প্রতীকী ছবি।
ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার দিনেই প্রশ্নের মুখে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা!
শনিবারের দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে পাঁচ রাজ্যের ভোটের দিন ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কমিশন। পরে নিজেরাই সময় পিছিয়ে দেয়। এর জেরে প্রশ্নের মুখে কমিশনের নিরপেক্ষতা। গোটা ঘটনায় কমিশনের সঙ্গেই কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তথা শাসক শিবিরের ভূমিকাকেও। কমিশনের দাবি প্রশাসনিক বিষয়ে আলোচনা শেষ না হওয়াতেই পিছোতে হয়েছে সাংবাদিক বৈঠক।
এ দিন বেলা একটায় রাজস্থানের অজমেরের এক জনসভায় বক্তৃতা দেওয়ার কথা ছিল মোদীর। বেলা দশটা নাগাদ কমিশন জানায়, বেলা সাড়ে বারোটায় নির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হবে। কংগ্রেসের অভিযোগ, এতে প্রমাদ গোনে বিজেপি। সঙ্গে সঙ্গে কমিশনকে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত কমিশন যেন ঘোষণা না করে। নয়তো নির্বাচনী আচরণবিধির গেরোয় পড়তে হবে প্রধানমন্ত্রীকে। চল্লিশ মিনিটের মধ্যেই কমিশন ফের জানায়, সাড়ে বারোটায় নয়, বেলা তিনটেয় নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণা করা হবে। ভোটমুখী মিজোরামের অ্যাডভোকেট জেনারেল বিশ্বজিৎ দেব বলেন, ‘‘অভিযোগ সত্যি হলে আদালত নিজেই এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে। দিনক্ষণ ঘোষণার দিনেই যদি পক্ষপাত ও সরকারি নির্দেশে চলার অভিযোগ ওঠে কমিশনের বিরুদ্ধে, তবে গোটা ভোট প্রক্রিয়া কতটা অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই।’’
আরও পড়ুন: বর্ষশেষে পরীক্ষায় মোদী-শাহ, ৫ রাজ্যের ভোট ঘোষণা
কংগ্রেস, আম আদমি পার্টির মতো বিরোধী দলগুলি মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতার প্রশ্নে সরব রয়েছে। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা আজ বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন ভোটের দিন ঘোষণা করলেই সংশ্লিষ্ট রাজ্যে নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হয়ে যায়। তাই প্রধানমন্ত্রী তথা শাসক দলকে সুবিধে করে দিতেই ওই সাংবাদিক বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হয়। এতে সাংবিধানিক এই সংস্থার নিরপেক্ষতা ও স্বতন্ত্রতা প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে।’’
শাসক শিবিরের প্রতি কমিশনের এই ধরনের পক্ষপাতের অভিযোগ অবশ্য নতুন নয়। গুজরাত বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে প্রধানমন্ত্রী যাতে নিজের রাজ্যের জন্য একাধিক নতুন প্রকল্প ঘোষণা করতে পারেন তার জন্য হিমাচল নির্বাচনের সঙ্গে গুজরাতের নির্বাচন একই দিনে ঘোষণা করা থেকে পিছিয়ে আসে কমিশন। পক্ষপাতের তালিকা আরও বলছে, গুজরাত বিধানসভায় ভোটগ্রহণের পরপরই প্রধানমন্ত্রীর রোড-শো করা নিয়েও আপত্তি জানায়নি কমিশন। এমনকি অভিযোগ রয়েছে, কর্নাটকের ভোটের দিনক্ষণ কমিশন প্রকাশ করার আগেই তা ফাঁস করে বসেন বিজেপির জাতীয় আইটি সেলের প্রধান।