ভূপেশ বঘেলকে এবং টি এস সিংহদেও দ্বন্দ্ব মেটাতে সক্রিয় রাহুল গাঁধী। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
রাজস্থান, পঞ্জাবের পর এ বার ছত্তীসগঢ়। রাজ্য নেতাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামলাতে আসরে নামতে হল কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। ওই রাজ্যের কংগ্রেস বিধায়কদের দিল্লি তলব করা হয়েছে। এআইসিসি-র তরফে জানানো শুক্রবার রাহুল গাঁধী ওই বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
ছত্তীসগঢ়ে ভূপেশ বঘেলকে সরিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য ও গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী টি এস সিংহদেও মুখ্যমন্ত্রী করার দাবি তুলেছেন কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশ। সিংহদেওর দাবি, ২০১৮ সালে কংগ্রেস সরকার গঠনের সময়ই ঠিক হয়েছিল, প্রথম আড়াই বছর বঘেল, তার পরের আড়াই বছর তিনি মুখ্যমন্ত্রী হবেন। প্রতিশ্রুতিমাফিক মুখ্যমন্ত্রীর পদ না মিললে সিংহদেও শুধু সরকার নয়, কংগ্রেস ছাড়তে পারেন বলেও তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি।
এরই মধ্যে বঘেল অনুগত এক বিধায়ক তাঁকে খুনের চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন সিংহদেওর বিরুদ্ধে। ফলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়েছে। গ্বালিয়র রাজ পরিবারের উত্তরাধিকারী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার বিদ্রোহের কারণে গত বছর পাশের রাজ্য মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতা হারাতে হয়েছিল কংগ্রেসকে। ঘটনাচক্রে, ছত্তীসগঢ়ের বিক্ষুব্ধ নেতা সিংহদেও সরগুজা রাজ পরিবারের সন্তান।
মধ্যপ্রদেশে জ্যোতিরাদিত্যও একই ভাবে মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবি তোলায় সঙ্কট ঘনিয়েছিল। ছত্তীসগঢ়ের পরিস্থিতি হাতের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার আগে তাই এ বার রাহুল নিজেই সক্রিয় হয়েছেন। মঙ্গলবার রাহুল দিল্লিতে বঘেল ও সিংহদেওর সঙ্গে আলাদা ভাবে প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠক করেন।
ওই বৈঠকের পরে এআইসিসি-তে ছত্তীসগঢ়ের ভারপ্রাপ্ত নেতা পি এল পুনিয়া বলেছিলেন, ‘‘দুই নেতাই হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে রাজি হয়েছেন।’’ শুক্রবার পুনিয়ার মন্তব্য, ‘‘এখনও বঘেলই মুখ্যমন্ত্রী পদে রয়েছেন। শুক্রবারের বৈঠকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে।’’
কংগ্রেসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ২০১৮ সালের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের বিপুল জয়ের পর দলীর বিধায়কদের বড় অংশই সিংহদেওকে মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছিলেন। কিন্তু তৎকালীন কংগ্রেস সভাপতি রাহুলের ইচ্ছেতেই মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছিল অনগ্রসর নেতা বঘেলকে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী বঘেল তাঁর জামাইয়ের পরিবারের ঋণগ্রস্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করে বিতর্কে জড়িয়েছেন।