ছবি: এপি।
রাফাল যুদ্ধবিমানের পর সাবমেরিন। আর এক ‘বন্ধু শিল্পপতি’কে ফায়দা করে দিতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী, এমন অভিযোগ তুলে তেড়েফুঁড়ে উঠেছে কংগ্রেস।
এআইসিসি দফতরে আজ সাংবাদিক বৈঠক করে কংগ্রেস অভিযোগ করল, বিদেশি প্রযুক্তি নিয়ে এ দেশে ৬টি সাবমেরিন তৈরি করতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। নৌসেনার অধীনে এমপাওয়ার্ড কমিটি সব দিক খতিয়ে দেখে দুটি সংস্থাকে বাছাই করে। মোদী সরকারের ইশারায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনে ‘প্রতিরক্ষা উৎপাদন বিভাগ’ সে প্রস্তাব খারিজ করে ‘আদানি ডিফেন্স’ সংস্থাকে বরাত দেওয়ার প্রস্তাব বিবেচনা করতে বলেছে। অথচ কোনও নিয়মেই এই সংস্থা সেটি পেতে পারে না। এখনও পর্যন্ত একটিও জাহাজ-সাবমেরিন তৈরি করেনি তারা।
কংগ্রেসের অভিযোগ, রাফালে যেমন ‘বন্ধু শিল্পপতি’ অনিল অম্বানীকে সুবিধা করে হয়েছে, এ বারেও আর এক বন্ধু আদানি গোষ্ঠীকে সুবিধা পাইয়ে দিতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: হাঙ্গামার আশঙ্কায় কাশ্মীরে পুরোপুরি ফিরল না ইন্টারনেট
কংগ্রেসের অভিযোগের পর সরকারের এক সূত্রের দাবি, ‘‘সাবমেরিন কে তৈরি করবে, তা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্তই হয়নি। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এ নিয়ে বৈঠক হতে পারে। তবে এর মধ্যে স্বজনপোষণ, দুর্নীতির প্রশ্ন নেই। এর আগে রাফাল নিয়ে রাহুল গাঁধী নির্বাচনী প্রচারে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। মানুষ তাঁদের পক্ষে ভোট দেননি, আদালতেও প্রমাণ করতে পারেননি। এ বারেও আর একটি মিথ্যা চেষ্টা করছেন।’’
কিন্তু কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলছেন, ‘‘আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলেই অভিযোগ করা হচ্ছে। সরকার যদি এমন কোনও পদক্ষেপ না করে, ভাল।’’ বিজেপি এখনও চুপ থাকলেও দলীয় সূত্রের বক্তব্য, এর আগে রাফালের প্রতিযোগী সংস্থার পক্ষ নিয়ে বিরোধিতা করছিল কংগ্রেস। এখনও কী অন্য কোনও সংস্থার পক্ষে তারা সওয়াল করছে? কংগ্রেস অবশ্য যাবতীয় তথ্য হাতে নিয়ে দেখাচ্ছে, আদানিকে এই বরাত দেওয়ার জন্য কী কী নিয়ম ভঙ্গ করা হয়েছে।
সুরজেওয়ালা জানান, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনা নিয়ে ২০১৬ সালে সরকার নিজেই যে নিয়ম করেছে, তা তারা মানেনি। আদানির পক্ষে বলা হয়েছে, সাবমেরিন কোনও দিন তৈরি না-করলেও তাদের বিদ্যুৎ উৎপাদনের অভিজ্ঞতা তো রয়েছে। বাধ্যতামূলক ‘এ’ রেটিং কমিয়ে ‘ট্রিপল বি’ করা হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হিন্দুস্তান শিপইয়ার্ড লিমিটেডের সঙ্গে মিলে যৌথ উদ্যোগের আবেদন করলেও এখনও পর্যন্ত সেটা হয়নি। শুধুমাত্র এই কাজের জন্য একটি তহবিল গঠনের কথা থাকলেও করা হয়নি। সে কারণেই নৌসেনার এমপাওয়ার্ড কমিটি আদানির প্রস্তাব খারিজ করেছে। তা সত্ত্বেও সে সংস্থাকে বরাত দেওয়ার জন্য চাপ বাড়ানো হচ্ছে।