প্রশান্ত কিশোর। ফাইল চিত্র।
শুধু বছরের শেষে গুজরাত বিধানসভা নির্বাচন নয়। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে প্রশান্ত কিশোরকে সার্বিক ভাবে কৌশল তৈরির দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে কংগ্রেস হাই কমান্ড ভাবনাচিন্তা করছে।
কংগ্রেস সূত্রের দাবি, চলতি বছরের শেষে গুজরাত, হিমাচল প্রদেশ, আগামী বছর রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়ের বিধানসভা নির্বাচন এবং তারপরে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের জন্য ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরকে নিয়োগ করা হতে পারে। প্রাথমিক ভাবে প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে কংগ্রেস নেতৃত্বের শুধুমাত্র গুজরাতের বিধানসভা ভোট নিয়েই কথা হয়েছিল। গুজরাতে কিশোর কংগ্রেসের হয়ে কাজ করবেন বলে এখনও সরকারি ভাবে ঘোষণা হয়নি। কংগ্রেস সূত্রের দাবি, শুধু গুজরাত, না কি ২০২৪-এর আগে পর্যন্ত সার্বিক দায়িত্ব, তা নিয়ে এখনও দর কষাকষি চলছে।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, এই দর কষাকষির মধ্যেই প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী তথা গান্ধী পরিবারের আস্থাভাজন নেতা অশোক গহলৌতের বৈঠক হয়েছে বলে কংগ্রেসের একটি সূত্রের দাবি। কিশোর ও গহলৌতের আলোচনায় গুজরাতের পাতিদারদের মধ্যে প্রভাবশালী নরেশ পটেলকে কংগ্রেসে নিয়ে এসে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে কথা হয়েছে। নরেশ পটেল পাতিদারদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায় লেউভা পটেলদের সংস্থা, শ্রী খোদালধাম ট্রাস্টের চেয়ারম্যান। সৌরাষ্ট্র অঞ্চলে তাঁর প্রভাবের জন্য বিজেপি, আম আদমি পার্টিও নরেশ পটেলকে দলে টানতে চাইছে। কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, ‘‘প্রশান্ত কিশোর নরেশ পটেলকে দলের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার পক্ষে মত দিয়েছেন। তবে দলের নেতারা তা মেনে নেবেন বলে মনে হয় না।’’ কংগ্রেস মূলত পাতিদার, ওবিসি, দলিত, আদিবাসী ও মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক একত্র করার কৌশল নিয়ে এগোতে চাইছে। হার্দিক পটেল, জিগ্নেশ মেবাণীদের এ ক্ষেত্রে প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হবে।
কংগ্রেস নেতাদের আশঙ্কা, গত বছরও গান্ধী পরিবারের সঙ্গে কিশোরের আলোচনা ভেস্তে গিয়েছিল। কারণ, কিশোর যে ভাবে কংগ্রেসে আমূল বদল আনতে চেয়েছিলেন, গান্ধী
পরিবার তাতে রাজি হননি। তাঁদের ধারণা ছিল, এতে দলের নেতারা ক্ষুব্ধ হবেন। একই কারণে এ বারও আলোচনা ভেস্তে যেতে পারে। বিক্ষুব্ধ নেতাদের গোষ্ঠী জি-২৩-র এক সদস্য বলেন, ‘‘পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পরেও হাই কমান্ড সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। পাঁচ রাজ্যের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে সরানো হলেও এখনও মণিপুর বাদে অন্য কোনও রাজ্যে নতুন প্রদেশ সভাপতি নিয়োগ হয়নি। পরিষদীয় দলনেতা নিয়োগ নিয়েও টালবাহানা চলছে।’’ আজ রাহুল গান্ধী তেলঙ্গানার নেতাদের সঙ্গে নিজের বাড়িতে বৈঠক করেছেন। সনিয়া গান্ধীও বৈঠকে হাজির হন। বৃহস্পতিবার রাহুল কর্নাটকে যাবেন। দুই রাজ্যেই ২০২৩-এ বিধানসভা নির্বাচন।