কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। — ফাইল চিত্র।
আয়কর দফতর নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি থেকে ৬৫ কোটি টাকা জরিমানা হিসাবে কেটে নিয়েছে আয়কর দফতর। বুধবার এআইসিসির কোষাধ্যক্ষ অজয় মাকেন বলেন, ‘‘সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কগুলির কাছে ৬৫ কোটি টাকা কেটে নেওয়ার জন্য আয়কর দফতর চিঠি দিয়েছে। বিষয়টি আয়কর আপিল ট্রাইবুনাল বেঞ্চে বিচারাধীন। ফয়সালা হওয়ার আগে এমন পদক্ষেপ আইনসঙ্গত নয়।’’
সেই সঙ্গেই অজয়ের প্রশ্ন— ‘‘আমরা জানতে চাই, রাজনৈতিক দল হিসাবে বিজেপি কি কোনও আয়কর দেয়? যদি না দেয়, তা হলে আমাদের কাছে কেন ২১০ কোটি টাকা আয়কর দাবি করা হচ্ছে?’’ প্রসঙ্গত, শুক্রবার সকালে অজয় অভিযোগ করেছিলেন, যুব কংগ্রেস-সহ শাখা সংগঠনগুলির কাছে আয়কর রিটার্ন সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগে ২১০ কোটি টাকা জরিমানার দাবি জানানো হয়েছিল সংশ্লিষ্ট দফতরের তরফে। বিষয়টি আয়কর ‘অ্যাপিলেট ট্রাইবুনাল’-এর বিচারাধীন। এর মধ্যেই বেআইনি ভাবে পদক্ষেপ করে আয়কর দফতর দলের চারটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ় করে।
মাকেন জানিয়েছিলেন, এই বিষয়টি দল টের পায়, একাধিক চেক ফেরত আসায়। মাকেনের অভিযোগ, ‘‘লোকসভা ভোটের আগে পরিকল্পিত ভাবে এমন পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এই ঘটনা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উপরে জঘন্য আঘাত।’’ তাঁর অভিযোগ, যুব কংগ্রেস-সহ শাখা সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে আয়কর রিটার্ন সংক্রান্ত অতি সামান্য অনিয়মের অভিযোগে (নগদ ১৪.৪০ লাখ টাকা ওই অ্যাকাউন্টে জমা পড়া এবং রিটার্ন জমা দিতে ৪৫ দিন দেরি হওয়ার অভিযোগ) ২১০ কোটি টাকা জরিমানা ধার্য করেছে আয়কর দফতর। বিষয়টি এখন আয়কর ‘আপিল ট্রাইবুনাল’-এর বিচারাধীন। এর মধ্যেই বেআইনি ভাবে পদক্ষেপ করেছে আয়কর দফতর। বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেস প্রকাশ্য বিবৃতি দেওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই আয়কর ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে ওই চারটি অ্যাকাউন্ট আবার খুলে দেওয়া হয়েছিল।
কংগ্রেসের অভিযোগ, ২০২৩ সালের মার্চের শেষে তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ছিল ১৬২ কোটি টাকা। পাশাপাশি বিজেপির অ্যাকাউন্টে ছিল ৫,৪২৫ কোটি টাকা। কিন্তু বিজেপির থেকে কোনও আয়কর কাটা হয়নি। বুধবার আপিল ট্রাইবুনালে শুনানি চলাকালীনই ব্যাঙ্কগুলিকে চিঠি পাঠিয়ে কংগ্রেসের বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে ৬৫ কোটি টাকা জরিমানা কাটার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে অজয়ের দাবি।
কংগ্রেসের সাংসদ এবং বিধায়কেরা তাঁদের ভাতার যে অংশ দলীয় তহবিলে দিতেন, ‘ফ্রিজ়’ করা অ্যাকাউন্টগুলিতে রাখা রয়েছে বলে দাবি অজয়ের। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে কোন সাংসদ ও বিধায়ক কত টাকা দিয়েছেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। দেশে এখন গণতন্ত্রের অস্তিত্ব নেই। কার্যত একদলীয় স্বৈরাচার চলছে। প্রধান বিরোধী দলের বিরুদ্ধে সরকারি সংস্থাকে কাজে লাগানো হচ্ছে।’’ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল আগেই বিষয়টি নিয়ে মোদী সরকারকে নিশানা করে বলেছিলেন, “বিজেপি বেআইনি নির্বাচনী বন্ড থেকে সাড়ে ছ’হাজার কোটি টাকা পেয়েছে, সেই কেলেঙ্কারিকে স্পর্শ করা হচ্ছে না!” তাঁর অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচনী বন্ড বাতিল করতেই বিজেপি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। সেই কারণে বিরোধীদের নিশানা করা হচ্ছে।