্রেসের ভোটে ভাঙন ধরতে পারে আঁচ করেই এই সিদ্ধান্ত। শর্মিলা কিছু দিন আগে দিল্লিতে এসে সনিয়া ও রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। আজ রাহুলকে চিঠি লিখে তিনি সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, কেসিআর সরকারকে তেলঙ্গানায় ক্ষমতা থেকে উৎখাত করার সময় এসে গিয়েছে।
আগামী ৩০ নভেম্বর তেলঙ্গানায় ভোটগ্রহণ। এই নির্বাচনে শর্মিলার দলের সমর্থন সত্ত্বেও কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছেন, আসাদুদ্দিন কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্কে ভাঙন ধরাতে মাঠে নামবেন। দু’দিন আগে তেলঙ্গানায় ভোট প্রচারে গিয়ে রাহুল গান্ধী নিজেই অভিযোগ তুলেছিলেন, ‘‘এমআইএম বিজেপির থেকে টাকা নিয়ে প্রার্থী দেয়। যেখানেই কংগ্রেস বিজেপির বিরুদ্ধে ভোটে লড়ে, এমআইএম সেখানেই বিজেপির থেকে টাকা নিয়ে প্রার্থী খাড়া করে।’’ পাল্টা আক্রমণে ওয়েইসি বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, তিনি মুসলিম বলে রাহুল এই অভিযোগ তুলেছেন। তাঁকে এর খেসারত দিতে হবে। কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, ওয়েইসি আগেই কেসিআর-কে ‘মামু’ সম্বোধন করে তাঁকে ভোট দেওয়ার জন্য সংখ্যালঘুদের কাছে আহ্বান জানিয়েছিলেন। শুধু তেলঙ্গানা নয়। জাতীয় স্তরেও তিনি কেসিআর-কে মায়াবতীকে সঙ্গে নিয়ে বিরোধী জোট ইন্ডিয়া-র বিরুদ্ধে তৃতীয় ফ্রন্ট গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। উল্টো দিকে, বিআরএস-ও এখন ওয়েইসির পাশে দাঁড়াচ্ছে। কেসিআর মহারাষ্ট্রে গিয়ে কংগ্রেস-এনসিপি-শিবসেনার বিজেপি বিরোধী জোটে ভাগ বসানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বিআরএস সরকারের মন্ত্রী, কেসিআর-পুত্র কে টি রাও আজ বলেছেন, ‘‘বিআরএস মহারাষ্ট্রে লড়তে গেলে, ওয়েইসি অন্য রাজ্যে লড়তে গেলে কংগ্রেস নেতাদের পছন্দ হয় না। ওয়েইসি এখন আমাদের সঙ্গে বলে কংগ্রেসের কাছে তিনি খারাপ হয়ে গিয়েছেন।’’ রাহুল গান্ধীকে ‘ভারতীয় রাজনীতির পাপ্পু’ ও তেলঙ্গানা প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি রেবন্ত রেড্ডিকে ‘তেলঙ্গানার পাপ্পু’ বলেও কটাক্ষ করেছেন কে টি রাও। কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা বলেন, ‘‘বিআরএস নেতাদের মুখে এখন হিজ মাস্টার্স ভয়েস শোনা যাচ্ছে। ওঁরা দিল্লিতে বসে থাকা বিজেপির প্রভুদের সুরেই কথা বলছেন।’’