জয়রাম রমেশ। ফাইল চিত্র।
আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ধারাবাহিক আক্রমণ আজও চালু রাখল কংগ্রেস। শুক্রবারই দলের নেতা জয়রাম রমেশ আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে চিনের যোগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। আজ একটি বিবৃতি দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, ‘হাম আদানি কে হ্যায় কৌন’ সিরিজ়টি অব্যাহত রাখতে তিনটি প্রশ্ন তুলছেন! জানিয়েছেন, এই প্রশ্নগুলির উদ্দেশ্য হল কেন্দ্রীয় সরকার কী ভাবে গৌতম আদানিকে একচেটিয়া বাজার ধরার সুযোগ করে দিয়েছে এবং সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তিনি কী ভাবে বিমানবন্দর বা বিদ্যুতের মতো অত্যাবশ্যক পরিষেবা নিয়ে ক্রেতাদের ঠকিয়ে গিয়েছেন তা প্রকাশ করা।
কংগ্রেস সাংসদের প্রথম প্রশ্ন, আদানি পরিচালিত লখনউয়ের চৌধরি চরণ সিংহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ‘ইউজ়ার ডেভেলপমেন্ট ফি’ অত্যধিক বাড়ানো নিয়ে, যা যাত্রীদের পকেট থেকে যায়। দেখা যাচ্ছে সম্প্রতি দেশের যাত্রীদের জন্য প্রায় ছ’গুণ এবং বিদেশি যাত্রীদের জন্য বারো গুণ বেড়েছে আদানি পরিচালিত আমদাবাদ বিমানবন্দরের ভাড়াও। রমেশের প্রশ্ন, “কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকে এবং নীতি আয়োগের আপত্তি সত্ত্বেও আপনার বন্ধু গৌতম আদানির হাতে ছ’টি বিমানবন্দর পরিচালনার অধিকার তুলে দেওয়ার এটা কি অনিবার্য পরিণাম নয়?”
রমেশের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় প্রশ্ন, হরিয়ানা সরকারের বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থাগুলির সঙ্গে আদানির চুক্তি নিয়ে। তাঁর আরও অভিযোগ, আদানি গোষ্ঠী জালিয়াতি করা সত্ত্বেও সেবি চোখ বুজে রয়েছে।
আদানির পাশাপাশি আজ কংগ্রেস সাংবাদিক বৈঠক করে রাহুল গান্ধীর সমালোচনারত বিজেপি-কে পাল্টা তোপ দেগেছে। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্তৃতায় রাহুল জানিয়েছিলেন, বিজেপি-র জমানায় গণতন্ত্র আক্রান্ত। বিজেপি নেতারা গত দু’দিন ধরে বলে চলেছেন বিদেশের মাটিতে রাজনীতি করে ভারতের ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত করছেন রাহুল। আজ কংগ্রেসের মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনতে সাংবাদিকদের বলেন, “রাহুল গান্ধী চার বারের জিতে আসা সাংসদ। তিনি কেমব্রিজের বিজ়নেস স্কুলে ভিজ়িটিং ফেলো হিসেবে বক্তৃতায় ভারতের গণতন্ত্রের মূল্যবোধের কথাই তুলে ধরেছেন। তাঁর সম্পর্কে করা বিজেপি-র মন্তব্যগুলি হয় অজ্ঞানতাপ্রসূত। না হয় তাঁরা শস্তার রাজনীতি করছেন।” বিজেপির সম্বিত পাত্র, হিমন্তবিশ্ব শর্মার মতো নেতারা অবশ্য আজও রাহুলকে আক্রমণ করেছেন। সম্বিতের কটাক্ষ, ‘‘রাহুল তাঁর পরিবারের হাতে থাকা দলের উজ্জ্বল সন্তান হতে পারেননি। কিন্তু তার অর্থ এ নয় যে ভারত উজ্জ্বল স্থানে নেই।’’ হিমন্তের বক্তব্য, ‘‘প্রথমে বিদেশি এজেন্টরা আমাদের নিশানা করল। পরে আমাদের নিজেদের লোকই বিদেশের মাটিতে আমাদের নিশানা করলেন।’’
নরেন্দ্র মোদীর অতীতের চিন সংক্রান্ত বক্তৃতার ভিডিয়ো চালিয়ে তাঁকে কটাক্ষও করেছেন কংগ্রেস মুখপাত্র। তাঁর কথায়, “মোদী এক সময়ে চিনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে বলেছিলেন, দুই আন্তর্জাতিক নেতার ঘনিষ্ঠতা বাইরে থেকে বোঝা সম্ভব নয়। ঠিকই তো। তাঁদের এই প্রেমই তো গালওয়ানের পরেও চিন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে মুখ খুলতে দিচ্ছে না! তিনি শি জিনপিং-এর সঙ্গে সাবরমতীতে দোলনায় দোলেন, মহাবলীপুরমে বাজনা শোনেন, বালিতে গিয়ে চুপ করে থাকেন। চিন সীমান্তে ভারতের টহলদারির এলাকা এখন বাফার জ়োন হয়ে গিয়েছে। কে এর জবাব দেবে?”