কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ। —ফাইল চিত্র।
ছত্তীসগঢ়ে ভোট প্রচারে যাওয়া অমিত শাহের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ ও উস্কানিমূলক ভাষণ দেওয়ার অভিযোগ আনলেন কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ। ভবিষ্যতে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক প্রচার রুখতে শাহের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদনও জানিয়েছেন তিনি।
বিধানসভা ভোট ঘোষণার পর আজই প্রথম ছত্তীসগঢ়ে গিয়েছিলেন অমিত শাহ। ওই রাজ্যে আগামী ৭ ও ১৭ নভেম্বর নির্বাচন। আজ রাজনন্দগাঁও কেন্দ্র থেকে নিজের মনোনয়ন জমা দেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা রমন সিংহ। তাঁর মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন শাহ। তার পর রাজনন্দগাঁও-এ একটি জনসভায় রাজ্যে ভূপেশ বঘেলের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকারের দুর্নীতির পাশাপাশি বিনাপুরে হওয়া গোষ্ঠী সংঘর্ষের প্রসঙ্গে সরব হন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ওই গোষ্ঠী সংঘর্ষে ভুবনেশ্বর সাহু নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। নিহত ব্যক্তির বাবা ঈশ্বর সাহুকে এ বার সাজা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করেছে বিজেপি।
আজ মঞ্চে উপস্থিত ঈশ্বর সাহুকে আশ্বাস দিয়ে শাহ বলেন, ‘‘বিজেপির সরকার এলে ছেলের মৃত্যুর সুবিচার পাবেন।’’ গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, সংখ্যালঘু তোষণের লক্ষ্যেই ভুবনেশ্বর সাহুকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল দোষীদের। সেই প্রসঙ্গ তুলে জনতার উদ্দেশে শাহ প্রশ্ন রাখেন, ‘‘আপনারা কি চান ছত্তীসগঢ় একবার ফের দাঙ্গার বধ্যভূমিতে পরিণত হোক? ভুবনেশ্বর সাহুর বিচার পাওয়া উচিত, না উচিত নয়?’’ শাহ দাবি করেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে ফের ভোট ব্যাঙ্কের তোষণের রাজনীতিতে তৎপর হবে।
কংগ্রেস নেতৃত্ব মনে করছেন, হিন্দু ভোটের মেরুকরণের চেষ্টা করতেই ঈশ্বর সাহুকে পাশে বসিয়ে ওই হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরব হওয়ার কৌশল নিয়েছেন শাহ। দলের অভিযোগ, ছত্তীসগঢ়ে ক্ষমতা ফিরে পেতে ফের গোষ্ঠী সংঘর্ষের উদাহরণ তুলে ধরে মেরুকরণের তাস খেলার কৌশল নিচ্ছে বিজেপি।
কংগ্রেসের রাজ্যসভা সাংসদ জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘ছত্তীসগঢ়ে অমিত শাহ অত্যন্ত উস্কানিমূলক বক্তব্য রেখেছেন। অভিযোগ করেছেন, ভোট ব্যাঙ্ক রাজনীতি ও তোষণের চেষ্টায় ভূপেশ বঘেলের সরকার ভুবনেশ্বর সাহুকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।’’ রমেশের দাবি, উস্কানিমূলক কথা বলে শান্ত ছত্তীসগঢ়ে অশান্তি তৈরি করাই লক্ষ্য বিজেপির।
কংগ্রেসের পাল্টা দাবি, হিংসার ওই মামলায় দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে দোষীদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। রমেশের কথায়, ‘‘ছত্তীসগঢ়ে পরাজয় নিশ্চিত বুঝে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির সাহায্য নিতে হচ্ছে শাহকে।’’ শাহের ওই উস্কানিমূলক ভাষণের জন্য তিনি নির্বাচন কমিশনকে মামলা দায়ের করে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার অনুরোধ করেছেন। রমেশ মনে করেন, গোড়া থেকেই কমিশন ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে ছত্তীসগঢ়ে ভোট প্রচারে আরও বেশি করে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করতে পিছপা হবে না বিজেপি।