Jairam Ramesh

আদানি নিয়ে ফের মোদীকে আক্রমণে কংগ্রেস

সম্প্রতি একের পর এক আর্থিক কারচুপি, শেয়ার কেলেঙ্কারিতে ধারাবাহিক ভাবে বিতর্কে জড়িয়েছে আদানি গোষ্ঠী। নরেন্দ্র মোদী সরকারের সঙ্গে আদানি সংস্থার সম্পর্ক নিয়ে সরব কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের অনেকেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৬:৪৪
Share:

জয়রাম রমেশ। —ফাইল চিত্র।

অতীতে জি২০-র মঞ্চ থেকে সঙ্ঘবদ্ধ আর্থিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে একাধিক বার সরব হতে দেখা গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। আজ জি২০-র মূল বৈঠকের দিনেই মোদীর সেই অতীত প্রচারকে হাতিয়ার করে আদানি-প্রধানমন্ত্রীর ‘সুসম্পর্ক’কে কটাক্ষ করে আক্রমণ শানালেন কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ। বিদেশ থেকে মুখ খুলে রাহুল গান্ধীও আদানি প্রসঙ্গের পাশাপাশি জি২০ উলপক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন ঝুপড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া, বেওয়ারিশ প্রাণীদের আটক করার সমালোচনা করেছেন। তাঁর বক্তব্য, লোকের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়ে বিদেশিদের কাছে ভাল সাজার দরকার নেই ভারতবাসীর।

Advertisement

সম্প্রতি একের পর এক আর্থিক কারচুপি, শেয়ার কেলেঙ্কারিতে ধারাবাহিক ভাবে বিতর্কে জড়িয়েছে আদানি গোষ্ঠী। নরেন্দ্র মোদী সরকারের সঙ্গে আদানি সংস্থার সম্পর্ক নিয়ে সরব কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের অনেকেই। দাবি উঠেছে, শেয়ার বাজারে কারচুপির মামলায় যৌথ সংসদীয় কমিটিকে দিয়ে তদন্ত করানোরও।

এই আবহে আজ জি২০-র মূল বৈঠকের দিনে দুর্নীতি দমন ও আর্থিক কেলেঙ্কারি রুখতে নরেন্দ্র মোদীর অতীত বক্তব্যকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে শাসক শিবিরকে আক্রমণ করলেন জয়রাম। বললেন, ২০১৪ সালে ব্রিসবেনে জি২০ বৈঠকে মোদী আর্থিক জালিয়াতদের স্বর্গরাজ্য নিশ্চিহ্ন করার ব্যাপারে সওয়াল করার সঙ্গে এ ধরনের দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করে নিঃশর্ত প্রত্যপর্ণের উপরেও জোর দিয়েছিলেন।’’ দুর্নীতিগ্রস্তদের বাঁচাতে যে নানাবিধ আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধ ও ব্যাঙ্কের গোপনীয়তা সংক্রান্ত আইন রয়েছে, তা-ও পাল্টানোর উপরে জোর দিয়েছিলেন মোদী। জয়রামের অভিযোগ, বাস্তবে মোদী ঘনিষ্ঠ দুর্নীতিগ্রস্তেরা সব ধরনের নিরাপত্তাই পেয়েছেন।

Advertisement

২০১৮ সালে আর্জেন্টিনার বুয়েনোস আইরেসের জি২০ বৈঠকেও আর্থিক কেলেঙ্কারিতে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার জন্য সওয়াল করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এ ধরনের ঘটনায় অর্থ উদ্ধারে দুর্নীতিগ্রস্তদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার দাবিও তুলেছিলেন। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী মুখে এ কথা বললেও ঘটেছে ঠিক উল্টো। সরকারি মদতে ফুলে ফেঁপে উঠেছে অল্প কিছু সংস্থা। জয়রামের অভিযোগ, ‘‘বিগত কয়েক বছরে প্রধানমন্ত্রী কেবল তাঁর ঘনিষ্ঠদের জন্য একচ্ছত্র আধিপত্য গড়ে তোলার সুযোগ করে দিয়েছেন। আদানি সংস্থা সমস্ত ধরনের বন্দর, বিমানবন্দর, বিদ্যুৎ উৎপাদনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলির বরাত পেয়েছে।।’’

এই স্বজনপোষণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে জয়রামের কটাক্ষ, ‘‘আদানি যা কুকীর্তি করেছেন, তা থেকে ওই সংস্থাকে বাঁচাতে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) সেবি, সিবিআই, ইডি , রাজস্ব গোয়েন্দা দফতরের তদন্ত আটকে দিয়েছেন। এ যাত্রায় জি২০ সম্মেলনের থিম হল এক দেশ, এক পরিবার ও এক ভবিষ্যত। কিন্তু আমার মনে হয় প্রধানমন্ত্রী এক ব্যক্তি, এক সরকার ও একটি বাণিজ্য সংস্থায় বিশ্বাস করেন।’’ বিজেপির পাল্টা বক্তব্য, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের সুনাম সহ্য হচ্ছে না কংগ্রেসের। অতীতেও দেখা গিয়েছে, দেশের বিরুদ্ধে গিয়ে কালি ছেটাতেই বেশি তৎপর থাকে কংগ্রেস।

বেলজিয়ামের ব্রাসেলস থেকে আদানি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ শানিয়েছেন রাহুল গান্ধীও। সমাজমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘অবাক করার মতো বিষয় হল, আমরা যখনই আদানি নিয়ে সরব হই, তখনই এরা কোনও না কোনও ভাবে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করে থাকে। দেশের নাম পাল্টে ফেলা এমনই একটি প্রচেষ্টা।’’ পাশাপাশি দিল্লিকে সুন্দর করে তোলার স্বার্থে গরিব মানুষকে পর্দার পিছনে আড়াল করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ধরপাকড়ের শিকার হচ্ছে পথচলতি প্রাণীরা। সরকারের ওই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে রাহুল বলেন, ‘‘সরকার গরিব মানুষ ও পথচলতি প্রাণীদের আড়াল করার চেষ্টা করছে। অতিথিদের কাছ থেকে প্রকৃত ভারতকে লুকনোর কোনও প্রয়োজন নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement