জয়রাম রমেশ। —ফাইল চিত্র।
নবান্নে তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের বৈঠকের পর স্থির হয়েছিল, নতুন দণ্ডসংহিতা সংক্রান্ত তিনটি আইনকে কেন্দ্র করে অষ্টাদশ লোকসভায় বিরোধী জোট ইন্ডিয়া তাদের প্রথম যৌথ সমন্বয়ে এনডিএ সরকারকে আক্রমণ শানাবে। দণ্ডসংহিতা এখনই চালু নিয়ে আপত্তি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী চিঠিও পাঠান মোদী-শাহকে। এর পর আজ আক্রমণের ধারবাহিকতা বজায় রাখতে আসরে নামল কংগ্রেস। দলের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ আজ বলেছেন, ‘‘এই তিনটি বিলের প্রভাব সুদূরপ্রসারী। সংসদকে বুলডোজ় করে, ঠিক মতো আলোচনা না করে, লোকসভা এবং রাজ্যসভা থেকে ১৪৬ জন সাংসদকে বরখাস্ত করে এই বিল পাশকরানো হয়েছিল।’’
রমেশের কথায়, ‘‘এর আগে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতেও বিলগুলি নিয়ে গোটা দেশের গুরুত্বপূর্ণ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে আলোচনা না করে, কমিটির কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাংসদদের লিখিত আপত্তিপত্রকে সম্পূর্ণ অবজ্ঞা করে, গুঁতিয়ে পাশ করানো হয়েছে।’’
তৃণমূলের সঙ্গে গলা মিলিয়ে আজ জয়রাম দাবি করেছেন, এই তিনটি নতুন আইন বলবৎ হওয়ার তারিখটিকে (১ জুলাই) অতি অবশ্যই পিছিয়ে দেওয়া হোক। তা হলে বিভিন্ন আইন বিশেষজ্ঞকে ডেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটিতে এই সংক্রান্ত অর্থবহ আলোচনা করা যাবে। অনেকেই এই আইন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১১ অগস্ট সংসদের বাদল অধিবেশনের শেষ দিনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লোকসভায় তিনটি বিল পেশ করে জানিয়েছিলেন, ১৮৬০ সালে তৈরি ভারতীয় দণ্ডবিধি প্রতিস্থাপিত হবে ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’ দিয়ে। ১৮৯৮ সালের ফৌজদারি দণ্ডবিধি প্রতিস্থাপিত হবে ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা’ দ্বারা এবং ১৮৭২ সালের ভারতীয় সাক্ষ্য আইন প্রতিস্থাপিত হবে ‘ভারতীয় সাক্ষ্য বিল’-এ। তার পরেই বিল তিনটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এর পরেগত বছরের ডিসেম্বর মাসেসংসদের শীতকালীন অধিবেশনে ১৪৬ জন বিরোধী সাংসদকেবহিষ্কার করে প্রায় বিরোধীশূন্য সংসদে কোনও আলোচনা ছাড়াই ধ্বনিভোটে মোদী সরকার পাশ করিয়ে নেয়তিনটি বিল।